ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অপারেশন আইরিন

শাহজালাল বিমান চট্টগ্রাম সমুদ্র ও বেনাপোল স্থলবন্দরে ডগ স্কোয়াডের তল্লাশি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৯ জুলাই ২০১৬

শাহজালাল বিমান চট্টগ্রাম সমুদ্র ও বেনাপোল স্থলবন্দরে ডগ স্কোয়াডের তল্লাশি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনে ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজমের পাশাপাশি বন্দরভিত্তিক জঙ্গী তৎপরতা প্রতিরোধে অভিযান চালাচ্ছে অপারেশন আইরিন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর এবার চট্টগ্রাম বন্দরে দু’দিনব্যাপী এ অভিযান শুরু হয়। সোমবার সকাল দশটায় চট্টগ্রাম বন্দরে শুরু হয় ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি অভিযান। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর পরিচালিত এ তল্লাশিতে সহযোগিতা করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সরকারী সংস্থা। এদিকে বেনাপোল বন্দরে উপর্যুপরি তৃতীয় দিনেও ধরা পড়েছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান নিজে উপস্থিত থেকে এ অপারেশনের নেতৃত্ব দেন। এ সময় গোটা বন্দরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, অপারেশন আইরিনে বিস্ফোরকদ্রব্যসহ অন্যান্য আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আটকের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এ অভিযানের দরুন বন্দরভিত্তিক জঙ্গী কর্মকা-ের গোপন আস্তানা থাকলেও সেটা নজরে আসবে। কাজেই পণ্য আটকের চেয়ে জঙ্গীদের ভিত কাঁপিয়ে দিতে সহায়ক হচ্ছে এ অভিযান। সেদিক থেকে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য অবৈধভাবে যেন কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক পরিবহন হতে না পারে। বাংলাদেশে এ অভিযান শুরু হয় গত ৮ জুলাই, যা চলমান রয়েছে। প্রধানত দেশের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে পরিচালিত হচ্ছে এ অভিযান। এদিকে স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম থেকে জানান, ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের অধীনে অভিযানে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে ‘রিজিওনাল ইন্টেলিজেন্স লিয়াজোঁ অফিস ফর এশিয়া এ্যান্ড প্যাসিফিক’ (রাইলো এপি)। এ অঞ্চলের ৩৩ দেশেই চলছে বিশেষ এ অভিযান। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তল্লাশি চলে তিন দিন আগে। তন্ন তন্ন করে পর্যবেক্ষণ করা হয় বিমানবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেয়ার প্রক্রিয়া ও কার্গো হাউস। তবে সেখানে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দরে তল্লাশি শেষ হয়ে গেলেও সদা সতর্ক রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিমান ও কাস্টমসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে। সন্দেহ হলেই সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের দেহ তল্লাশি চলছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ‘অপারেশন আইরিন’-এর আওতায় অভিযান শুরু হয় সোমবার সকালে। বিজিবি সদস্যরা ডগ স্কোয়াড দিয়ে বন্দর জেটিতে তল্লাশি শুরু করে তা অব্যাহত রেখেছেন। তবে বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদক বা উল্লেখ করার মতো ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। সমুদ্রপথ, আকাশপথ বা স্থলপথে কোন ধরনের অস্ত্র-গোলাবারুদ, বিস্ফোরক বা মাদকদ্রব্য আসা ঠেকাতে ৩৩ দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে এ অভিযান। এ ধরনের কোন পণ্য যেন দুষ্কৃতকারীরা আমদানি কিংবা খালাস করতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে কাস্টমস, বন্দর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। অভিযান শেষ হয়ে গেলেও এ সতর্কাবস্থা বলবৎ থাকবে বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশী অভিযানে গ্রেফতার ১১৯ ॥ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা পরিচালিত অভিযানে প্রায় ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানা এ অভিযান পরিচালনা করে। এ সংক্রান্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০ মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশী অভিযানে মোট ১১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিএমপি সূত্রে জানা যায়, উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছেÑ নয় হাজার ৫৩৮ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২০ লিটার মদ ও সাড়ে চার কেজি গাঁজা। এছাড়াও পুলিশ একজন ভিকটিম, একটি মোটরসাইকেল, একটি মোবাইল ফোন, নগদ চার হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করে। ২৪ ঘণ্টার অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ১১৯ আসামিকে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
×