ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাসেও কাজ হয়নি

আসছেন না ডাচ্ হকি কোচ বোনেট

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২১ জুলাই ২০১৬

আসছেন না ডাচ্ হকি কোচ বোনেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের কোচ হতে আগামী শুক্রবার দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসার কথা ছিল হল্যান্ডের জাইলস বোনেট। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে একজন বিদেশী নাগরিক হিসেবে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে)। সেই সঙ্গে এ বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের মাটিতে ‘এশিয়া কাপ অনুর্ধ ১৮ টুর্নামেন্ট’কে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। কিন্তু সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাসেও আস্থা পাননি বোনেট। জানা গেছে, বাংলাদেশে আসবেন না এই ডাচ্ কোচ। এ প্রসঙ্গে বাহফের যুগ্ম সম্পাদক বাবু আনভীর আদিল খান জনকণ্ঠকে জানান, ‘প্রথমে সবকিছু ঠিকই ছিল। গুলশান-শোলাকিয়া ঘটনার পর প্রথমে বাংলাদেশে আসতে রাজি না হলেও পরে ঠিকই রাজি হয়েছিলেন বোনেট। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আবারও সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। আমাদের তিনি জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশ আসতে পারবেন না।’ প্রথমে রাজি হয়েও পরে গররাজিÑ এর কারণ কী? আদিল জানান, ‘যতদূর জেনেছি বোনেটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে প্রভাবিত করেছে তার পরিবার এবং ডাচ্ দূতাবাস।’ যদি বোনেট বাংলাদেশে না আসেন, তাহলে বাহফের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? ‘আমরা কিছুদিন অপেক্ষা করব। তারপর নির্বাহী কমিটির সভায় বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’ উল্লেখ্য, গুলশান ট্র্যাজেডির পর সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে এদেশে অবস্থানকারী বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে। যার প্রভাব পড়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের বিদেশী কোচিং স্টাফদের নিñিদ্র নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার পর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনও (বাহফে)। শুক্রবার বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের কোচ হতে এদেশে আসার কথা ছিল জাইলস বোনেটের। তার দু’দিনের বাংলাদেশ সফরের পরই তার সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করার কথা ছিল বাফফের। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে তার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাহফে বদ্ধপরিকর ছিল। কিন্তু তাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারলেন না বোনেট। আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া কাপ অনুর্ধ ১৮ টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশসহ ৮ দেশ অংশ নেবে সেই আসরে। বিদেশী দলগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ইতোমধ্যেই নিজেদের পরিকল্পনার ছক এঁকে ফেলেছে ফেডারেশন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের হয়ে কাজ করতে বিদেশী কোচ এসেছেন অনেকেই। তবে কেউ দীর্ঘমেয়াদে ছিলেন না। পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার, মোহাম্মদ আশফাক, কামার ইব্রাহিম, তাহির জামান, নাভিদ আলম ও গোলকিপার কোচ মনসুর। তাদের মধ্যে নাভিদ আলমই ছিলেন সবচেয়ে বেশি সময়। এছাড়া ভারতের এ কে বানসাল ও রিয়াজ নবী প্রস্তাবিত থাকলেও তারা বাংলাদেশে আসেননি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে। মালয়েশিয়ান কোচ গোবিনাথান অল্প সময়ের জন্য জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এছাড়া জার্মানির ইয়র্ক শুমাখার, পিটার গেরহার্ড ও অলিভার মাইকেল, হল্যান্ডের বার্ড বার্নিক ও বেলজিয়ামের মিশেল কিনানও এসেছিলেন জাতীয় হকি দলের কোচ হয়ে। তবে পিটার গেরহার্ড ও মিশেল কিনানে হকি খেলোয়াড়েরা যতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন, ততটা ঘটেনি অন্যদের বেলায়। যে কারণে হকি ফেডারেশন ঝুঁকেছে ইউরোপিয়ান কোচের দিকে। সেই ধারাবাহিকতায়ই আসার কথা ছিল বোনেটের। সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী সন্ত্রাসী হামলার পর ক্রিকেটে বিদেশী কোচরা আসতে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। একই সমস্যায় পড়ে হকিও। বোনেট গুলশান ঘটনার জন্য প্রথমে আসতে চাইছিলেন না। হকি ফেডারেশন তখন বোনেটকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও তিনি তখন আসতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে রাজি হয়েও আবার মত পাল্টান! এতে স্বভাবতই হতাশ হকি ফেডারেশন।
×