স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক রোকন উদ্দিন ও তার পরিবারের চার সদস্য নিখোঁজ। ওই চিকিৎসক সপরিবারে তুরস্ক চলে যান। এরপর থেকেই তাদের আর হদিস নেই। পুলিশের সন্দেহ ওই চিকিৎসকের পরিবার জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে। পরিবারটির নিখোঁজ হওয়ার কারণ জানতে এবং জঙ্গীবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিনা, তা জানতে কূটনৈতিকভাবেও যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
গত রবিবার রাতে রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম থানাটিতে এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সাধারণ ডায়েরিতে জানানো হয়, মালিবাগ মাটির মসজিদের পাশে ৪১১/বি নম্বর সাততলা বাড়ির মালিক ডাঃ রোকন উদ্দিনের স্ত্রী নাইমা আহমেদ ও তার ছোট বোন ডাঃ হালিমা আহমেদ। বাবা প্রখ্যাত হোমিও চিকিৎসক আলী আহমেদ। পৈত্রিক সূত্রে দুই বোন বাড়ির মালিক।
বাড়িতে ১৪টি ফ্ল্যাট আছে। এর মধ্যে তৃতীয় তলার ডান পাশের ফ্ল্যাটে সপরিবারে থাকতেন ডাঃ রোকন উদ্দিন। তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ছিলেন। তার বড় মেয়ে নাদিয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী। তার স্বামী শিশিরও ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী।
ডাঃ হালিমা আহমেদ জানান, গত বছর রোজার সময়ে গোপনে একদিন তার ছোট বোন তাকে জানায় যে, তারা সপরিবারে বিদেশ যাচ্ছে। ওই ঘটনার ২-৩ দিন পর একদিন সন্ধ্যায় তাকে জানায় যে, ওই দিন রাত দুটোয় তাদের বিদেশ যাওয়ার ফ্লাইট ছিল। প্রথমে তারা মালয়েশিয়া যাবে। এরপর সেখান থেকে তুরস্কের উদ্দেশে রওনা দেবে। বোনের স্বামী ডাঃ রোকন উদ্দিন সেখানে একটি হাসপাতালে চাকরি পেয়েছেন বলেও জানায়। এর আগে ডাঃ রোকন উদ্দিন ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।
তিনি আরও জানান, ওই দিন চলে যাওয়ার পর আর যোগাযোগ হয়নি। ডাঃ রোকন উদ্দিনের বড়ভাই আফাজ উদ্দিনের ছেলেমেয়েরা এখন সাতটি ফ্ল্যাট দেখাশোনা করছে। চলতি বছরের রোজার সময় হঠাৎ একদিন একটি বিদেশী নম্বর থেকে তার মোবাইল ফোনে কল আসে। মোবাইলে নাইমা জানায়, তারা তুরস্কে ভাল আছে। এর বেশি আর কোন কথা হয়নি।
রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম নিখোঁজ ওই চিকিৎসকের ভাই আফাজ উদ্দিনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে জানান, গত বছরের জুনে ডাঃ রোকন উদ্দিন ও তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক মেয়ের জামাতা তুরস্ক যায়। এরপর থেকে তারা দেশে ফেরেনি। ধারণা করা হচ্ছে, সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি রহস্যজনক। এর সঙ্গে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার বিষয়াদি থাকতে পারে। গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তের পাশাপাশি বিষয়টি সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ চলছে।