ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

’১৮ সালের মধ্যে তিন হাজার ১শ’ অফিস নির্মাণ শেষ হবে

উপজেলা ও ইউনিয়নে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন ভূমি অফিস

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৯ জুলাই ২০১৬

উপজেলা ও ইউনিয়নে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন ভূমি অফিস

ফিরোজ মান্না ॥ দেশে ভূমি রেকর্ড সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়নে তিন হাজার এক শ’টি উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে পঞ্চম পর্যায়ে দেশের ৩৪৫টি উপজেলায় এক হাজার ১৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর ৬১ জেলার ১৩৯টি উপজেলা ও ৫শ’ ইউনিয়নসহ মোট ৬৩৯টি ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ষষ্ঠ পর্যায়ের এ অংশ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পিডব্লিউডি। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশের সব পুরনো ভূমি অফিস সংস্কারে প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৮৫ সালে। কিন্তু সেই সময় উদ্যোগটি ফাইলেই থেকে যায়। আলোর মুখ দেখেনি প্রকল্পটি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায আসার পর প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। সরকারের আগের মেয়াদ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত এক হাজার ১৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের পিডি হিসেবে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব দায়িত্ব পালন করছেন। তবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ করছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত অধিদফতর (পিডব্লিউডি)। দেশে বিদ্যমান উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো বহু পুরনো ও জরাজীর্ণ। ফলে জমির রেকর্ড ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষিভিত্তিক দেশে ভূমি সবচেয়ে মূল্যবান ও সীমিত সম্পদগুলোর মধ্যে একটি। আগামী দিনগুলোতে নগরায়ন ও শিল্পায়নসহ নানা কারণে ভূমির ব্যবহার আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এ কারণে ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনা আরও উন্নততর হওয়া প্রয়োজন। এরই ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠ পর্যায়ে দেশের ৬১টি জেলার উপজেলা ও ইউনিয়ন মিলে মোট ৬৩৯টি ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য ৫৯৬ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভূমি অফিস নির্মাণ করা হচ্ছে। পিডব্লিউডির প্রধান হাফিজুর রহমান মুন্সী বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণে আমরা অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। এখানে তদারকীর দিকটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অফিসগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তদারকি না থাকলে কাজের মান খারাপ হতে পারে। ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো মানসম্মত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। দীর্ঘকাল ধরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো টিনের ঘরে চলে আসছে। সেখানে জমির কাগজপত্র সংরক্ষণ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সরকারের সিদ্ধান্তে এখন পাকা অবকাঠামো করা হচ্ছে। এই প্রকল্পটি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আমি নিজে ভূমি অফিস নির্মাণ তদারকি করতে যাচ্ছি। কোথাও কোন অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর। এই সময়ের মধ্যে তিন হাজার এক শ’টি উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের কাজ শেষ হবে। এই তিন হাজার এক শ’টি উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ হলে দেশে আর কোন জরাজীর্ণ ভূমি অফিস থাকবে না। মূল্যবান দলিল-দস্তাবেজ সঠিকভাবে সংরক্ষণসহ বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটবে ভূমি প্রশাসন ব্যবস্থায়। মাঠপর্যায়ের ভূমি উন্নয়ন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে ২ হাজার ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। ১৯৮৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প এত দিন ছোট ছোট আকারে বাস্তবায়িত হলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পটি এক যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী প্রকল্পটি নির্দিষ্ট মেয়াদেই শেষ হবে। প্রতিটি ভবন দোতলার ফাউন্ডেশন দিয়ে এক তলাবিশিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আয়তন হবে ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ বর্গফুট।
×