ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিসবাহর চোখে এটি অসাধারণ জয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৯ জুলাই ২০১৬

মিসবাহর চোখে এটি অসাধারণ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চার দিনেই লর্ডস টেস্ট জিতে চার ম্যাচের ‘ইনভেস্টেক’ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। শক্ত প্রতিপক্ষ ইংলিশদের তাদেরই মাটিতে ৭৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে অতিথিরা। ২০১০-এ আলোচিত সেই স্পট ফিক্সিং-কা-ের পর ইংল্যান্ডে এটি তাদের প্রথম টেস্ট। কুলীন দেশে সাদা পোশাকে ‘প্রথম’ মিসবাহ আর ইয়ামিরের। সেখানে দুজনে বাজিমাত করলেন একসঙ্গে। ‘অধিনায়ক’ হিসেবে বেশি বয়সে (৪২ বছর ৪৭ দিন) টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন মিসবাহ-উল হক। লেগস্পিন-ভেল্কিতে ১০ শিকারের পথে রেকর্ড বইয়ের অনেক হিসাব এলোমেলো করে দিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ইয়াসির শাহ। সব মিলিয়ে এটিকে ‘অসাধারণ এক জয়’ বলে উল্লেখ করেছেন অতিথি সেনাপতি মিসবাহ। নতুন জীবনে আমিরকে আরও একবার স্বাগত জানিয়েছেন দার্শনিক স্বভাবের বিয়াল্লিশোর্ধ এ ক্রিকেটার। ‘২০১০ সালের অনাকাক্সিক্ষত সেই ঘটনার পর এটা অবিশ্বাস্য অর্জন। সবাই সত্যিকারের দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে। ওরা খেলাটির প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে সাফল্য এলেও ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে সবাই এই সিরিজের প্রথম ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে ছিল। বিশেষ করে পাকিস্তানী ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। ছেলেরা ছয় বছর ধরে লড়েছে এবং অসাধারণ এই জয় এনে দিয়েছে’- বলেন মিসবাহ। আগের ওই সফরে এই লর্ডস টেস্টেই সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফের সঙ্গে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পাকিস্তানের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিলেন আমির। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাঁহাতি পেসারের এটি ছিল প্রথম টেস্ট। সেদিকে ইঙ্গিত করেই অধিনায়কের এমন মন্তব্য। তিনি আরও বলেন, ‘সে (আমির) একটা দলের অংশ, যারা লর্ডসে দারুণ এক টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। এটা ওর জীবনের স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। এখান থেকে সে আবার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারল। সে এখন ভাল ছেলে, পরিণত ক্রিকেটার। সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রমাণ করতে পারবে যে, সে সত্যিকারার্থে একজন ভাল বোলার।’ প্রত্যাবর্তন ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন আমির। ইংল্যান্ডের মাটিতে উপমহাদেশের দলগুলোর অতীত রেকর্ড ভাল নয়। কদিন আগে লঙ্কানরা নাস্তানাবুদ হয়ে এসেছে। ঘুরিয়ে বললে, ঘরের মাঠে ইংলিশরা সত্যি ‘ভয়ঙ্কর’। জয়ের পর সেটিও উল্লেখ করেন মিসবাহ, ‘সেরা একটি দলের বিপক্ষে জয়, যারা নিজেদের কন্ডিশনে সবসময় ভয়ঙ্কর, খেলোয়াড়দের শৃঙ্খলা, শক্তি সবই ভাল- এমন দলের বিপক্ষে এই সাফল্য বিশেষ কিছু। তবে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। সামনের ম্যাচেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে লর্ডসের সেঞ্চুরিটিকে (১১৪) ক্যারিয়ারের সেরা বলেও স্বীকার করেন মিসবাহ, ‘অবশ্যই লর্ডসের এই সেঞ্চুরি বিশেষ কিছু। তার ওপর ইংল্যান্ডের মাটিতে এটি আমার প্রথম টেস্ট। আমি দারুণ খুশি। দলের জন্য গর্বিত। জয়ে সবাই অবদান রেখেছে, মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়েছে, যেখানে ইয়াসিরের কথা বিশেষভাবে বলতে হয়।’ অন্যদিকে ম্যাচ হারের জন্য প্রথম ইনিংসে নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক। কুক বলেন, ‘সার্বিক দৃষ্টিতে আমরা সমান তালেই লড়েছি, কিন্তু প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থাকাটা পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। তবে বাউন্সি পিচেও যেভাবে বল করেছে, তাতে প্রতিপক্ষ স্পিনার ইয়াসিরকে বাহবা দিতে হবে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেই (শুক্রবার শুরু দ্বিতীয় টেস্ট) আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’ পাকিস্তানের ৩৩৯/১০Ñএর জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৭২ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা। দ্বিতীয় ইনিংসে অতিথিরা ২১৫ করলে ২৮৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ইংল্যান্ড অলআউট ২০৭ রানে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮১ রানের পথে গ্রেট সুনীল গাভাস্কারকে টপকে ‘ওপেনার’ হিসেবে টেস্টে বেশি রান সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়েন কুক। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট-তীর্থে দলের এমন হারে স্মৃতিটা আর সুখের থাকেনি। উভয় ইনিংসে ৫ বা ততোধিক, ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে পেসার ক্রিস ওকসও আলো ছড়িয়েছেন।
×