ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘রোনাল্ডোকেই সেরা মানছেন এন জে টেন’

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৮ জুলাই ২০১৬

‘রোনাল্ডোকেই সেরা মানছেন এন জে টেন’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। এ বছর বিশ্বনন্দিত এ তারকা জিতে নিয়েছেন দুই দুইটি বড় শিরোপা। প্রথমে ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্রফি। আর কিছুদিন আগে জিতেছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কাক্সিক্ষত ট্রফি। নিজ দেশ পর্তুগালের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। দুর্দান্ত এ সাফল্যের পর সি আর সেভেনকে নিয়ে চলছে প্রশংসাস্রোত। শত্রু-মিত্র সবাই পর্তুগীজ অধিনায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তবে এবার এমন একজন তার প্রশংসা করেছেন সেটা অনেকের কাছেই বিস্ময় লেগেছে। এবার রোনাল্ডোর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বার্সিলোনার ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। সাধারণত দেখা যায়, নেইমার তার ক্লাব সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজকে প্রশংসায় ভাসান। কিন্তু ইউরো জয়ের পর নেইমার জানিয়েছেন, এবার ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়ের ক্ষেত্রে মেসি-সুয়ারেজ নন, এগিয়ে আছেন রোনাল্ডোই। রবিবার এক সাক্ষাতকারে এমনই জানিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী বার্সা তারকা নেইমার। ইউরোর ফাইনালের পরপরই টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বল ও গোল্ডেন বুটজয়ী ফরাসী তারকা এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান জানিয়ে দিয়েছেন, এবার ব্যালন ডি’অর খেতাব উঠবে রোনাল্ডোর হাতে। ফ্রান্সের আরেক তারকা পল পোগবাও বলেছেন, সি আর সেভেনই জিতবেন ফিফা সেরার খেতাব। নেইমার সরাসরি না বললেও ইঙ্গিত দিয়েছেন রোনাল্ডোই বাজিমাত করবে গৌরবময় এ পুরস্কার। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতে ব্যালন ডি’অরের জন্য নিজের দাবিটা জোরালো করে রেখেছিলেন সি আর সেভেন। কিন্তু ইউরো জয়ের পর প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন তিনি। রোনাল্ডোর পথটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, মেসি কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের কারণে। বাস্তবতা বুঝতে পারছেন নেইমারও। তাইতো এবার আর সতীর্থ মেসি-সুয়ারেজ নন, এগিয়ে রাখছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের রোনাল্ডোকেই। নেইমার বলেন, ব্যালন ডি’অরে শিরোপা জেতা বড় ভূমিকা রাখে। রোনাল্ডো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোও জিতেছে। আমার মনে হয় সেই এখন সবচেয়ে ভাল অবস্থায় আছে। এর চেয়ে খোলাসাভাবে আর কি বলা যায়। মানে, সি আর সেভেনের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিচ্ছেন নেইমার। আগে কখনও পর্তুগীজ তারকাকে সেভাবে প্রশংসা করেননি নেইমার। এবার সেটাও হয়ে গেছে। বলেন, রোনাল্ডো একজন গ্রেট খেলোয়াড়। এটা মানতে আমার কোন আপত্তি নেই। গত মৌসুমে বার্সিলোনার হয়ে ত্রিমুকুট জেতার পর মেসি রেকর্ড সর্বোচ্চ পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন। এবার জিতে রোনাল্ডোর সামনে ব্যবধানটা ৫-৪ করে ফেলার হাতছানি। তবে চূড়ান্ত ফলাফলটা জানার জন্য আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রোনাল্ডোই যে এবার ব্যালন ডি’অর জিতছেন সেটা মনে করছেন জুভেন্টাসের ফরাসী তারকা পল পোগবাও। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে এবারের ব্যালন ডি’অর রোনাল্ডোর হাতেই উঠবে। তার হাতেই এটা মানাবে, কারণ সে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ আর ইউরো দুটি শিরোপাই জিতেছে। মেসি-রোনাল্ডোর পাশাপাশি নিজের দেশের তারকা স্ট্রাইকার গ্রিজম্যানের প্রসঙ্গ টেনে পোগবা বলেন, আপনার হাতে মেসি আছে, রোনাল্ডো আছে। সত্যি বলছি তাদের দু’জনকেই আমি খুব পছন্দ করি। তবে, ব্যালন ডি’অর জিততে তাদের সঙ্গে এবারে নাম আসতে পারে গ্রিজম্যানেরও। এদিকে রোনাল্ডোকে অনেকেই অহঙ্কারী বলে থাকেন। তবে এমন মনে করেন না তার জাতীয় দলের সতীর্থ রিকার্ডো কারেসমা। তার মতে, রিয়ার মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ডকে বরাবরই ভুল বোঝা হয়েছে। ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রায় তিন বছর কারেসমা-রোনাল্ডো এক সঙ্গে স্বদেশের ক্লাব স্পোটিংয়ে খেলেন। এরপর ২০০৩ সালে রোনাল্ডো যোগ দেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে আর কারেসমা যোগ দেন বার্সিলোনায়। মাঠের আচরণ ও কখনও কখনও স্বার্থপর মনোভাবের কারণে মাঝে মধ্যেই সমালোচিত হন রোনাল্ডো। কিন্তু তিনবারের বর্ষসেরা ফুটবলারকে নিয়ে এই সমালোচনা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বেসিকটাসের ফরোয়ার্ড কারেসমা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোনাল্ডো এমন একজন মানুষ যে খেলতে পছন্দ করে। মানুষ যেমন রটিয়েছে, আসলে সে তেমন অহঙ্কারী নয়। ইউরোতে দুর্দান্ত খেলা কারেসমা আরও বলেন, সে অসাধারণ এক অধিনায়ক। যে সব সময় আমাদের সতীর্থদের সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকে। তিনি আরও বলেন, স্পোটিংয়ে যখন আমরা খেলা শুরু করি, তখন থেকেই তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। কারণ ছোট থাকার সময়েই সে তার শক্তি দেখিয়েছে। ক্রিশ্চিয়ানো অসাধারণ একজন মানুষ।
×