ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘পিস স্কুল’ হঠাৎ হয়ে গেল ‘লিজেন্ড একাডেমি’

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৮ জুলাই ২০১৬

‘পিস স্কুল’ হঠাৎ  হয়ে গেল  ‘লিজেন্ড  একাডেমি’

‍স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বিতর্কিত ডাঃ জাকির নায়েকের ‘পিস টিভি’র সম্প্রচার বন্ধের পর এবার রাজশাহীতে অবস্থিত জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ‘পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজে’র সাইনবোর্ড রাতারাতি উধাও হয়ে গেছে। পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজের নাম রাতারাতি বদলে নতুন করে ঝোলানো হয়েছে লিজেন্ড একাডেমি নামের ব্যানার। শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র, ব্যাগ, স্কুল ড্রেস ও সড়কের পাশে দেয়া সাইনবোর্ড এখনও পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজ থাকলেও রাতারাতি শুধু বদলে ফেলা হয়েছে সাইনবোর্ড। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের বহন করা ভ্যান গাড়িতে লেখা নামও মুছে দেয়া হয়েছে। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। বিতর্কিত বক্তা জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের পর দেশের পিস স্কুলসমূহের বিষয়ে সরকারের নজরদারির ঘোষণায় এ কা- ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। সরেজমিনে নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় ‘গাজী ভবনে’ গিয়ে দেখা যায় মূল ভবনের পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজের যে বড় সাইনবোর্ডটি ছিল তা নামিয়ে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন জায়গায় তাদের যেসব সাইনবোর্ড ছিল সেগুলো সরানো শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী বহনের ভ্যান থেকেও পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। তবে এখনও স্কুলের লোকেশন বোর্ড ও শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র আগের মতোই রয়েছে। একই ভবনে অবস্থিত গ্যালাক্সি মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের পরিচালক সাজেদুর রহমান খোকন জানান, ওই স্কুলটি পরিচালনা করেন জামায়াতের লোকজন। ইসলামী ব্যাংক রাজশাহী শাখার কর্মকর্তা মোর্সেদ জামান এ স্কুলটির দেখভাল করেন। আর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন আতাউর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা এবং জামায়াতের সঙ্গে জড়িত। রবিবার সকালে নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পিস স্কুলের কোন সাইনবোর্ড নেই। সেখানে সাঁটানো হয়েছে ইংরেজীতে লেখা লিজেন্ড একাডেমির সাইনবোর্ড। ভবন থেকে সাইনবোর্ড সরানো হলেও শিশু শিক্ষার্র্থীদের পরিচয়পত্র, ব্যাগ ও ড্রেসে পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজের ব্যাচ দেখা গেছে। হঠাৎ করে সাইনবোর্ড উঠে যাওয়ায় অনেক অভিভাবক ভাবনায় পড়ে গেছেন। তাদের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, সকালে সন্তানকে রাখতে এসে সাইনবোর্ড না থাকার বিষয়টি তারা লক্ষ্য করেছেন। এখন স্কুলটি আদৌ থাকবে কি না তা নিয়েও ভাবনায় পড়েছেন অভিভাবকরা। অভিভাবকদের অনেকেই জানিয়েছেন, নাম মুছে ফেলার বিষয়টি জানার পর তারা পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। তবে তারা কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা ও রাজনৈতিক আদর্শে পরিচালিত হচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজ নজরদারিতে আনা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পিস স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমানকে পাওয়া যায়নি। সিলেটে পিস মোবাইল বিক্রি বন্ধ ॥ স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস থেকে জানান, সিলেটে ড. জাকির নায়েকের পিস মোবাইল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। তার বক্তব্য এবং বিভিন্ন ধরনের এ্যাপ্সসমৃদ্ধ এ মোবাইলটি বাজারজাতের শুরুতে বেশ পরিচিতি লাভ করে। অন্য মোবাইলের চেয়ে পিস মোবাইলের দাম বেশ চড়া ছিল। কিন্তু ধর্মীয় আবেগপ্রবণ ক্রেতারা দামের দিকে তাকাননি। ইসলামী বিনোদন আর পুণ্যের আশায় মোবাইল কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। ইসলাম ধর্মের অনেক জটিল বিষয় সহজেই বুঝতে পারবেন এমন প্রত্যাশাও ছিল ক্রেতাদের।
×