ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিলু শামস

আতঙ্কের পৃথিবীতে এক চক্কর

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২০ জুলাই ২০১৬

আতঙ্কের পৃথিবীতে এক চক্কর

এয়ারপোর্ট লাউঞ্জের কাঁচের দেয়ালের বাইরে মর্মর সাগরে ভেসে চলা জাহাজের দিকে তাকালে কারোরই মনে হবে না তিন দিন আগে এ এয়ারপোর্টে বোমা বিস্ফোরণে ছাব্বিশ জন মারা গেছে। সবকিছু স্বাভাবিক। সমুদ্রে ঢেউ উঠছে স্বাভাবিক গতিতে, জাহাজ চলছে নিয়মিত রুটিনে। সাময়িক বন্ধ থাকার পর এয়ার ফ্লাইটও। তার পরও কিছুতেই কাটে না চাপা আতঙ্ক। কি হয় কি হয় অনিশ্চয়তায় কাটছে যাত্রা বিরতির তিন ঘণ্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট। এর মধ্যে নিহতদের স্মরণে লাউঞ্জের সব যাত্রী নিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেছে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ। আপাত স্বাভাবিকতার মধ্যে সে যাত্রা চূড়ান্ত গন্তব্য প্যারিস পৌঁছলেও পনের জুলাই শুক্রবার জানা গেল ভেতরে ভেতরে বড়ই অশান্ত ছিল মর্মর সাগর পাড়ের তুর্কি রাষ্ট্রটি। অবশ্য ততদিনে ফ্রান্স ও ইতালি ঘুরে আবারও ইস্তানবুলের ট্রানজিট পেরিয়ে ফিরে এসেছি ঢাকায়। নিরাপদে। কিন্তু আসলেই কি নিরাপদ আমরা কেউ? ইস্তানবুল এয়ারপোর্টে পৌঁছার তিন দিন আগে বোমা বিস্ফোরণ। প্যারিসের হোটেলে দীর্ঘ বিমানযাত্রার অবসাদ কাটতে না কাটতে বিবিসি ও সিএনএন জানায় ঢাকায় হলি আর্টিজান রেস্তরাঁর ভয়ঙ্কর সংবাদ। ভূমধ্যসাগরের তীরঘেঁষা অপূর্ব মার্সেই শহর ছাড়ার সপ্তাহ দেড়েক পর খবর এলো ওই সাগর তীরের আরেক অপরূপ শহর নিস-এ বর্বর হামলার। সদ্য ও দেশের মানুষজন দেখে এসেছি তাই যতবার বাস্তিল দিবসের ওই গাড়িচাপার দৃশ্য কল্পনা করি ততবার শিউরে উঠি। অনুমান করতে পারি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন তোলা মৃত শিশুটির পাশে পড়ে থাকা পুতুলের চেয়েও ফুটফুটে ছিল ওই শিশু। শান্ত ভদ্র পরিপাটি ফরাসীদের কথা বিভিন্ন লেখায় পড়লেও আগেরবার এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি। এবার প্রত্যক্ষ করেছি। চরম নিন্দুকও এদের রুচি এবং সৌন্দর্যবোধের প্রশংসা করতে বাধ্য। নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে নাক উঁচু ভাব আছে ঠিকই তবে তার মধ্যে উগ্রতা নেই। কথা বলে মৃদু স্বরে। পাঁচ শ’ লোক একসঙ্গে এক জায়গায় উপস্থিত হলেও কথার শব্দ শোনা যায় না। রাস্তায় চলাফেরায় খুবই বিনয়ী। আর ভীষণ বিনোদনপ্রিয়। ডিজনিল্যান্ডে ঘুরতে ঘুরতে কিংবা মার্সেই পোর্ট ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই দেখা যাবে তরুণ কিংবা মধ্যবয়স্ক গায়ক-গায়িকারা স্টেজে সুললিত ভঙ্গিতে গান গাইছে। দর্শকরা তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে উৎসাহ দিচ্ছে। বাস্তিল দিবসের অনুষ্ঠানেও নিশ্চয় ওই একাত্ম হওয়া দর্শকদের পিষে মেরেছে ভয়ঙ্কর ট্রাক। চুরাশিটি নিরীহ প্রাণ! কম কথা নয়! আর তার একদিন পর তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান। দুশো পঁয়ষট্টিটি প্রাণ ঝরেছে। সবখানেই যেন মৃত্যুর হিম ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া। যাত্রা বিরতির প্রায় চার ঘণ্টা কাটে বই পড়ে আর মর্মর সাগর উস্কে দেয় বিক্ষিপ্ত ভাবনা। এক সময় এখান থেকেই