ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইএস পরিচয়ে হুমকি ॥ তাহমিদের বাড়ির ওপর পুলিশী নজরদারি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২১ জুলাই ২০১৬

আইএস পরিচয়ে হুমকি ॥ তাহমিদের বাড়ির ওপর পুলিশী নজরদারি

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ গুলশানের রেস্টুরেন্টে হামলার পর সিরিয়া থেকে আইএস পরিচয়ে এক ভিডিওবার্তায় ঢাকায় আরও হামলার হুমকি দেয় তিন তরুণ। তাদের মধ্যে তাহমিদ রহমান শাফির বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগরে। হুমকিদাতা তাহমিদ রহমান শাফি জন্মসূত্রে সিলেটের ওসমানীনগরের দয়ামীর ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের সফিউর রহমানের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের সাথে তার পরিবারের কোন যোগাযোগ নেই। স্থানীয়রা জানান, শাফির বাবা সফিউর রহমান ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। শাফি ক্লোজআপ ওয়ানের প্রথম সিজনে (২০০৬ সাল) প্রথম ২০ জনের মধ্যে ছিল। গ্রামীণফোনেও চাকরি করেছে শাফি। দয়ামীর ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের শাফির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড বসত ঘরটি তালাবদ্ধ রয়েছে। বাড়ির কেয়ারটেকার জাহেদ মিয়া বলেন, গত ছয় মাস ধরে সফিউর রহমানের দূর সম্পর্কের ভাতিজার মাধ্যমে এ বাড়িটি দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করছেন। সচিবসহ তার পরিবারের কোন লোককে আজ পর্যন্ত তিনি দেখেননি। স্থানীয়রা জানান, শাফির জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার খবরে গোটা গ্রামে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। শাফির বাবাকে ভাল মানুষ উল্লেখ করে গ্রামের একাধিক প্রবীণ জানান, এমন ভাল লোকের ছেলে আইএসসের সাথে জড়িত থাকতে পারে, এটা জেনে বিস্মিত। পেশাগত কারণে সাফিউর রহমান ঢাকায় অবস্থান করলেও প্রতিবছরই দুই-একবার গ্রামের বাড়িতে যেতেন। বিভিন্ন ছুটিতে বেড়াতে গেলে এলাকার মানুষদের সাথে কুশল বিনিময়ও করতেন তিনি। বছর দেড়েক আগে তার মৃত্যু হয়। এর বেশ ক’বছর আগ থেকে গ্রামে আসা ছেড়ে দেন তিনি। গ্রামবাসী জানান, বাবা গ্রামে এলেও তার ছেলে শাফির সম্পর্কে কোন ধারণা তাদের নেই। কেউই তাকে চেনেও না। ছোটবেলা বাবার সাথে শাফি দুই-একবার গ্রামের বাড়িতে এলেও এলাকার লোকজনের সাথে মেলামেশা করেনি। গ্রামবাসীর সাথে তার কোন যোগাযোগ ছিল না। ওসমানীনগর থানার ওসি আবদুল আউওয়াল চৌধুরী বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইএসের নামে হুমকিদাতা শাফির বাড়িটি নজরদারি করছে পুলিশ। এছাড়া তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে কাদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। নিখোঁজ তামিম ॥ দেশব্যাপী নিখোঁজ তরুণদের যে তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, তাতে সিলেটের বিয়ানীবাজারের তামিম আহমদ চৌধুরী ছাড়াও আরও চারজনের নাম রয়েছে। তামিম আহমদ চৌধুরী বিয়ানীবাজারের দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের শফি আহমদ চৌধুরী ও খালেদা শফি চৌধুরীর ছেলে। জানা যায়, তামিমের জন্ম কানাডায় এবং সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা করেছেন কানাডার নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তার পিতা শফি আহমদ চৌধুরী একসময় চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময়ে সপরিবারে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার দাদা শান্তি কমিটির সাথে জড়িত ছিলেন। তামিমের আত্মীয়রা জানান, বিয়ানীবাজার গ্রামের বাড়িতে আসার ব্যাপারে সবসময়ই তাদের অনীহা ছিল। শেষ ২০০১ সালে তারা বাংলাদেশে এলেও গ্রামের বাড়িতে আসেনি। সিলেট নগরীতে বাসা ভাড়া করে প্রায় ৩ মাস থাকার পর আবারও ফিরে যান কানাডায়।
×