ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশে খেলতে আসবে ইংল্যান্ড- প্রত্যাশা মাশরাফির

জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২১ জুলাই ২০১৬

জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোনভাবেই কেউ চাইলেই এখন আর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনায়াসে ঢুকতে পারবেন না। সেটা বিসিবির পরিচালক হোক, সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার হোক, সাংবাদিক হোক, কোচ হোক কিংবা যত প্রভাবশালী কর্মকর্তাই হোক; নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সামনে পড়তেই হবে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভালভাবে পরীক্ষা করে সবুজ সঙ্কেত দিলেই স্টেডিয়ামে ঢোকা সম্ভব। নিরাপত্তা নিয়ে এত কড়া অবস্থাই এখন মিরপুর স্টেডিয়ামে বিরাজ করছে। এমন অবস্থাতেই বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। যে ক্যাম্পটি আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় সিরিজকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে। যে সিরিজটি আবার নিরাপত্তার জন্যই অনিশ্চয়তায় পড়ে আছে। নিরাপত্তা নিয়ে ইংল্যান্ড সন্তুষ্ট হলেই কেবল এ সিরিজ হবে। নয়ত স্থগিত হয়ে যাবে সিরিজ। তবে বাংলাদেশ দলের নির্ধারিত ওভারের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার আশা, ‘বাংলাদেশে খেলতে আসবে ইংল্যান্ড।’ ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরে আসা নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘দেখেন একটা ব্যাপার হলো, টেকনিক্যালি ভেতরে কী আলোচনা (দুই বোর্ডের মধ্যে) হচ্ছে, তা আমরা জানি না। আশা করি, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ব্যাপারটা নিয়ে কাজ করছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি ট্যুরটা হবে। বাংলাদেশের সমর্থকরা অনেক দিন ধরেই খেলা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের সবাই খেলাটা খুব পছন্দ করে। তারা মনে করে ইংল্যান্ড আসবে। তাদের সঙ্গে খেলবে। ইংল্যান্ড সব সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। তারা অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে এসেছে (তখনও নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল)। আগেও তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। আশা করছি, ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি তারা আসবে।’ সঙ্গে মাশরাফি জানান, ‘ওরা (ইংল্যান্ড দল) তো নিরাপত্তা পাবে। অন্য দলকে যেমন নিরাপত্তা দেয়া সেটা তারা পাবে। আর আমি যেটা বললাম এখানে সবাই ক্রিকেট পছন্দ করে। সব জায়গায় ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হয়। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ জানে কিভাবে ক্রিকেটারদের সম্মান করতে হয়। ও জায়গাটা বাংলাদেশের মানুষের আছে। আমার মনে হয় না কোন সমস্যা হবে।’ বুধবার জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ফিটনেস দেখা হয়েছে। কন্ডিশনিং ক্যাম্প চলবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। বিদেশী কোচদের ছাড়াই এ কন্ডিশনিং ক্যাম্প হবে। গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর জাতীয় দলের ক্যাম্পে শুরু থেকে বিদেশী কোচদের থাকাটা পিছিয়ে গেছে। পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলেই প্রধান কোচ শ্রীলঙ্কান চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে, সহকারী ও স্পিন বোলিং কোচ শ্রীলঙ্কান রুয়ান কালপাগে, ফিল্ডিং কোচ জিম্বাবুইয়ে বসবাসরত ইংল্যান্ডের রিচার্ড হালসাল ও ট্রেইনার মারিও ভিল্লাভারায়েন বাংলাদেশে চলে আসবেন। কিন্তু এখন যে নিরাপত্তা বেষ্টনী ঢেকে আছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, তাতে মাশরাফির কাছে পরিবেশটা কেমন লাগছে? স্বস্তিই কী পুরোপুরি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা? বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘এটা তো সবার জন্যই সমান। স্বস্তি বোধ না করার কিছু নাই। সবার সুবিধার জন্যই এটা করা হয়েছে (নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে)। এটা আমাদের কোন অসুবিধা করছে না। সব ঠিক আছে।’ কিন্তু ট্রেইনার ভিল্লাভারায়েন না থাকাতে কী সমস্যা হচ্ছে না? বিশেষ করে ফিটনেস ক্যাম্পটাতো তার অধীনেই করেন ক্রিকেটাররা। মাশরাফি জানালেন, ‘মারিও (ভিল্লাভারায়েন) ছাড়া আমরা অভ্যস্ত নই। তবে ইফতি (ইফতেখারুল ইসলাম) আছে। সে অনেক দিন আমাদের সঙ্গে আছে। তাকে নির্দেশনা দেয়া আছে। এ ছাড়া খেলোয়াড়রা নিজেদের কাজটা নিজেরা বুঝে নিয়েছে। এখন সবাই জানে যে, নিজের কাজটা নিজেরই করতে হবে। মারিও থাকলেই পুশ করব, এমন নয়। এক দেড় মাস গ্যাপ থাকলেই আনফিট হয়ে যাব, এটা সবাই জানে। নিজেদের যতœ নেয়া শেখা, নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখা, এমন কিছুর জন্য দারুণ সুযোগ।’ ইংল্যান্ড তাদের দুশ্চিন্তার কথা বলেছে, নিরপেক্ষ ভেন্যুর কথাও বলেছে। ট্যুরটা না হলে, এ বছর আর বাংলাদেশের টেস্ট খেলা হবে না। বছর শেষে হয়তো কয়েকটা ওয়ানডে খেলা হবে, বাংলাদেশের জন্য এটা কত বড় ক্ষতি হবে? তাছাড়া যখন সিরিজ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে, তখন কি মনোযোগটা ধরে রাখা যায়? মাশরাফি জানালেন, ‘আমরা সবাই আশাবাদী। এখনও তিন মাস বাকি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এখানেই তো শেষ নয়। সবারই উচিত ফিটনেস ধরে রাখা। আমাদের উচিত ফিটনেস ধরে রাখা, খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বাকিটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দেখবে।’ বিদেশী কোচরা না থাকা মানেই হচ্ছে দেশী ফিটনেস ট্রেনারের সঙ্গে মাশরাফি, মুশফিক, তামিম, মাহমুদুল্লাহদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর দায়িত্বটা পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে সিনিয়রদের দায়িত্বটা কিভাবে দেখছেন অধিনায়ক? মাশরাফি বললেন, ‘আমি আগেও বলেছি এখানে সিনিয়রদের অনেক কিছু করার আছে। যেমন মুশফিক, রিয়াদ, তামিম, যারা এসেছে, শাহরিয়ার নাফীস, রকিবুল, ওরা সবাই ফিট। ওদের আলাদা করে কিছু বলার নেই। আমি মনে করি, তরুণরা গাইডলাইনটা নিক।’ বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে সিরিজ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) নিয়ে কী বলবেন? প্রশ্নটি ছুড়ে যেতেই বুধবার মাশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট, যারা ফলো করে, বয়স্করা, মধ্য বয়সীরা এবং তরুণরাও ক্রিকেট নিয়ে খুব চিন্তা করে। ক্রিকেটারদের, অন্য দেশ থেকে যারা আসে, তাদের সম্মান দেয়া হয়। ইংল্যান্ডকে আগেও যথাযথ নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। এখনও দেয়া হবে। ক্রিকেট সংস্কৃতিটা ধরে রাখতে, আশা করি উনারা আসবেন, আশা করি একটা ভাল সিরিজ হবে।’ এখন দেখা যাক, মাশরাফির আশা পূরণ হয় কিনা।
×