ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পান্থ আফজাল

তারুণ্যের ফ্যাশনে বর্ষাকাল

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২২ জুলাই ২০১৬

তারুণ্যের ফ্যাশনে বর্ষাকাল

এই মেঘলা দিনে একেলা ঘরে থাকে না যে মন... মেঘলা দিনের সময় এই বর্ষাকাল। ঘর থেকে মন পড়ে থাকে এখানে-ওখানে। কিন্তু বাইরে বের হওয়া দুরূহ হয়ে যায়। সারাদিন একপেশে বর্ষণের তা বে। তবে, বৃষ্টি বলে তো আর ঘরে বসে থাকা চলবে না। এমন রোমান্টিক ওয়েদারে বাড়ির বাইরে না বেরোলে, বৃষ্টিতে না ভিজলে আর বর্ষার মজা কোথায়? তবে এই বর্ষায় নিজেকে নিয়ে তরুণ-তরুণীদের মনে ফ্যাশনের নতুন নতুন ট্রেন্ড বিরাজ করছে। তারা এখন নগরের ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে পছন্দসই পোশাক কেনার জন্য। সময়টা বর্ষাকাল হওয়ায় তরুণদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে শর্ট পাঞ্জাবি, ফতুয়া, হাফ হাতা শার্ট কিংবা টি-শার্ট। সঙ্গে জিন্স-গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। পায়ে চটি জুতা। ব্যস, মানিয়ে গেল। সর্বদা তরুণদের কেনাকাটায় থাকে অনেক বেশি সচেতনতা। তারা উৎসব আর ঋতুর সমন্বয়ে বেছে নেন পছন্দের পোশাকটি। গুমোট এ আবহাওয়ায় কখনো তীব্র গরম আবার কখনও বৃষ্টির অনাকাক্সিক্ষত ছুঁয়ে যাওয়া। তাই সবকিছু মাথায় রেখে ঋতু উপযোগী পোশাক নির্মাণে ফ্যাশন হাউসগুলো ব্যস্ত সময় পার করছেন। বরাবরের মতো এবারও ফ্যাশন হাউসগুলো তারুণ্যের জয়যাত্রাকে এগিয়ে নিতে তারুণ্যের জয়গান গেয়েছে। কারণ ফ্যাশন হাউসগুলো জানে তাদের ক্রেতার তালিকার বৃহত্তম অংশই তরুণ। এই তরুণদের রাঙাতে ফ্যাশন হাউসগুলো এখন পুরোদস্তুর ব্যস্ত। ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেল, ঈদ উপলক্ষে কিশোর-কিশোরীদের জন্য রয়েছে আলাদা আয়োজন। বড়দের পোশাকে ততটা ভিন্নতা চোখে না পড়লেও বৈচিত্র্যময় নকশা আর কাটছাঁটের ভিন্নতা দেখা গেল তাদের পোশাকে। বৃষ্টির সময় ট্রাডিশনাল সাজ প্রয়োজন না থাকলে এড়িয়ে চলাই ভাল। আপনার ওযয়েস্টার্ন কালেকশনকে ব্যবহার করুন এই সময়। তবে এই রোমান্টিক ওয়েদারে প্রেমিকার সাজগোঁজে কিছুতা ভিন্নতা আসতে পারে। বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনের শাড়ি পড়তে পারেন প্রেমিকের মন জয়ের জন্য। নীল বা হাল্কা রঙের বাহারি শাড়ি এই বর্ষায় মানাবে দারুণ এবং নিজেকে অনেক বেশি আনন্দিত মনে হবে। এছাড়া ন্যারো প্যান্ট, সর্ট স্কার্ট এই সময় সামলানোও সহজ, দেখতেও ভাল লাগে। ফাংকি ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। বর্ষা মানেই না চাইলেও অবধারিত বৃষ্টিতে ভেজা। অনেক সময়ই সেই ভেজা পোশাকেই থাকতে হয় সারাদিন। তাতে ভাল জামা নষ্ট হওয়ার ভয় অনেকেই এই সময়টা যেমন তেমন পোশাক পরে কাটিয়ে দেন। তাতে বাড়ে