পরিচালিত হয়তো এশিয়া, আফ্রিকা আর ইউরোপে বিস্তৃত দাপুটে অটোম্যান সাম্রাজ্য। হয়তো এই মর্মর সাগরের তীর ঘেঁষে কোথাও ছিল সুলতানদের প্রাসাদ। কেমন হয় যদি এখন ইতিহাস থেকে উঠে আসেন সুলতান বায়েজিদ, সুলতান সুলাইমান কিংবা সেলিম? সেই পনেরো ষোলো শতকের সুলতানদের কেমন লাগবে এখনকার ইস্তানবুল দেখে? এখনকার যুদ্ধ-বিগ্রহ বা সেনা অভ্যুত্থান ইত্যাদি দেখে তারা কি চমকে যাবেন? সম্ভবত না। কারণ অটোম্যান সাম্রাজ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকতো। এর সঙ্গে তারা ভালই পরিচিত। সুলতানদের মধ্যে ইতিহাসে প্রথম সুলাইমানের নাম বিখ্যাত। তিনি বেলগ্রেড জয় করেছিলেন। হাঙ্গেরির দক্ষিণ ও মধ্য অংশও জয় করেছিলেন। তার নেতৃত্বে ভিয়েনায় যে যুদ্ধ হয়েছিল তার এক বিশাল তৈল চিত্র ‘ক্রসেড’ শিরোনামে রোমের এক আর্ট গ্যালারিতে দেখেছি। সুলতান সুলাইমানকে নিয়ে তুর্কি ভাষায় নির্মিত বাংলায় ডাব করা ধারাবাহিক নাটক দেখাচ্ছে ঢাকার একটি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল। অবশ্য সেখানে ইতিহাসের চেয়ে সুলতানের রোমান্স আর অন্দর মহলের ষড়যন্ত্রেরই প্রাধান্য। তিন মহাদেশের ভৌগলিক সহাবস্থান অটোম্যানদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছিল। সুলতান সুলাইমান কবিতা লিখতেন। কোন কোন সুলতান নিজেরাই সুর সৃষ্টি করে গাইতেন। এ বিষয়ে সুলতান তৃতীয় সেলিমের নাম উল্লেখ করার মতো। এখনও তুরস্কের সঙ্গীতাঙ্গনে তার সুর প্রচলিত রয়েছে। অটোম্যানদের স্থাপত্যও এক সময় নাম করেছিল। সে সময়ের স্থাপত্যের এক খ-াংশ বার্লিনের মিউজিয়াম আইল্যান্ডের এক মিউজিয়ামে দেখেছিলাম। সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানরা এটা সংগ্রহ করেছিল। মিউজিয়ামের একটি কর্নার সাজানো হয়েছে ওই স্থাপত্য দিয়ে। অপূর্ব সেই শৈলীর সামনে দাঁড়ালে ইতিহাস যেন ফিসফিসিয়ে ওঠে চারপাশে। এখনকার তুরস্ক এশিয়া ইউরোপ দুই মহাদেশে। আমরা যেখানে বসে আছি তা ইউরোপীয় অংশে। সাংস্কৃতিক মিশ্রণের প্রকাশ ডিউটি ফ্রি শপগুলোতেও খেয়াল করলে দেখা যায়। কোন কোন শপে মালিক ভদ্র মহিলা বসে আছেন ইউরোপীয় পোশাকে, তার কর্মী নারীরা কাজ করছেন হিজাবে মুড়ে। ॥ দুই ॥ কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত আধুনিক তুরস্কে প্রথম সেনা অভ্যুত্থান হয় উনিশ শ’ ষাট সালের সাতাশ মে। কামালের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক মতাদর্শের বিপরীতে অবস্থান করা দল তখন ক্ষমতায়। রাষ্ট্র পরিচালনায় বেশকিছু ধর্মীয় নিয়মনীতি ফিরিয়ে এনেছে তারা। সরকারী দল আর বিরোধীদের মতাদর্শিক টানাপোড়েন চরমে উঠলে মাঝখান থেকে মাথা তোলে সেনা ছাউনির উর্দিধারীরা। তারপর কম করে হলেও তিনবার সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে দেশটিতে। এবারের ব্যর্থ অভ্যুত্থান গুনলে চারবার। প্রেসিডেন্ট রেজেব তাইয়েপ এরদোগান এ অভ্যুত্থানের জন্য সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন এবং এর জবাব দেয়ার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। এরদোগানের ক্ষুব্ধ মন মাস্টার মাইন্ড শনাক্ত করে প্রকাশ্যে নামোচ্চরণ করেছে। সাহস বটে! তবে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার কথাটা বেশ কৌতুককর। কার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবেন তিনি? তিনি কি ভুলে গেছেন ট্রুম্যান ডকট্রিনের কথা? