ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১০ ডাক্তার কর্মকর্তার পদত্যাগ

অচল হওয়ার পথে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৮ জুলাই ২০১৬

অচল হওয়ার পথে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ১৭ জুলাই ॥ নানা জটিলতার কারণে শতবর্ষী রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। পরিচালক পদে জ্যৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে নিয়োগ প্রদান, গণহারে পদত্যাগ করায় হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। উত্তর চট্টগ্রামের স্বনামধন্য নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি এখন হুমকির মুখে। প্রতিদিন শত শত রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। ১২৫ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় জনদুর্ভোগ এখন চরম পর্যায়ে। প্রাচীন এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। পুরুষ ও মহিলা ওয়াডের্র সিট এখন খালি পড়ে আছে। অপারেশন থিয়েটার কোন কার্যক্রম নেই। গাইনি বিভাগে রোগী গেলেও চিকিৎসক না থাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালে। জানা গেছে, শতবর্ষী চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডাঃ মং স্টিফেন চৌধুরী গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পান হাসপাতালের জ্যৈষ্ঠ চিকিৎসক ডাঃ রনজিত চাকমা। দায়িত্ব পাওয়ার পর স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও নতুন পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি ডেপুটি পরিচালক ডাঃ প্রবীর খিয়াংকে জ্যৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়ায় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ রনজিত চাকমা ডাঃ উশানু, ডাঃ নিপাসহ অপারেশন বিভাগের ১০ কর্মচারী পদত্যাগ করেন। পদত্যাগে চিকিৎসক ও কর্মচারী সঙ্কটে ভুগছে হাসপাতালটি। জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের সোসিয়াল হেলথ এ্যান্ড এডুকেশন প্রকল্পের আওতায় চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলছে। গত ১ জুলাই হঠাৎ ডাক্তার ডেভিট খানকে নিয়োগ দিয়ে পরিচালকের শূন্যপদ পূরণ করা হয়। কিন্তু ডেপুটি পরিচালক পদে জুনিয়র ডাক্তার নিয়োগ দেয়াকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের সহ-সভাপতি বাপ্পী সমাদ্দার বলেন সাংবিধানিক পদ হিসেবে নন্ খ্রীস্টানদের হাতে প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেয়া যায় না। দীর্ঘদিন ডাঃ রনজিত ডেপুটি ডাইরেক্টর এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও তিনি লিখিতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন না। অসন্তোষজনিত কারণে হাসপাতাল অচলবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, ডাক্তার রনজিতকে ডেপুটি ডাইরেক্টরের চেয়ে সম্মানী পদে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা হবে। হাসপাতালের সাবেক পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ রনজিত চাকমা জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর এ হাসপাতালে নিবিড়ভাবে রোগীদের সেবা দিয়েছি। জ্যৈষ্ঠতা লঙ্ঘন ও সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে হাসপাতালের নতুন পরিচালক দায়িত্ব পাওয়ায় চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী পদত্যাগ করেছে। চিকিৎসক সঙ্কটে চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। পরিচালক পদে সদ্য যোগদানকারী ডাঃ ডেভিট খান বলেন, তারা পদত্যাগ করলেও ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ বিষয়টি দেখছে।
×