ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গণভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ;###;তরুণদের কারা বিভ্রান্ত করছে, অস্ত্র-অর্থ দিচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে ;###;বেহেশতের হুর-পরী পাওয়ার জন্য তরুণদের যারা বিভ্রান্ত করছে, তাদের ক্ষমা নেই ;###;যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসুনÑ স

গণজাগরণেই নির্মূল হবে ॥ জঙ্গী দমনে আজ জেগে উঠেছে মানুষ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৮ জুলাই ২০১৬

গণজাগরণেই নির্মূল হবে ॥ জঙ্গী দমনে আজ জেগে উঠেছে মানুষ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের সঙ্গে ঐক্য করলে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা যাবে, সেই জনগণের সঙ্গে ইতোমধ্যেই জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। দেশের জনগণই বিপথগামীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করবে। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীÑ তাদের কথা আলাদা। তারা সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়তে চায়। তিনি ধর্মের নামে যারা তরুণদের জঙ্গীবাদে উস্কানি দিচ্ছে, অর্থ-অস্ত্র দিচ্ছে, মদদ দিচ্ছেÑ তাদের খুঁজে বের করতে দেশবাসীসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান। রবিবার বিকেলে গণভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সরকারের অনুসৃত ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, জঙ্গীবাদ এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা নিরলসভাবে সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু গুলশানে হামলার ঘটনা আমাদের কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও ক্ষুণœ হয়েছেÑ এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।’ গুলশানে হামলার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই জঙ্গী হামলার ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। কিছু সময় অপেক্ষা করুন। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলাও যায় না। তবে যে তথ্য আসছেÑ তাজ্জব হয়ে যাওয়ার মতো। তদন্ত শেষে সবকিছু বুঝতে পারবেন সবাই।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে বেশি খোঁচাখুঁচি না করার জন্যও আহ্বান জানান। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মূল চিন্তা-চেতনার উৎস খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে জঙ্গী ও সন্ত্রাসের মদদদাতা, অর্থদাতা, প্রশিক্ষণদাতা, যারা পরামর্শ দিচ্ছে বা অস্ত্র সরবরাহ করছে তাদের খুঁজে করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আতঙ্ক সৃষ্টি করাই ছিল গুলশানে হামলার উদ্দেশ্য। তবে মানুষের জীবন চলমান, জীবন থেমে থাকে না। যারা ধর্মের নামে তরুণদের জঙ্গীবাদে জড়াতে উস্কানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সন্ত্রাসবিরোধী, জঙ্গীবাদবিরোধী। বাংলাদেশের মানুষকে সব সময় এর বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যাদের কোন অভাব নেই, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, তারাই এখন জঙ্গীবাদে জড়াচ্ছে। যেখানে তাদের কোনকিছুই অপূরণীয় থাকে না, সেখানে কেন তারা এটা করছে! তারা এখন বেহেশতের হুর-পরী পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে জঙ্গী কর্মকা- চালাচ্ছে তাদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা খোলে না। যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে তারা কোনদিনই বেহেশতে যেতে পারবে না। তবে কারা এসব তরুণকে মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করছে, পেছন থেকে উস্কানি দিচ্ছে, জঙ্গীবাদে মদদ দিচ্ছেÑ এদের খুঁজে বের করতেই হবে। এই তরুণদের কারা অস্ত্র দিচ্ছে, কারা অর্থ যোগাচ্ছে, তাদের তথ্য সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, সেদিন বেশি দূরে নয়, দেশের সব মানুষ এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে সাম্প্রতিক এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নগুলো ঘুরেফিরেই আসে সম্প্রতি গুলশানে জঙ্গী হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গেই সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এছাড়াও সরকারের একাধিক মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই এ হামলা ॥ আরও হামলা হতে পারেÑ প্রধানমন্ত্রীর এমন সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক জানতে চান এ বিষয়ে সরকারের কাছে কোন তথ্য আছে কিনা? জবাবে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গীবাদকে একটি বৈশ্বিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, একবার যখন ঘটেছে, এরা তো বসে থাকবে না। ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। তবে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ অত্যন্ত কঠোরভাবে দমনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে। তিনি বলেন, হামলার কয়েক দিনের মধ্যে সারাদেশে জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এমন জাগরণ সৃষ্টি পৃথিবীর কোন দেশই করতে পারেনি। মাত্র দুই দিনে আটটি বিভাগের ৬৪ জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে আমি টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছি। সারাদেশের গ্রামপর্যায় পর্যন্ত জঙ্গীবাদবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি দেশের জনগণই বিপথগামীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বমন্দার মধ্যেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগ থেকে ৭ ভাগে উন্নীত করেছি। শুধু ব্যক্তিস্বার্থের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু সততার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছি বলেই আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আমরা যখন সম্মানজনক অবস্থানে এনেছি, বাংলাদেশ যখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে, ঠিক তখনই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই গুলশানে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সব সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চলবে এটা যারা চায়, কিছু পদলেহনকারী ও চাটুকাররা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে চায়, যারা চায়নি ২০১৪ সালের নির্বাচন হোকÑ তারাই নানা কর্মকা- ঘটাচ্ছে। আগে সারাবিশ্বের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারতাম। এটা যাতে না পারি সেজন্যই গুলশানের জঘন্য ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা দেশকে যে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেখানে এ ঘটনা ঘটিয়ে যেন একটা ছেদ এনে দিল। জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে ॥ গুলশানে হামলার পর কিছু রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ একতাবদ্ধ হয়েছে। জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামে গ্রামে কমিটি হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছে। এখন ঈদের নামাজে সনাতম ধর্মের যুবকরা পাহারা দিচ্ছে। এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য অভূতপূর্ব অর্জন। বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীÑ তারা ছাড়া দেশের জনগণ জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়িয়েছে। কিছু পক্ষ আছে তারা সর্প হয়ে দর্শন করে ওঝা হয়ে ঝাড়তে চায়। জঙ্গী হামলা নতুন নয় ॥ অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানের জঙ্গী হামলা বাংলাদেশে নতুন নয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার শিকার আমি নিজেই হয়েছি। ’৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকেই আমার ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে। গাড়ি চালিয়ে ফ্রান্সে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা আমাদের দেশেও হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে আমাদের মিছিলের ওপর গাড়ি চালিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এরশাদ সরকারের আমলেও ট্রাক তুলে দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ‘মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী’, ‘বৃষ্টির মতো গুলি কর’Ñ প্রকাশ্য এ স্লোগান দিয়ে কারা আওয়ামী লীগের মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ করে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল, সে কথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। নির্বাচন প্রতিহত এবং অবরোধের নামে প্রকাশ্য পেট্রোলবোমা মেরে পুড়িয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গীর্জা সবখানে হামলা চালানো হয়েছে, কোরান শরিফ পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা। আমরা সবকিছু মোকাবেলা করেই দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির সোপানে নিয়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনই আবারও গুলশানে হামলার ঘটনা হলো। তবে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ মোকাবেলা করতে যা যা করার সরকার থেকে তার সবই করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানে হামলার পর বিশ্বের অনেক দেশই আমাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, অনেক উন্নত দেশও জঙ্গীবাদের হামলায় আক্রান্ত হচ্ছে। সেজন্য এ সমস্যা মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশকেই একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছি। কারণ এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারা জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করছে, অস্ত্রের ডিলার কারা, কারা মদদ দিচ্ছেÑ সবকিছুই সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে। ভারতীয় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গুলশানে হামলার পর আমরা সম্মান হারাইনি। ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আমার কষ্ট লেগেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে যখন সবদিক থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছিÑ তখনই এ হামলা চালিয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার চেষ্টা করা হলো। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সারাদেশেই প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করছি। দেশের কোন মানুষই জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ দেখতে চায় না। এর বিরুদ্ধে সারাবিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। শুধু নাড়া দিচ্ছে না মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী, যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের বিবেককে। তাই কারা এসব ঘটাচ্ছে, কাদের সন্তানরা বিপথে পা দিচ্ছে, তা জনগণের সচেতনতার মাধ্যমেই খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের সকল মানুষকে একত্রিত ও তাদের চেতনাকে জাগ্রত করতে পেরেছি, যা বিশ্বের অনেক দেশই পারেনি। তবে দুঃখ লাগে একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে কিভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। জঙ্গী বানায়। তদন্ত প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু ঘটলে কী এত দ্রুত সবকিছু তদন্ত শেষ করা যায়। আমি নিজেই তো ভুক্তভোগী। বাবা-মা, ভাই, পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার পাওয়ার জন্য আমাকে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখনকার মতো তখন তো অনেককে এজন্য এত সোচ্চার হতে দেখিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে একে সব হত্যাকা-ের বিচার করছি। আলোচনা ও ঐক্য হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হবেÑ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) সঙ্গে আলোচনা করলে সব সন্ত্রাস-জঙ্গী হামলা বন্ধ হবে, না করলে তারা এসব কর্মকা- চালিয়েই যাবেনÑ এটাই কী তারা বলতে চাচ্ছেন? অনেক শীর্ষ জঙ্গীদের বিচার বছরের পর বছর আটকে থাকা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ফাঁসির দ-প্রাপ্ত শীর্ষ জঙ্গীর বিচার ঝুলে আছে, এটা সত্যিই দুঃখজনক। এদের বিচার হলে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হতো। এখন যারা এসব কর্মকা-ে জড়িত তারা বুঝতে পারতÑ এসব করলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি তাদেরও হতে হবে।
×