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এক দিকে চীন, কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ বিপ্লবী পূর্ব এশিয়া, অন্যদিকে পশ্চিম এশিয়ার ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্র কাঠামোর দেশগুলোর দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিল উদিয়মান বিশ্বনিয়ন্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পরই মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ‘ট্রুম্যান ডকট্রিন’ নামে যে ফর্মুলা ঘোষিত হয় তার মূল উদ্দেশ্যই ছিল নতুন বিশ্ব নিয়ন্তার হাত শক্তিশালী করতে দক্ষিণপন্থী ইসলামী শক্তিকে শাণিত করা। সমাজতন্ত্র ও সেক্যুলার আরব জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রতিক্রিয়াশীল রাজতন্ত্রগুলোকে গড়ে তোলা। এ জন্য অর্থ ও অস্ত্রের যোগান এসেছে জোয়ারের মতো। দীর্ঘমেয়াদী সেই পরিকল্পনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফল ইসলামের নামে এক বিকৃত দানবীয় শক্তির উত্থান। এ কাজ তারা করেছিল কমিউনিজম-ভীতি থেকে। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন শুধু নিজেই রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শক্ত ভিত গড়েনি। গোটা পৃথিবীর শ্রমিক শ্রেণী এবং উপনিবেশগুলোর নিপীড়িত জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার পক্ষেও কাজ করছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিশ্চিহ্ন করার কাজে মার্কিনী অধ্যবসায় এক সময় সফল হয়। দুই পরাশক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতা, দ্বন্দ্ব, ঠা-া লড়াই শেষ হওয়ার পর মার্কিন ভাষ্যানুযায়ী বিশ্বে শান্তির নহর বয়ে যাওয়ার কথা। দুই মেরুতে বিভক্ত বিশ্ব ব্যবস্থার অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র একাই নেতৃত্বে। বিশ্বময় অবারিত নেতৃত্ব তার। গত শতকের নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের ‘নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার অঙ্গীকারে যারা আস্থা রেখেছিলেন অচিরেই তারা সেই ‘নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার’ স্বরূপ দেখলেন আফগানিস্তানে। এসব কথা ডেস্কে বসে লেখা। ইস্তানবুুল এয়ারপোর্টে যাত্রা বিরতিতে মনে এসেছে বিক্ষিপ্ত আরও নানা কথা। এক সময় অটোম্যান সাম্রাজ্য দানিউব নদীর পাড়ের বুদাপেস্ট থেকে টাইগ্রিসের পাড়ে বাগদাদ এবং ক্রিমিয়া থেকে নীল নদের প্রথম জলপ্রপাত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বারো শ’ থেকে উনিশ শ’ বাইশ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অটোম্যানদের এই সাম্রাজ্য স্থায়ী হয়েছিল। তারপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমসাময়িক পটভূমি তৈরি হয়েছিল বলা যায় কয়েকটি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। যেমন সুদান ও নীল নদ নিয়ে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সংঘর্ষ, মরক্কো নিয়ে ফ্রান্স ও জার্মানির সংঘর্ষ, আফগানিস্তান নিয়ে রুশ-ব্রিটিশ, মাঞ্চুরিয়া নিয়ে রুশ-জাপান, তুরস্ক ও মধ্য এশিয়া নিয়ে ব্রিটিশ-জার্মান, বলকান নিয়ে রাশিয়া ও অস্ট্রিয়াÑহাঙ্গেরির