ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেধাস্বত্বের প্রয়োজনীয় সুরক্ষার অভাবে পণ্যের যথাযথ মূল্য পাচ্ছে না

ভৌগোলিক নির্দেশক তালিকা তৈরিতে ত্রুটি থাকায় রেজিস্ট্রেশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২০ জুলাই ২০১৬

ভৌগোলিক নির্দেশক তালিকা তৈরিতে ত্রুটি থাকায় রেজিস্ট্রেশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ ভৌগলিক নির্দেশক পণ্যের রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ড, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদফতরের ত্রুটিপূর্ণ তালিকার কারণে ভোক্তাসাধারণ পছন্দমতো পণ্যপ্রাপ্তিতে বাধাগ্রস্ত ও বঞ্চিত হচ্ছেন। পাশাপাশি পণ্য আহরণ, উৎপাদন ও বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মেধাস্বত্বের প্রয়োজনীয় সুরক্ষার অভাবে সেসব পণ্যের যথাযথ মূল্য পাচ্ছে না। একই সঙ্গে সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব হতে। বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলায় অনেক বিখ্যাত পণ্য রয়েছে। কোন পণ্য বিখ্যাত হওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভৌগলিক অবস্থান এবং কারিগরের বিশেষ দক্ষতার একটি ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। ভোক্তাগণের নিকট রয়েছে উচ্চমানের গ্রহণযোগ্যতা একটি বিশেষ এলাকার জলবায়ু, মাটির প্রকৃতি ও সংশ্লিষ্ট পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত কারিগরগণের বিশেষ দক্ষতা ও নৈপুণ্যের মাধ্যমে তা বিশেষ মান ও গুণসম্পন্ন পণ্য উৎপাদিত হয়। সংক্ষেপে এটাকে বলা হয়ে থাকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য। এটি প্রাকৃতিক, কৃষিজ, হস্তশিল্পজাত দ্রব্য হতে পারে। জনসাধারণ এসব পণ্য গ্রহণে নানান ধরনের অসুবিধা দূরীকরণার্থে সরকার ‘ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন ২০১৩’ ও ‘ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য বিধি ২০১৫’ প্রণয়ন করেছে। একই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু করেছে। এ সংক্রান্ত আইন বিধিমালা ফরমসহ প্রয়োজীয় তথ্যাদি এ অধিদফতর সরবরাহ করবে বা পাওয়া যাবে। কিন্তু শুরুতেই তালিকা তৈরিতে বড় ধরনের ত্রুটি থাকার কারণে এসব পণ্যের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়ে জনগণের কাছ থেকে কাক্সিক্ষত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। যেমন ৬৪ জেলার ১৪টি পণ্য তালিকাভুক্ত করলেও বহু জেলার একাধিক বিশেষায়িত পণ্য বাদ পড়ে গেছে। যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিল্ক ও সুতা তৈরির রেশম গুটি (পলু), আমের চারটি বিশেষ জাত, কাঁসা-পিতল, লাক্ষা, শিবগঞ্জের চমচম, মনাকষার প্যাড়া, কাথা সুজনী শিল্পের নাম উঠে আসেনি। যেমন উল্লেখ করা হয়েছে টাঙ্গাইল শাড়ি, সুন্দরবনের মধু, ঢাকার জামদানি, সিলেট ও পার্বত্য এলাকার হস্তজাত পণ্য ইত্যাদি। এককথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো একাধিক জেলার প্রায় দেড় শ’ পণ্য রয়েছে যা তালিকায় উঠে আসেনি। ইদানীং চাঁপাইনবাবগঞ্জের উৎপাদিত চিনি আতপ চালের (পোলাও চাল) নাম তালিকার মধ্যে নেই। এমতাবস্থায় পুরো দেশের অধিক্ষেত্রে ‘ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য’ তালিকা তৈরিতে প্রতি জেলায় সেমিনারসহ জেলা প্রশাসক/বিসিকসহ একাধিক বিভাগের সহযোগিতা নিতে পারে। তবেই ভৌগলিক বা প্রাকৃতিক নির্দেশক পণ্যের রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব, যাতে ভোক্তা ও সরকার উপকৃত হবে। সুযোগ নিতে পারবে না অসাধু ব্যবসায়ীরা। পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদফতরের গাফিলতির কারণে পণ্যের উৎপাদনকালীন ও ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্তসহ দেশের অর্থনীতির বিকাশ বড় ধরনের বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ তালিকার কারণে।
×