ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জান্নাতুল মুমিনা

মানুষ মানুষের জন্য ॥ জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২২ জুলাই ২০১৬

মানুষ মানুষের জন্য ॥ জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম

মেয়েটির নাম তাসলিমা। শারীরিক প্রতিবন্ধী। রয়েছে আরও দুই ভাইবোন। যারা তাসলিমার হুইলচেয়ারটিকে বহন করে বেড়ায়। তাসলিমার বাবা একজন গরিব দিনমজুর। সে প্রতিবন্ধী তাসলিমাসহ পরিবারের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করতে অক্ষম। আজ তাসলিমা সুস্থ থাকলে হয়ত কোন বাসায় কাজ করে সে পরিবারে যোগান দিতে পারত। কিন্তু সে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার বাবা আরও দুই সন্তানকে দিয়ে তাসলিমার জন্য ভিক্ষা করাচ্ছে। লে একটি প্রতিবন্ধী শশুর জন্য আরও দুটি শিশুর শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আজ তাসলিমা যদি সামাজিক সাহায্য সহযোগিতা পেত তাহলে হয়ত তার ভাইবোন দুটি ভিক্ষা না করে স্কুলে যেতে পারত। এভাবে আমাদের সমাজে আজ একটি শারীরিক প্রাতবন্ধী শিশু সামাজিক সাহায্যের অভাবে আরও দুটি শিশুর শিক্ষা ও মানসিক প্রতিবন্ধীর কারণ। নাম সিফানী। বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। জীবনের শুরু থেকে আজ অবধি প্রতিনিয়ত জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে চলছে সে। আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মত জীবনযাপন করার ভাগ্য তার হয়নি। কেননা সে জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। সিফানীর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত সিফানী। তার বাবার একটি দোকান ছিল, সিফানী সেই দোকানে বসত এবং বাবাকে দোকানদারিতে সহযোগিতা করত। এভাবেই চলছিল তার জীবন। মা মারা যায় ৫ বছর আগে। হঠাৎ তারা বাবা শারীরিবভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। উপায়ন্ত না পেয়ে সিফানী আশ্রয় নেয় বড় ভাইদের কাছে। কিন্তু ভাইরে বিয়ের পর সেখানেও সে বোঝা হয়ে পড়ে। বেঁচে থাকার তাগিদে সিফানী ঢাকায় আসে। পঙ্গু সিফানী দুবেলা ভাতের জন্য বেছে নেয় ভিক্ষাবৃত্তি। ঢাকা শহরে আজ পাঁচ বছর ধরে সিফানী ভিক্ষা করে জীবনযাপন করছে। সিফানীকে প্রতিদিনই সাভার ওভারব্রিজের ওপর বসে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। দৈনিক সে ১৫০-২০০ টাকা উপার্জন করে। সিফানীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়Ñ গরমে, ঝড়-বৃষ্টিতে এভাবে সারাদিন বসে ভিক্ষা করতে তার খুব কষ্ট হয়। দেনিক ১৫০ থেকে ২০০ পর্যন্ত টাকা আয় করে। একবার সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হলে সে এই ভিক্ষাবৃত্তি করে আয় করা টাকা দিয়ে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। সিফানীর ইচ্ছা- কেউ যদি তাকে কিছু টাকা দিয়ে একটি দোকান করে দিত তাহলে সে দোকানে বসে ব্যবসা করে বাকি জীবনটা কাটাতে পারত। জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস থেকে
×