ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা

সুইসাইড স্কোয়াডের ১২ জঙ্গীর এখনও খোঁজ নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২০ জুলাই ২০১৬

সুইসাইড স্কোয়াডের ১২ জঙ্গীর এখনও খোঁজ নেই

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর গুলশান ও শোলাকিয়ায় ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসী হামলাকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুইসাইড স্কোয়াডের ১০ থেকে ১২ জঙ্গী এখনও উধাও। উধাও হওয়া জঙ্গীদের আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, গ্রেনেড, বোমা ও বিস্ফোরকদ্রব্যের মজুদ ভা-ারেরও হদিস নেই। গুলশান ও শোলাকিয়া জঙ্গী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন জুম্মন শিকদার নামে এক জঙ্গী তার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা অপর এক জঙ্গীর সঙ্গে লেনদেন করেছে এমন তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে শিবিরের খিলগাঁও থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২০ জনকে আটক ও তাদের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদী বই, একটি কম্পিউটার, সাতটি ককটেল ও চারটি চাপাতি জব্দ করেছে পুলিশ। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন এক নারীসহ চারজন ও একটি টয়োটা এক্স ফিলডার গাড়িকে চিহ্নিত করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে র‌্যাব। ‘জিহাদে অংশ নিতে ইরাক যাচ্ছি’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছোট ভাইকে এ বার্তা পাঠিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন গত দেড় বছর ধরে নিখোঁজ নজিবুল্লা আনসারী নামের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানান, গুলশান ও শোলাকিয়ার দুইটি সন্ত্রাসী হামলার অপারেশনে ও ব্যাকআপে অংশ নিয়েছে অন্তত ১৬ থেকে ১৮ জন জঙ্গী সদস্য। এর মধ্যে গুলশানে নিহত হয়েছে ৫ জঙ্গী ও শোলাকিয়ায় নিহত ১ জঙ্গী এবং শোলাকিয়া ১ জঙ্গীর ধরা পড়াসহ মোট ৭ জঙ্গী নিহত ও আটক হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলায় অংশগ্রহণকারী এখনও অন্তত ১০ জঙ্গী সবাই এখনও অধরা রয়েছে, তারা কোন বড় ধরনের নাশকতার জন্য কোথাও ওৎ পেতে আছে কিনা তা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য দু:শ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার সময়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতার হওয়া জঙ্গী শাফিউলের দেয়া জবানবন্দীতে উধাও হয়ে যাওয়া সহযোগী জঙ্গীদের বিষয়ে এমন তথ্য বের হয়ে এসেছে। ভয়াবহ ধরনের সন্ত্রাসী হামলাকারী এসব ভয়ঙ্কর জঙ্গীরা কোথায় গা ঢাকা দিয়েছে তার খোঁজ করছে গোয়েন্দারা। উধাও হয়ে যাওয়া জঙ্গীদের খোঁজে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন এক নারীসহ চারজন ও একটি টয়োটা এক্স ফিলডার গাড়িকে চিহ্নিত করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে র‌্যাব। গোয়েন্দা সূত্র জানান, সন্ত্রাসী হামলায় অংশগ্রহণকারী ভয়ঙ্কর ধরনের জঙ্গীদের সঙ্গে যারা নিখোঁজ রয়েছে তারাও জঙ্গী সম্পৃক্ততায় জড়িয়ে পড়েছে, এমন ধারণা থেকে তারা ফিরে এসে তথ্য দিলে তাদের পুরস্কৃত করার ঘোষণাও দিয়েছে র‌্যাব। এখন দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর ধরেই স্বেচ্ছায় কারো কাছে না বলেই নিখোঁজ হয়েছে নতুবা দেশ ত্যাগ করেছে এমন সংখ্যাও দুইশয়েরও বেশি হতে পারে। এতদিন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়ে আসছে, যারা নিখোঁজ হয়েছে তাদের গুম করা হয়েছে এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাদের গুম করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, যারা নিখোঁজ হয়েছে বলে পরিবার থেকে বলা হচ্ছে কিংবা থানায় জিডি করা হচ্ছে, তাদের কোন পরিবারের পক্ষ থেকেই গুম বলে অভিযোগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়ী ও দোষারূপ করছে না। তাহলে বিএনপি এতদিন ধরে যারা নিখোঁজ রয়েছে, তাদেরই গুম হিসেবে চালিয়ে দিয়ে আসার পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়ী ও দোষারূপ করার মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে বিদেশের কাছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সরকারকে বেকাদায় ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল? সরকারের নীতিনির্ধারক মহল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে এমনটাই অভিযোগের তীর ছুড়েছে বিএনপির দিকে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন যতই দিন যাচ্ছে ততই নিখোঁজের সংখ্যা বাড়ছে। এই যে নিখোঁজের সংখ্যা বাড়ছে তাহলে এই নিখোঁজগুলোও কি গুম? গোয়েন্দা সূত্র