ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দৈনিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে ট্যানারি মালিকদের

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৯ জুলাই ২০১৬

দৈনিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে ট্যানারি মালিকদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হাজারীবাগ থেকে না সরানো পর্যন্ত ১৫৪ ট্যানারিকে পরিবেশের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে সরকারী কোষাগারে জমা দিতে বলেছে আপীল বিভাগ। অনুদান হিসেবে এই অর্থের অর্ধেক সরকারকে বাংলাদেশ লিভার ফাউন্ডেশনে জমা দিতে বলা হয়েছে। হাইকোর্ট প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের নির্দেশ দিলেও আপীল বিভাগ তা কমিয়ে ১০ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ফলে ১৫৪ ট্যানারি মালিককে জরিমানা গুনতে হবে। জরিমানার এ অর্থের ৫০ ভাগ লিভার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশকে প্রদান করতে বলেছেন আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগের চার সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আপীলের পক্ষে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং রিটকারী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন। এর আগে গত ১৬ জুন হাইকোর্ট রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা ১৫৪ ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল করেন বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস এ্যান্ড ফুটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান। ২০০১ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ২০০৯ সালের ২৩ জুন আরেক আদেশে ট্যানারি সরানোর জন্য ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে সরকার পক্ষের আবেদনে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানোর পরও ট্যানারি স্থানান্তরে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি। পরে রিটকারী সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের মালিককে তলব করেন। তলবের মধ্যেই একটি জাতীয় দৈনিক ট্যানারি শিল্প নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ প্রতিবেদন দুটি সংযুক্ত করে গত এপ্রিল মাসে হাইকোর্টে আরও একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে গত ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের বর্তমান চিত্র প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে শিল্প সচিবকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী শিল্প সচিবের পক্ষে ১৬ জুন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ১৫৫টি ট্যানারি প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা তুলে ধরা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধুমাত্র রিলায়েন্স ট্যানারি লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানটি সাভারে তাদের নামে বরাদ্দকৃত প্লটে ট্যানারি কারাখানা চালু করেছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পরই হাইকোর্ট ওই ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ট্যানারি মালিকদের নির্দেশ দেন।
×