ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জিকা ভাইরাস নিয়ে শঙ্কিত নন স্টোসার-স্টিফেন্স

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২০ জুলাই ২০১৬

জিকা ভাইরাস নিয়ে শঙ্কিত নন স্টোসার-স্টিফেন্স

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মশাবাহিত ভাইরাস জিকা এখন ব্রাজিলে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রাজিল সরকার লড়াই করছে দেশের মানুষকে এই মারাত্মক ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষার। কিন্তু জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশীদের মধ্যে। সে কারণে এবার অলিম্পিক থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অনেক তারকা ক্রীড়াবিদ। বিশেষ করে অন্যতম আকর্ষণীয় ইভেন্ট টেনিস হয়ে পড়েছে প্রায় তারকাশূন্য। অনেকেই জিকা ভাইরাসের আতঙ্কে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ বাছাই সামান্থা স্টোসার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা সেøায়ান স্টিফেন্স এবং জার্মানির তরুণ তারকা আলেক্সান্ডার জেভেরেভ সেই ভীতিকে আমলেই নিচ্ছেন না। তারা মনে করছেন অলিম্পিকের মতো আসরে কোন ভাইরাস আতঙ্কের জন্য অংশগ্রহণ থেকে বিরত হওয়া বুদ্ধিদীপ্ত কোন সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এ কারণে তারা দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছেন কোন ধরনের ভীতিই আসন্ন রিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ থেকে দূরে রাখতে পারবে না তাদের। জেভেরেভ কিছুদিন আগে বোলতার কামড়ে কঠিন রোগে ভুগলেও এটা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভীত নয়। বিভিন্ন দেশের এ্যাথলেটরা বেশ উদ্বিগ্ন জিকা ভাইরাস নিয়ে। অনেক বড় তারকাই সে কারণে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবার রিও অলিম্পিক থেকে। বিশেষ করে টেনিস ডিসিপ্লিন প্রায় তারকাশূন্য হয়ে গেছে। কানাডার মিলোস রাওনিক, রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ, ৮ নম্বর চেক প্রজাতন্ত্রের তারকা টমাস বার্ডিচ, ১৬ নম্বর রাশিয়ান তারকা ক্যারোলিনা পিসকোভা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন ইসনার, অস্ট্রিয়ার ডোমিনিক থিয়েম, অস্ট্রেলিয়ার বার্নার্ড টমিক ও নিক কাইরজিওস, স্পেনের ফেলিসিয়ানো লোপেজ, ইতালির মহিলা তারকা ফ্রান্সেসকা শিয়াভোন। আর বেলারুশের টেনিস সেনসেশন, বিশ্বের ৬ নম্বর ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা ইনজুরির জন্য এবং রাশিয়ান সুন্দরী মারিয়া শারাপোভা ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার কারণে থাকছেন না অলিম্পিকে। এছাড়া রাশিয়ার এ্যাথলেটিক্স দল ডোপ কেলেঙ্কারির জন্য নিষিদ্ধ হওয়ায় অলিম্পিকে অনেক তারকার ঘাটতি থাকবে। অংশ নেবেন না দক্ষিণ আফ্রিকার মেজরজয়ী গলফার লুইস ওসথুইজেন, ব্র্যানডেন গ্রেস ও চার্ল স্কোয়ার্টজেল। আসন্ন বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøাম আসর ইউএস ওপেনের কারণেই নাম প্রত্যাহারের তালিকাটা আরও বড়। বেশ কয়েকজন বাস্কেটবল খেলোয়াড়, ২০ জনেরও বেশি পুরুষ গলফার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আরও আছেন এবার উইম্বলডনে শীর্ষ টেনিস তারকা সার্বিয়ার নোভাক জোকোভিচকে হারিয়ে দেয়া তারকা স্যাম কুয়েরি। তিনি মনে করছেন অলিম্পিক তার জন্য বিশেষ কিছু নয়। জিকা ভাইরাসের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও এমন মন্তব্য করেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এই তারকাদের কাতারে নেই স্টোসার। তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা অবশ্যই এমন কোন বিষয় না যেটাকে কেউ হালকাভাবে এড়িয়ে যেতে পারবে। অনেক মানুষ বলছে জিকা ছাড়াও আরও অনেক বিষয় আছে যেটা এরচেয়ে খারাপ হতে পারে। এটা আসলে সপ্রতিভ থাকার বিষয় এবং সব গাইডলাইন মেনে চলার ওপর নির্ভরশীল। আমার সব ধরনের ভ্যাকসিনেশন দেয়া আছে। তাই নির্দিষ্টভাবে এটা আমার মনের মধ্যে তেমন প্রভাব ফেলছে না।’ অনেকে জিকা ভাইরাস নিয়ে কোন মন্তব্য করছেন না এবং অলিম্পিকে যাওয়ার বিষয়েও কোন ধরনের মন্তব্য করছেন না। এ বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর কারণ জিকা ভাইরাসের আক্রমণে হতে পারে নানাবিধ মারাত্মক ধরনের অসুখ এবং বিশেষ করে গর্ভবতীরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। জিকার আক্রমণে আগত সন্তান শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্ম নিতে পারে। আর সেজন্যই সন্তান ধারণ করা আজারেঙ্কা অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি ওয়াশিংটন ওপেন জয়ী মার্কিন তারকা স্টিফেন্স বলেন, ‘আমি অবশ্যই এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি কোন বাচ্চা নিচ্ছি না। সেক্ষেত্রে মনে হয় সবকিছু আমার জন্য ঠিকই থাকবে। কিছু লোক একটু বেশিই স্পর্শকাতর এবং কেউ কেউ বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। এটা ব্যক্তি বিশেষে নির্ভরশীল।’ আর বিশ্বের ২৭ নম্বর ১৯ বছর বয়সী জার্মান তরুণ জেভেরেভ কিছুদিন আগেও বোলতার কামড়ে মারাত্মক রোগে ভুগেছেন। কিন্তু এরপরও জিকা নিয়ে শঙ্কিত না তিনি। জেভেরেভ বলেন, ‘আমি তখন ইউএস ওপেন খেলছিলাম এবং কিছু একটা আমাকে কামড়েছিল। সে কারণে আমি খুবই সতর্ক থাকব। এরপর বছরের বাকি সময়ে আমি মাত্র একটা ম্যাচই জিততে পেরেছিলাম। তীব্র জ্বরে অনেক ওজনও হারিয়েছিলাম, খেতে পারছিলাম না। সে কারণে জিকা ভাইরাস নিয়ে সামান্য চিন্তিত। অনেকেই এ কারণে সরে গেছেন। কিন্তু আমার জন্য এটা অনেক মজার এক অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
×