ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্লগার ওয়াশিকুর হত্যা মামলায় পাঁচ জঙ্গীর বিচার শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২১ জুলাই ২০১৬

ব্লগার ওয়াশিকুর হত্যা মামলায় পাঁচ জঙ্গীর বিচার শুরু

কোর্ট রিপোর্টার ॥ ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৫ সদস্যের বিচার শুরু হয়েছে। বুধবার মামলাটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোঃ জিয়াউর রহমান। আসামিরা হলেন, জিকরুল্লাহ ওরফে হাসান, আরিফুল ইসলাম আরিফ, সাইফুল ইসলাম, মাওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ ওরফে তাহের ও সাইফুল ইসলাম ওরফে আকরাম ওরফে হাসিব ওরফে আব্দুল্লাহ। আসামিদের মধ্যে সাইফুল ও তাহের পলাতক। শুনানিকালে অপর আটককৃত ৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তারা অভিযোগ অস্বীকার করায় আগামী ৪ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন বিচারক। মামলাটিতে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন ডিবির পরিদর্শক মশিউর রহমান। চার্জশীট দাখিল হওয়ার পর মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হয়ে আসার পর প্রথম ধার্য তারিখেই চার্জগঠন করল আদালত। চার্জশীটে বলা হয়, ব্লগ ও ফেসবুকে কথিত ইসলামবিরোধী লেখালেখির কারণেই ওয়াশিকুরকে খুন করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ যাত্রাবাড়ীর নয়ানগরের একটি বাসায় বৈঠক করে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়। বৈঠকে কথিত ‘বড় ভাই’ আব্দুল্লাহ ওরফে হাসিব, শরীফ, তাহের ওরফে জুনায়েদ, আবরার, জিকরুল্লাহ, আরিফুল ও সাইফুল উপস্থিত ছিল। পরিকল্পনায় ওয়াশিকুরকে চাপাতি দিয়ে মাথা ও ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যার নির্দেশনা দেয় হাসিব। বৈঠকে আটজন অংশ নিলেও হত্যা করতে যায় চারজন। দুজন চাপাতি নিয়ে ওত পাতে বাসার কাছে। কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নেয় একজন, নির্দেশনা অনুযায়ী দূরে থাকে আরেকজন। ওত পেতে থাকা দুই মাদ্রাসাছাত্র জিকুরুল্লাহ ও আরিফুল কুপিয়ে হত্যা করে বাবুকে। আর দ্রুত সটকে পড়ে জুনায়েদ ওরফে তাহের নামের আরেকজন। সাইফুল নামের আরেক যুবক চাপাতি নিয়ে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে। আসামিদের মধ্যে জিকুরুল্লাহ এবং আরিফুল হত্যাকা-ের পরই জনতার হাতে আটক হয়। জিকুরুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার তাফসির বিভাগের ছাত্র। আরিফুল মিরপুর-১ নম্বরের দারুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র, বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বারকাউলিয়ায়। সাইফুল যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার ছাত্র। ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ীর দিপিকা মোড়ে ওয়াশিকুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর পালানোর সময় হিজড়া ও এলাকাবাসী মিলে দুজনকে আটক করে। এ ঘটনায় ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন। ওয়াশিকুর মতিঝিলের ফারইস্ট এ্যাভিয়েশন নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাবা টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বেগুনবাড়ীর ৪/৩-এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে সাবলেট থাকতেন। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপেজলার উত্তর হাজীপুরে তাদের গ্রামের বাড়ি।
×