ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রানা প্লাজা হত্যা মামলায় ৪১ আসামির বিচার শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৯ জুলাই ২০১৬

রানা প্লাজা হত্যা মামলায় ৪১ আসামির বিচার শুরু

কোর্ট রিপোর্টার ॥ রানা প্লাজার ভবন ধস হত্যা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছে। সোমবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর এ আদেশ দেন। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খোন্দকার আব্দুল মান্নান বলেছেন, ৪১ আসামির মধ্যে আসামি মোঃ শাহ আলম ওরফে মিঠু, মোঃ আবুল হাসান ও সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনির বিরুদ্ধে আসামি সোহেল রানাকে পালাতে সহযোগিতা করায় দ-বিধির ২১২ ধারায় এবং বাকি ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে। আসামিরা অভিযোগ অস্বীকার করায় আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে। চার্জ গঠন নিয়ে শুনানির সময় বিচারক কুদ্দুস জামান বলেন, রানা প্লাজার মামলা আর ১০টা হত্যা মামলার মতো নয়। প্রত্যক্ষভাবে কেউ কাউকে হত্যা করেনি। কতগুলো মানুষের বাড়াবাড়ির কারণে সেদিন এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন। চার্জ গঠনের শুনানির পর্যায়ে আসামিপক্ষের কোন দলিলপত্র দেখার সুযোগ আদালতের নেই। চার্জশীটে প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাই কারও অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগও নেই। শুনানির আগে সোহেল রানাসহ কারাগারে থাকা ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা ২৩ আসামিও আদালতে হাজির হন। অপর ১২ আসামি পলাতক আছেন। একই ঘটনায় ইমারত নির্মাণ আইনের একটি মামলায় গত ১৪ জুন ঢাকার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন। হত্যা মামলায় চার্জ গঠনকৃত আসামিরা হলেনÑ ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, সাভার পৌর মেয়র রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইতার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মোঃ মধু, অনিল দাস, মোঃ শাহ আলম ওরফে মিঠু, মোঃ আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কমকর্তা উত্তম কুমার রায়, সোহেল রানার মা মর্জিনা বেগম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মোঃ আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মোঃ জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মোঃ ইউসুফ আলী, পরিদর্শক প্রকৌশল মোঃ মহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মোঃ আওলাদ হোসেন, ইতার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মোঃ আতাউর রহমান, মোঃ আব্দুস সালাম, বিদ্যুত মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্টাক্টর, মোঃ আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মোঃ আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মোঃ ইউসুফ আলী ও মাহবুল আলম। সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১ জুন ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাজধানীর অদূরে রানা প্লাজা ধসে পড়লে ১ হাজার ১১৭ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৯ জন মারা যান। সে হিসেবে নিহত হন ১ হাজার ১৩৬ জন। এ ঘটনায় আহত হন ১ হাজার ১৭০ জন। মৃত উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৮৪৪ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা রেখে ২৯১ জনের অশনাক্তকৃত লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। গুরুতর আহত হয়ে ৭৮ জন পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
×