স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে জঙ্গী সন্দেহে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের চার শিক্ষার্থীকে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। রবিবার বিকেলে পৌর এলাকার উত্তর কামারপাড়ার তৌহিদ ছাত্রাবাস থেকে জিহাদী বইসহ তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় এলাকার সৈয়দ আলীর পুত্র আজিজার রহমান আজিজ (২০)। সে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের অনার্স গণিত বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। ফুলবাড়ী হাসপাতাল এলাকার হাছেন আলীর পুত্র সাহজামাল (২৫) অনার্স হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। নাগেশ্বরী উপজেলার চড়ুয়াপাড়া গ্রামের আনছার আলীর পুত্র নূর আলম (২০) অনার্স বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের আব্দুল খালেকের পুত্র রিপন মিয়া (২৬) অনার্স পদার্থ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। কুড়িগ্রাম থানার ইনচার্জ জমির উদ্দিন চার জঙ্গীকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাদের জঙ্গী কানেকশন এবং কোন প্রকার হামলার পরিকল্পনা ছিল কিনা তা জানতে তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান সাগর জানান, কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে রবিবার দুপুরে বাংলা বিভাগের ছাত্র নূর আলমকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করি। তার মোবাইলে শিবিরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট দেখতে পাই। এছাড়া তার ফেসবুক আইডিতে আইএস (ইসলামিক স্টেট), জেএমবি ও শিবিরের বরাতে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ, মন্তব্য এবং বিভিন্ন তরুণ/যুবককে এ পথে আসার আমন্ত্রণ জানানোর প্রমাণ মেলে। তার দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, তারা নাশকতামূলক কর্মকা-ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাকে সঙ্গে নিয়ে কলেজের পেছনে উত্তর কামারপাড়ার তৌহিদ ছাত্রাবাসে গিয়ে বৈঠক করা অবস্থায় তার অপর তিন সঙ্গীকে আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। জঙ্গী সদস্য জানতে পেরে উপস্থিত লোকজনের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়। পরে খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এ ছাত্রাবাস থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদী বই, জামায়াত নেতাদের লেখা বিভিন্ন বই এবং শিবিরের চাঁদা আদায় ও আয়ের রসিদ উদ্ধার করা হয়। নিজামী ও গোলাম আযমের বিভিন্ন বইয়ের মধ্যে গোলাম আযমের লেখা ‘আসুন মনটাকে কাজে লাগাই’ রয়েছে। একই সঙ্গে জঙ্গী সাহজামালের পকেট থেকে হাতে লেখা একটি চিঠি (চিরকুট) উদ্ধার করা হয়। চিরকুটে সে জিহাদ করতে শহীদ হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
পুলিশের হাতে আটক নূর আলম জানান, তার সঙ্গীরা একই এলাকার আহাদ আলীর তৌহিদ ছাত্রাবাস, মেঘলা ছাত্রবাস ও সৌমিক ছাত্রাবাসে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছে। পুলিশের অভিযানের ভয়ে তার ৬ সঙ্গী পালিয়ে যায়। এরা সবাই জেএমবির সঙ্গে জড়িত। পলাতকরা হলো কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের মোর্শেদ ও জিহাদ, পদার্থ বিভাগের রুবেল ও শামসুজ্জামান, রসায়ন বিভাগের হাসান ও সামিউল।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: