ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে ফরাসী মুসলমানদের

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ২০ জুলাই ২০১৬

অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে ফরাসী মুসলমানদের

বাস্তিল দিবসে ফ্রান্সের নিস শহরে ট্রাক নিয়ে হামলার ঘটনায় তাদের অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে বলে মনে করছেন নিসের দরিদ্র এলাকা আরিয়ানের মুসলিম বাসিন্দারা। এ ঘটনার জেরে সামাজিক বিভেদ ও বৈষম্যের শিকার হবেন বলে মনে করছেন তারা। খবর ইয়াহু নিউজের। ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করে নিজেদের একজন ‘সৈনিক’ হিসেবে তিউনিসিয়ায় জন্ম নেয়া হামলাকারী মোহামেদ ল্যউইজ বুলেলের প্রশংসা করেছে। গত বৃহস্পতিবার বাস্তিল দিবসের উৎসবে আতশবাজির প্রদর্শনী উপভোগের পর হাজারো মানুষ যখন নিসের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী বিখ্যাত প্রমেনেদ দেজাঙ্গলে চত্বরে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার অপেক্ষায়, এমন সময় বুলেল দ্রুতগতির ২৫ টনি একটি ট্রাক জনতার ওপর উঠিয়ে দিয়ে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত চালিয়ে যান। এতে ৮৪ জন নিহত হন। পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার আগে তিনি পিস্তল দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুড়েছিলেন। ফরাসী প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস জানিয়েছেন, ৩১ বছর বয়সী হামলাকারী ‘খুব দ্রুত উগ্রবাদী হয়ে উঠেছিল। ফ্রান্সের পাবলিক প্রসিকিউটর ফ্রাঁসোয়া মলিয়ে সোমবার জানিয়েছেন, আইএসের সঙ্গে বুলেলের সরাসরি সম্পর্ক থাকার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে ইদানীং তারম ধ্যে ইসলামের কট্টরপন্থী ধারার দিকে ঝোঁক লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বুলেল যেখানে বসবাস করতেন, সেই আবতোরিস আবাসিক এলাকা থেকে আরিয়ান এলাকাটি কয়েক কিলোমিটার দূরে। এখানে অনেক মুসলমানের বসবাস। কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো দুর্বল ব্যক্তিদের বেছে নেয় জানিয়ে স্থানীয় আল ফোরকানি মসজিদের ইমামের জন্য হত্যাকারীর ধর্মকে দায়ী করার বিষয়ে সাবধান থাকতে বলেন। তিনি বলেন, দুর্বলরা ব্যবহৃত হলো বলে তাদের ধর্মের ওপর চড়াও হবো, এটা উচিত হবে না। এর সম্পূর্ণ বিপরীতটাই করা দরকার। আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে এই দেশকে রক্ষা করতে হবে। ‘ধর্ম যাই হোক, অপরাধ অপরাধই’ বলেন তিনি। স্বজন ও বন্ধুরা জানিয়েছেন, খুব অল্পদিন আগেও বুলেল প্রচুর মদ্যপান করতেন, গাঁজা খেতেন এবং নারী আসক্ত ছিলেন। এসব কিছুই ধার্মিক মুসলমানের জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খায় না। দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের অন্যতম মুসলিম নেতা এলাবেদ লোফতি বলেন, এই ব্যক্তি রোজা রাখতো না, ভাল মুসলিম বলার মতো ন্যূনতম যোগ্যতাও তার (বুলেল) নেই। ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বসবাস। এই দেশটির আরিয়ান ও অন্যান্য এলাকার মুসলিমরা ক্রমবর্ধমান বিচ্ছিন্নতাবোধে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফ্রান্সে জন্ম নেয়া মরোক্কান বংশোদ্ভূত ইউনিস বলেন, ফ্রান্সে, ইউরোপে কিছু হলেই পুরো মুসলিম সমাজকে দায়ী করা হয়। এক সময় এই বৈষম্য ছিল জাতিগত, এখন এটি ধর্মগত বৈষম্যে পরিণত হয়েছে বলেন ইউনিস।
×