অবসাদ। বর্ষাকালে তাই আরামদায়ক পোশাক পরার সঙ্গে সঙ্গেই রঙের দিকেও নজর দেয়া উচিত। বর্ষাকালে সবসময় উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরুন। হলুদ, লাল, কমলা, সবুজ, নীল যে কোন রঙ পরতে পারেন। খেয়াল রাখবেন রঙের শেড যেন উজ্জ্বল হয়। এড়িয়ে চলুন সাদা, কালো, ধুসর। কেউবা এই বর্ষায় আয়োজনে রেখেছে বর্ষার রঙ নীলের আভিজাত্য কেউবা এনেছে শুভ্র সাদা কিংবা বর্ণিল রঙের খেলা। বর্ষা এলেই অন্য রকম এক আবহ কাজ করে আমাদের মনে। ঋতুর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ফ্যাশন ছেলে-বুড়ো সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। আর বর্ষাকে কেন্দ্র করে শুধু গায়ের জামা-কাপড়ই নয়, বদলে যায় পাদুকার ফ্যাশনও। বর্ষা মানে রিমঝিম বৃষ্টি, সোঁদামাটির গন্ধ। আবার বর্ষা মানেই কাদায় প্যাঁচপ্যাঁচে শহর থেকে শহরতলি। কিন্তু তাই বলে ফ্যাশনে বাধা পড়বে? কখনই না! তাই এ সময় প্রয়োজন বর্ষার উপযোগী স্যান্ডেল বা জুতো। সাধারণত চামড়া বা রেক্সিনের জুতো পানিতে খুব দ্রুত নষ্ট হয়। সে কথা মাথায় রেখে বাইরে বের হতে হলে এমন জুতো বেছে নিতে হবে, যা বর্ষার উপযোগী। পা খোলা থাকলে পানি শুকিয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই বর্ষা মৌসুমে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ভারি জুতার বদলে তরুণরা হালকা ফ্ল্যাট স্যান্ডেলগুলোই বেছে নেন। আবার অনেকেই হাঁটার সুবিধার জন্য ফ্ল্যাট স্যান্ডেলকে গুরুত্ব দেন। বর্ষার বাজার ঘুরে দেখা যায়, নানা রঙের বাহারি ফ্ল্যাট জুতো। লাল, বেগুনি, সবুজ, হলুদ হরেক রঙের হালকা পাদুকার সম্ভার। চামড়া, পিভিসি বা স্পঞ্জের জুতোই সহজলভ্য। প্লাস্টিকের সঙ্গে ভেলভেটের কাজ করা বর্ষার স্যান্ডেলগুলো তরুণরা খুব পছন্দ করছেন। মেয়েদের স্যান্ডেলে জ্যামিতিক নকশার পাশাপাশি বিভিন্ন রঙের ফুলের কাজের চাহিদা বাড়ছে। উজ্জ্বল রংগুলোকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ক্রেতারা। তবে বয়স্করা স্যান্ডেল কেনার ক্ষেত্রে আরামকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। কম দামী, কিন্তু বেশি বৈচিত্র্যের জুতোই কিনছেন এ সময়ের ছেলেমেয়েরা। বোতাম, ফুল, ফিতা আর রেখার নকশায় তৈরি স্যান্ডেলগুলো দামে সস্তা আবার ফ্যাশনেবলও। জুতোর শোরুম গ্যালারি এপেক্স, বাটা, বে এম্পোরিয়াম, জেইলস, জেনিসের শাখাগুলোতে ফ্ল্যাট স্যান্ডেল পেয়ে যাবেন সহজেই। বর্ষায় বাইরে গেলে নানা ডিজাইন ও রকমারি ব্যাগ অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। বর্ষায় লেদার, ওয়াটার প্রুফ বা নন লেদার মেটিরিয়ালের ব্যাগ ব্যবহার করুন। বর্ষা স্পেশাল বিভিন্ন স্টাইলের ব্যাগ পেয়ে যাবেন ফুট থেকে ব্যান্ডেড সু-স্টোরে। মডেল : নিরব, নীলাঞ্জনা, অধরা, ইমরান ও শুভ ছবি : কবির হোসেন ও রুদ্র ইউসুফ
×