ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে শিশু মোবারক হত্যার নেপথ্যে পরকীয়া?

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ২১ জুলাই ২০১৬

চাঁপাইয়ে শিশু মোবারক হত্যার নেপথ্যে পরকীয়া?

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ নাচোল উপজেলার শিংরইল গ্রামের ১১ বছরের শিশু মোবারক হোসেন হত্যা মামলা নিয়ে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই শিশু হত্যার এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও পুলিশ চার্জশীট দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে পরিবারের পক্ষ থেকে। মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিআইডি পরিদর্শক ফাইজুল ইসলাম জানান, তারা ইতোমধ্যে তদন্ত শেষে চার্জশীট অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে (ঢাকা) পাঠিয়েছে। অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতার কারণ তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান। অনুমোদন হয়ে এলে চার্জশীটের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। জানা গেছে, শিংরইল গ্রামের টিউবওয়েল মিস্ত্রি মুক্তার আলীর শিশুপুত্র মোবারকের মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যার সপ্তাহখানেক পর। পিতা মুক্তার বাদী হয়ে নাচোল থানায় মামলা করেন। একই গ্রামের মহিউদ্দীন, অপু, জনি, জিয়া, রাজু ও টাপুকে আসামি করা হয়। পুলিশ তদন্তের একপর্যায়ে পড়শী আবু বাক্কারকে গ্রেফতার করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে বাক্কার স্বীকার করে মোবারককে হত্যার ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করে তার ছেলে ও স্ত্রী। তিনি হত্যার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামের দেয়া তথ্য থেকে এ চিত্র উঠে আসে। পরে মামলাটি স্থানান্তর করা হয় অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডির কাছে। খুনের পরপরই পুলিশ যে পাঁচজনকে আটক করেছিল তাদের সবাই এখন উচ্চ আদালতের জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাদী মুক্তার আলী জানান, জামিনে মুক্ত হয়ে আসামিরা মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। নতুবা তাদেরও একই পরিণতির মধ্যে পড়তে হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছেÑ একটি শিশুকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো কেন? উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে আসল রহস্য। এর পেছনে একটি পরকীয় প্রেমের কাহিনী বেরিয়ে এসেছে। বাদী মোক্তারের ভাতিজা মিলন দুবাইপ্রবাসী মোমিনের বউ ফরিদার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেম চালিয়ে আসছিল। পাল্টা প্রতিশোধ নিতেই আবু বাক্কারের স্ত্রী ও ছেলে দুবাইপ্রবাসী মোমিন শিশু মোবারককে নির্মমভাবে হত্যা করে। এক কথায় প্রকৃত অপরাধী বা পরকীয়ার মূলনায়ক মিলনকে ছেড়ে তার চাচাত ভাই শিশু মোবারককে হত্যা করে। এখন মূল আসামি আবু বাক্কারসহ তিনজনকে বাঁচাতে কাজ করছে এএসপি পদমর্যাদার জনৈক কর্মকর্তা। সেই এএসপির ভাতিজার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে মূল আসামি আবু বাক্কারের এক ছেলের। ঘটনাস্থলের পাশের গ্রাম শিয়ালাতে সেই এএসপির বাড়ি। সে এখন সিআইডি কর্মকর্তা হিসেবে নওগাঁ জেলায় অবস্থান করছেন। মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
×