বিবাদ-সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল প্রথম সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বযুদ্ধ। এক শ’ বছরে পৃথিবীর পরিবর্তন অনেক হয়েছে। কিন্তু দখল-আধিপত্যের পুরনো খেলা অব্যাহতভাবেই রয়েছে। শুধু এর রূপ পরিবর্তন হয়েছে। উনিশ শ’ চৌদ্দর পর ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে আবার নানা প্রতিযোগিতা ও দ্বন্দ্ব এবং তিরিশের দশকের মহামন্দা ও ফ্যাসিবাদের উত্থান আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পুঁজির গঠনপ্রবাহ ও মুনাফা অর্জনের প্রকৃতিতে পরিবর্তন আসে যা স্পষ্ট হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় বিশ্বে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাকে প্রতিষ্ঠিত করে। বিভিন্ন দেশে বিপ্লবী সরকার নিয়ে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের অভ্যুদয় পুঁজিবাদী ব্যবস্থার আয়তন বা পরিসর কমিয়ে দেয় যা ওই ব্যবস্থার জন্য ভয়ানক দুশ্চিন্তার কারণ হয়। পুঁজিবাদ জন্ম থেকেই অন্তর্নিহিতভাবে আন্তর্জাতিক চরিত্রের। সোভিয়েত ইউনিয়নের শক্তিশালী অবস্থান তার আন্তর্জাতিকতাকে আরও দৃঢ় করতে সচেষ্ট হয়। অর্থনীতির নতুন বিন্যাসকে সুসঙ্গত রাখতে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান, যার অন্যতম লক্ষ্য হয় নবীন স্বাধীন দেশগুলোয় আন্তর্জাতিক একচেটিয়া পুঁজির বিনিয়োগ ও বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা দেয়া। এ সময় থেকে যুদ্ধ অর্থনীতি বিশ্ব পুঁজিবাদে স্থায়ী হয়। এরপর প্রায় প্রতি দশকে পুঁজিবাদ নিজেকে নতুন নতুনভাবে বিন্যাস করে। সমাজতন্ত্রের পতন নিশ্চিত করার পর বিশ্ব পুঁজিবাদ গা- ঝাড়া দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে। নব্বই দশক ছিল পুরনো পৃথিবীর ভারসাম্য থেকে নতুন ভারসাম্যে প্রবেশ করার ক্রান্তিকাল। বলা হতো, নব্বই দশকের মৌলিক প্রশ্ন হলোÑ মাইক্রো ইলেক্ট্রনিক্স, বায়োটেকনোলজি এবং শক্তি সম্পদের নতুন প্রযুক্তির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় কে লাভবান হবে সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দশক। নতুন সহস্রাব্দের শুরুতে একচেটিয়া বিশ্বের অধিপতি যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ’ ঘোষণা করে। যার কোন সীমানা ছিল না। তার পর এই ষোলো বছরে সেই যুদ্ধ ‘সন্ত্রাসের বিপরীতে’ কতটা শান্তি এনেছে বিশ্ববাসী এখন তাই প্রত্যক্ষ করছে। প্রখ্যাত তাত্ত্বিক আই কে শুক্লার একটি কথা বার বার কোড করার মতোÑ ‘সাম্রাজ্যবাদীরা যত বেশি শান্তির কথা বলে, ততই তারা গোপনে ও প্রকাশ্যে আরও বড়, আরও বর্বর যুদ্ধের পরিকল্পনা আঁটে’। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া ইত্যাদির ঘটনা আমাদের এ বক্তব্যের সত্যতাই মনে করিয়ে দেয়। এখন বিশ্বজুড়ে আইএস ডামাডোল চলছে। আইএস এখন কার্যসিদ্ধির মনোরম ঢাল। পরিকল্পনাকারী ছক কেটে ঠা-া মাথায় এগোচ্ছে আর ‘কেষ্টাবেটা’ আইএস মিডিয়া তড়পাচ্ছে। বলা যায় না ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’র জন্য এই আইএসের বিরুদ্ধে আরেকটি সর্বব্যাপী যুদ্ধ ঘোষিত হবে কিনা। হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নির্বাচনের পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
×