ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাম্পের ইশতেহার ঘোষণা ‘ভারত ভূ-রাজনৈতিক মিত্র’

‘নিরাপদ’ করব ॥ পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ২০ জুলাই ২০১৬

‘নিরাপদ’ করব ॥ পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতমপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির ইশতেহারে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভা-ার নিরাপদ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ দলিলে ভারতকে এক ভূ-রাজনৈতিক মিত্র ও এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার বলে অভিহিত করা হয়। এতে চীনের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে কিছু কড়া কড়া মন্তব্যও করা হয়। সোমবার ক্লিভল্যান্ডে দলের কনভেনশনের উদ্বোধনী দিনে ৫৮ পৃষ্ঠার ওই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হয়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। রিপাবলিকান ইশতেহারে ভারতের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়কে সহিংসতা ও বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করতে নয়াদিল্লীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়। ইশতেহারে বলা হয়, ভারতের জনগণের গতিশীলতা এবং তাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থায়িত্ব তাদের দেশকে কেবল এশিয়ারই নয়, বিশ্বেরও নেতৃত্ব পদে আসীন করতে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে পাকিস্তানের জন্য তা উদ্বেগের কারণ হবে। ইশতেহারে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পাকিস্তানের জনগণের জন্য বিশেষ রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। এভাবে দেশটির সমস্যার সঙ্গে বারতের একেবারেই সম্পর্ক নেই বলে এতে দেখানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কার্যকরী সম্পর্ক উভয়ের স্বার্থেই প্রয়োজনীয়, যদিও তা সময়ে সময়ে কঠিন অবস্থায় পড়েছে। আমরা সেই ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশা করছি, যা আন্তর্জাতিক সংঘাতের কারণে ক্ষুণœ হয়েছে। এ প্রক্রিয়া এতদিন পর্যন্ত অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না, যতদিন সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে সহায়তার জন্য পাকিস্তানের কোন নাগরিককে শাস্তি দেয়া হয় বলে ইশতেহারে সতর্ক করে দেয়া হয়। এ সতর্কবাণীতে ডাঃ শাকিল আফ্রিদিকে কারারুদ্ধ রাখার ঘটনার প্রতি পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করা হয়। আফ্রিদি ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করে ছিলেন এবং পাকিস্তানের এস্টাব্লিশমেন্ট আফ্রিদিকে কারাবন্দী করে রেখেছে। ইশতেহারের একটি বাক্য নিশ্চিতভাবেই ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির জন্য সতর্ক সঙ্কেত হয়ে দেখা দেবে। এতে বলা হয়, পাকিস্তানী, আফগান ও আমেরিকানদের ওই অঞ্চলকে তালেবানমুক্ত করা এবং পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভা-ারকে নিরাপদ করার ক্ষেতে অভিন্ন স্বার্থ জড়িত রয়েছে। ওই অঞ্চলের অগ্রগতির জন্য পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে ইশতেহারে বলা হয়, একজন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পরস্পরিক আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সব আঞ্চলিক নেতার সঙ্গে কাজ করবেন। চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছু কড়া কড়া মন্তব্য করার পর গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (জিওপি) বলেছে, চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে এর জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফিরিয়ে নিতে এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ কথা, এর সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে বেজিং সমগ্র দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর এর উদ্ভট দাবি উত্থাপন করছে এবং মার্কিন ভূ-খ- ও আমাদের মিত্রদের কাছে বিরোধপূর্ণ জলরাশিতে বন্দর ও বিমান অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করে যাচ্ছে এবং আত্মরক্ষার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক ব্যাপকতর মাত্রায় নৌবাহিনী গড়ে তুলছে। এতে বলা হয়, ওবামা শাসকগোষ্ঠীর আত্মসন্তুষ্টি চীনা সরকার ও সেনাবাহিনীর মনে দক্ষিণ চীন সাগরজুড়ে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দেয়ার সাহস যুগিয়েছে। চীন তাদের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ‘গুয়াম কিলার’ বেজিংয়ের প্রধান প্রধান রাস্তায় প্রদর্শন করেছে। এতে আমেরিকার প্রথম প্রতিরক্ষা রেখা হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হলো। ইশতেহারে তিব্বত ও জিনজিয়াংয়ের সাংস্কৃতিক গণহত্যার কথা এবং হংকংয়ের প্রতিশ্রুত স্বায়ত্তশাসন ক্ষীণ হতে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, দস্যুবৃত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত এক অর্থনীতিতে মুদ্রায় কারচুপি করা হয়, আমাদের প্রযুক্তি চুরি করা হয় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ও কপিরাইট উপেক্ষা করা হয়। ব্যবসায়িক অর্থে এটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি জবরদখল। ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, ঐসব অপরাধে বিশেষত সরাসরি সেন্সরশিপ আরোপও ভিন্নমতাবলম্বীদের খুঁজে বের করতে সহায়তা করা কোন আমেরিকান কোম্পানির জন্য লজ্জার বিষয়। এটি চীনের বিরুদ্ধে এক মার্কিন রাজনৈতিক শ্রেণীর কড়া ভাষা প্রয়োগ। এতে চীনের দিকে ছুটে চলেছে এমন সিলিকন ভেলি কোম্পানিগুলো পর্যন্ত সমালোচনা করা হয়।
×