জানান, শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলায় ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় আটক শরিফুল ইসলাম ওরফে সফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, সন্ত্রাসী হামলায় ৫ জন অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে আবির রহমান নিহত হয়েছে। শাফিউল গ্রেফতার হয়েছে। এখনও অধরা রয়ে গেছে অন্তত ৩ জন সহযোগী। এর মধ্যে ৪ জন সন্ত্রাসী হামলার ৩ দিন আগে একই বাড়িতে ভাড়া নিয়েছিল। সরাসরি সন্ত্রাসী হামলায় অংশগ্রহণকারীদের অন্তত ৩ জনসহ ব্যাকআপ পার্টির অন্তত আরও ৫ জন এখনও উধাও আছে বলে গ্রেফতারকৃত জঙ্গী শাফিউলের দেয়া জবানবন্দীতে উল্লেখ আছে। অপরদিকে গুলশানের সন্ত্রাসী হামলায় থান্ডারবোল্ট অপারেশনেই নিহত হয়েছে ৫ জঙ্গী। তাদের সঙ্গে ব্যাকআপ পার্টিতে যারা ছিল তারা এখনও অধরা রয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেকের নাম পরিচয় ও ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে যাদের খুঁজছে গোয়েন্দারা। গুলশান ও শোলাকিয়া সন্ত্রাসী হামলার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে হামলাকারীরা একই গ্রুপের ও জঙ্গীরা জেএমবির। গুলশান ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলাকারী জঙ্গীদের গ্রেফতারের জন্য হন্যে হয়ে খোঁজ করছে গোয়েন্দারা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নারী জঙ্গীসহ চার জঙ্গীর ভিডিও ॥ গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন এক নারীসহ চারজন ও একটি টয়োটা এক্স ফিলডার গাড়িকে চিহ্নিত করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার র‌্যাবের ফেসবুক পেজে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। র‌্যাবের অনলাইন মিডিয়া সেলের ফেসবুক পৃষ্ঠায় এক মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ওই সম্পাদিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়। গুলশানের ৭৫ ও ৭৯ নম্বর সড়কে বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ওই ভিডিওতে সময় দেখানো হয়েছে ১ জুলাই রাত ৮টা ৪২ থেকে ৯টার মধ্যে। ওই সময়ে ওই সড়কে চলাচলরত এক নারী ও তিন পুরুষকে চিহ্নিত করা হয়েছে সন্দেহভাজন হিসেবে। পাশাপাশি একটি গাড়িও চিহ্নিত করা হয়েছে। হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় প্রবেশ পথের পাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাদা শার্ট পরিহিত একজন, এরপর একটি সিলভার রঙের গাড়ি, এরপর কালো হাফ হাতা গেঞ্জি পরিহিত একজন, পরে সাদা হাফ হাতা শার্ট পরিহিত আরেকজন, সবশেষে সালোয়ার কামিজ পরা এক নারীকে। ঘটনাস্থলে একাধিকবার ঘোরাফেরা করছে তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সোমবার সাংবাদিকদের ভিডিওর বরাত দিয়ে বলেছেন, জঙ্গীরা হেঁটে এক এক করে হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকেছিল। ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করলেও বাংলাদেশের পুলিশ বলছে, হামলার পেছনে ছিল জেএমবির জঙ্গীরা। জঙ্গীদের পরিচয় জানা থাকলে দ্রুত র‌্যাবের যে কোন নিকটস্থ ব্যাটালিয়ন অথবা ক্যাম্পে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়েছে। অথবা ফোন করতে পারেন ০১৭৭৭-৭২০ ০৫০ নম্বরে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত. গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের কূটনীতিক পাড়ার অভিজাত এই রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশীসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করে। এর মধ্যে ডিবির এসি রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন খান সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডে নিহত হন। পরদিন ২ জুলাই সকালে নিরাপত্তা বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ১৩ জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করে এবং ৬ জঙ্গীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওরা ॥ হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলাকারী জঙ্গীরা তরুণ বাংলাদেশী, উচ্চশিক্ষিত, বিত্তবান ও সম্ভ্রান্ত ঘরের সন্তান। আইএস থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে ধারণা করছে গোয়েন্দারা। এ ঘটনায় জিম্মিদের মধ্যে হাসনাত করিম নামে ওই ব্যক্তি এখন গোয়েন্দা হেফাজতে আছেন। এই হাসনাত করিম নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২০১২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। গুলশান হামলায় জড়িত তরুণ নিবরাস ইসলাম ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক ছাত্র। গুলশানের এই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বেশিরভাগ উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তারা গত কয়েক মাস ধরে তারা নিরুদ্দেশ ছিলেন বলে পরিবারের ভাষ্য। জুম্মন শিকদারÑ জিহাদে অংশ নিতে ইরাক যাচ্ছি ॥ ‘জিহাদে অংশ নিতে ইরাক যাচ্ছি’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছোট ভাইকে এ বার্তা পাঠিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন গত দেড় বছর ধরে নিখোঁজ। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নজিবুল্লা আনসারী। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, আমি ইরাকে এসেছি। বাবা-মাকে আমার জন্য চিন্তা করতে নিষেধ করো। জিহাদের জন্য আমি এখানে এসেছি। আমি আর বাড়ি ফিরব না। সময় বের করতে পারলে ফোন করব। ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দেন তার ছোট ভাইকে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে নিখোঁজ হলেও গত ১০ জুলাই তার বাবা নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য রফিকুল্লাহ আনসারী চট্টগ্রামের ইপিজেড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর টেলিভিশনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ছবির মধ্যে নজিবুল্লার ছবি দেখে তার বাবা জিডি করেন। ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, জিডিতে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে নজিবুল্লার সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চাকরির সুবাদে নজিবুল্লাহর বিভিন্ন দেশে যাতায়াত ছিল। বিদেশের কর্মস্থল থেকেই তিনি ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে ইরাকে চলে যান। তার পরিবার বিষয়টি সবার কাছেই গোপন করছিল। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে আইএস একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। বাবার চাকরি সূত্রে চট্টগ্রামে বড় হওয়া নজিবুল্লাহর জন্ম ১৯৮৭ সালে। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি ও ২০০৭ সালে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষাতেই তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এরপর তার আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। টেলিভিশনে দেখানো নিখোঁজ ব্যক্তির ছবির মধ্যে নজিবল্লাহর ছবি দেখে তার বাবা রফিকুল্লাহ জিডি করেন। জিডিতে বলা হয়েছে, ফেসবুকে নজিবুল্লাহ তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। জিডিতে উল্লেখ করেছেন, এইচএসসি পাসের পর তার ছেলে মালয়েশিয়া মেরিন একাডেমিতে পড়তে যায়। সেখানে থাকার সময়ই যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ‘বৃত্তি’ নিয়ে পড়ালেখা শেষ করে ২০১২ সালে বিদেশী একটি জাহাজে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি নেয় নজিবুল্লাহ। তবে ২০১২ সালের পর নজিবুল্লাহ আর দেশে ফেরেনি। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা তার কাছ থেকে ছেলের পাসপোর্ট নম্বর সংগ্রহ করেন ও তার সন্ধান জানতে চান। এর কয়েকদিন পর তিনি ওই গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেন, তার ছেলেকে আর দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে না। কারণ, তার অবস্থান তাদের জানা নেই। তবে নাজিবুল্লাহর ফেসবুকের বার্তা সম্পর্কে পুশিলকেই প্রথম তথ্য দিয়েছেন তিনি। জুম্মন শিকদারের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে লেনদেন ॥ গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার সন্দেহভাজন জঙ্গী জুম্মন শিকদারের একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আরেক জঙ্গীকে দিয়েছে এমন ধরনের তথ্য পেয়েছে তদন্তকারীরা। প্রথম দফায় নিখোঁজ যে ১০ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয় তার মধ্যে জুম্মন শিকদার অন্যতম। ইয়েমেন ফেরত জঙ্গীদের সঙ্গে তার কানেকশন রয়েছে এমন ধরনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার সময়ে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় ধরা পড়া শরীফুল ইসলাম আবু মোকাতিল নামের এক জঙ্গী সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অব্যাহত আছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে গুলশানের জঙ্গী হামলার ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করে বলেছে, জঙ্গী হামলায় সরাসরি জড়িত ছিল পাঁচ থেকে ছয়জন ও তাদের পেছনে ছিল আরও কয়েকজন জঙ্গী সদস্য ছিল বলে জানিয়েছে। যারা এখনও ধরা পড়েনি, উধাও হয়ে গেছে, তারা কোথায় আছে, গ্রেফতারকৃত শাফিউল সেই জঙ্গী আস্তানার খবর দিয়েছে কিনা জানা যায়নি। তবে আটক হওয়া জঙ্গী শাফিউল জঙ্গী জগতের অন্ধকার জীবনের অনেক অজানা খবরই দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
×