ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উইন্ডিজ-ভারত অসম লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২১ জুলাই ২০১৬

উইন্ডিজ-ভারত অসম লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশে কিংবা বিদেশে ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ জিতেছে সেই ২০০২ সালে। ঘরের মাঠে সৌরভ গাঙ্গুলীদের ২-১এ হারিয়েছিল কার্ল হুপারের দল। সেই শেষ। এরপর গত ১৪ বছরে পাঁচ সিরিজে ১৫ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি ক্যারিবীয়রা। বিরাট কোহলির দুরন্ত ভারত যেখানে বর্তমান র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে, সেখানে জেসন হোল্ডারের উইন্ডিজ তলানির দিকে (আট নম্বরে)। ব্যাটিং-বোলিং, শক্তি-সামর্থ্য, ব্যক্তিগত নৈপুণ্য ও দলীয় অবস্থান সব, সব বিচারেই চার ম্যাচের এই সিরিজে ‘হট ফেবারিট’ সফরকারী ভারত। নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ কোহলি-কুম্বলেদের সামনে। ও হ্যা, কোচ অনিল কুম্বলের প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট বলে অসম দ্বৈরথেরও ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের থাকছে বাড়তি আগ্রহ। এ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে (নর্থ সাউন্ড) খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। শেষ তিন টি২০ বিশ্বকাপের দুটি জিতলেও সাদা পোশাকে ক্যারিবীয়দের অবস্থা করুণ। সত্তরের দশকের প্রভাবশালী এখন কেবলই নিজেদের ছায়া। বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বসহ বিভিন্ন কারণে টেস্টে নেই দলটির বেশিরভাগ তারকা। নেই ক্রিস গেইল, ড্যারেন সামি, ডোয়াইন ব্রাভো, কাইরেন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, এমন কি দীনেশ রামদিন আর জেরমো টেইলরও। তাহলে থাকলটা কী? উইন্ডিজ টেস্ট দল এখন এমনই। হোল্ডারের স্কোয়াডে বড় নাম মারলন স্যামুয়েলস, ড্যারেন ব্রাভো ও ক্রেইগ ব্রেথওয়েট। অন্যদিকে ভারতীয় দলের প্রতি পজিশনে একেকজন জ্বলজ্বলে তারকা। ব্যাটিংয়ে-নেতৃত্বে স্বপ্নের সময় পার করছেন কোহলি। বিশ্বের অন্যতমসেরা ব্যাটিং লাইনআপ তাদের। টেস্ট স্পেশালিস্ট মুরলি বিজয়, চেতেশ্বর পুজারা। ইদানিং সম্ভাবনার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তরুণ লোকেশ রাহুল। ওপেনিংয়ে শিখর ধাওয়ানকেই বরং চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন তিনি। ক্ল্যাসিক্যাল অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা মিডলঅর্ডারে শক্তি বাড়িয়েছে। প্রস্তুতিতে চমৎকার দুটি হাফসেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন রাহুল। পাঁচ বোলার নিয়ে নামার একটা আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তিন পেসার-দুই স্পিনার অথবা, তিন স্পিনার-দুই পেসার। স্পিনাধিক্য দেখলে অবাক হওয়ার থাকবে না। সেক্ষত্রে অটোমেটিক চয়েজ অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, সঙ্গে অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনার পরিচয়টা নেহায়েত ছোট নয়। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে এই তিনজনকেই খেলানো হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে প্রতিপক্ষের ১২ উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় স্পিনাররা। অশ্বিন ৬, জাদেজা ৪ ও মিশ্র ২টি করে। এ্যান্টিগার পিচ ঘূর্ণি বোলারদের বাড়তি সাহায্য করবে বলে অতিথি থিঙ্কট্যাঙ্কদের ধারণা। পেস আক্রমণে পরীক্ষিত ইশান্ত শর্মা, ঊমেশ যাদবের সঙ্গে আছেন মোহাম্মদ শামি আর ভুবনেশ্বর কুমার। অন্যদিকে সিরিজ শুরুর আগে টেইলর হুট করে অবসর (টেস্ট থেকে) নেয়ায় স্বাগতিক পেস আক্রমণের নেতৃত্বে থাকবেন অধিনায়ক হোল্ডার। তাকে সঙ্গ দেবেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও নবাগত মিগুয়েল কুমিন্স। স্পিনে অভিজ্ঞ দেবেন্দ্র বিশু সঙ্গে প্রয়োজনে দেখা যেতে পারে তরুণ লেগস্পিনার লিও জনসনকে। প্রথমবারের মতো ডাক পাওয়া রোস্টন চেইজ মিডলঅর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকর অফস্পিনও করে থাকেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করার সুবাদে লিও-র সঙ্গে তিনিও নির্বাচকদের নজর কাড়েন। ঘরের মাটিতে ক্যারিবীয়রা হয়ত পেসারদের ওপরই ভরসা রাখতে পারে। ব্যাটিংয়ে স্যামুয়েলস, ডোয়াইন ব্রাভোর পাশাপাশি দুই ব্রেথওয়েট কার্লোস আর ক্রেইগের ওপর থাকবে গুরুদায়িত্ব। আছেন তরুণ রাজেন্দ্র চন্দ্রিকা। ১৯৪৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত মুখোমুখি ৯০ টেস্টে ৩০ জয়ে পাল্লা ভারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের, তবে তাদের পরিসংখ্যানের এই সাফল্য নিকট অতীতের নয়। ২০০৬ ও ২০১১ ক্যারিবীয় দ্বীপে নিজেদের শেষ দুই সফরে ১-০তে জয় ভারতের। ২০১২ ও ২০১৪ সালে ভারতে এসেও পাত্তা পায়নি তারা, দুটি সিরিজেই হার ২-০ ব্যবধানে।
×