ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রুবেল রনি

নাইনটিনের কীর্তি

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ১৯ জুলাই ২০১৬

নাইনটিনের কীর্তি

সময় যখন ভারতীয় বিজ্ঞাপনকে অনুকরণ করে বিজ্ঞাপন নির্মাণ, ঠিক তখন তার উল্টো কাজটাই করে বসল বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থা ১৯ (নাইনটিন)-এর একদল তরুণ। আমেরিকাভিত্তিক মানিট্রান্সফার কোম্পানি ‘রিয়া’র জন্য নির্মিত করল অসাধারণ এক বিজ্ঞাপন, যা আন্তর্জাতিক টিভি মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে। এ বিজ্ঞাপনের মূল দর্শক হলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় প্রবাসীগণ। অর্থাৎ বিজ্ঞাপনটি কোন ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত নয় বরং গল্প ভাবনা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য বাংলাদেশ থেকেই সম্পন্ন করে ১৯ (নাইনটিন) নামক প্রতিষ্ঠানটি। এ মাসের শুরুতে বিজ্ঞাপনটি ধারণ করা হয় ঢাকার পান্থপথে অবস্থিত ইন্টার একটিভ মিডিয়া হাউস ও উত্তরায় অবস্থিত ‘আশ্রয়’ নামক শূটিং হাউসে। ফরহাদ হাসানের পরিচালনায় নির্মিত এ বিজ্ঞাপনের মূল নকশায় ছিলেন সামুরাই মারুফ। পাশাপাশি চিত্রধারণে ছিলেন আহাদ আলী, শিল্প নির্দেশনায় শিমুল ও তার দল এবং পোশাক নির্দেশনায় নিশাত নিশি। বিজ্ঞাপনের মূল অভিনয়শিল্পী ছিল রিমঝিম। যার বয়স মাত্র ১১ বছর। তাই তার আনন্দ ছিল অন্যদের তুলনায় একটু বেশি। গল্পে রিমঝিম বড় হয়ে একজন চিত্রনির্মাতা হতে চায়, আর তাই সে তার বড় বোনের বিয়ের সবকিছু চিত্র ধারণ করতে আগ্রহী হয়। এ কারণে বিদেশ থেকে তার বড় ভাইয়ের পাঠানো টাকা উত্তোলনের চিত্রধারণ করতে সে তার মা ও বড় বোনের সঙ্গে বুথে যায়। একইভাবে সে তার বোনের মেহেদী রাতের চিত্রও ধারণ করতে থাকে। আর ঠিক এমন সময় তার বড় ভাই সুদূর আমেরিকা থেকে কাউকে না জানিয়ে পরিবারকে চমকে দেয়ার জন্য অনুষ্ঠানে এসে হাজির হয়। রিমঝিম তার ক্যামেরায় সেই মুহূর্তটিকেও চিত্রধারণ করে রাখে । বিজ্ঞাপনের গল্প সম্পর্কে ১৯ (নাইনটিন) আরও জানায় গল্পের শুরু থেকেই একটি শিশুর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে বিজ্ঞাপনটি দৃশ্যায়ন করা হয়। যেন বাচ্চাটিকে একজন ভবিষ্যত চিত্রনির্মাতা হিসেবে গল্পে দেখানো যায়। কারণ এর মাধ্যমে আরও সহজে পুরো গল্পটি দর্শকদের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে। এছাড়া গল্পের অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন মিলি বাশার, কারার ও তৃষা। ১৯ (নাইনটিন) এ ব্যাপারে আরও জানায়Ñ এমন একটি আন্তর্জাতিক কাজ করতে পেরে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত। আমাদের পূর্বের কাজগুলোর বেশির ভাগই ছিল আন্তর্জাতিক তথ্যচিত্র কিংবা দেশীয় বিজ্ঞাপন। তবে এবারের কাজটি ছিল একেবারেই নতুন। কেননা এদেশ থেকে নির্মিত একটি বিজ্ঞাপনে ভারতীয় চরিত্রায়ন ও দৃশ্যায়ন করা সত্যিই বিশাল চ্যালঞ্জ। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মূল দর্শক যখন ভারতীয় প্রবাসীরা তখন সেটা হতে হবে অনেকটাই আলাদা। বাংলাদেশ থেকে এর আগেও অনেক বিজ্ঞাপন নির্মাতা ভারতে গিয়ে বিজ্ঞাপন নির্মাণে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তারা যথাযোগ্য কর্মদক্ষতা প্রমাণ করে এসেছেন। তাই আমরা বিশ্বাস করি এভাবেই হয়ত একদিন দেশের তরুণরা অল্প অল্প করে আমাদের এই শিল্পকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারবে।
×