ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙ্গে নতুন ১০ তলা ভবন তৈরি হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ১৭ জুলাই ২০১৬

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙ্গে নতুন ১০ তলা ভবন তৈরি হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বদলে যাচ্ছে ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। দীর্ঘদিনের পুরনো ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। আজ রবিবার থেকে এ ভাঙ্গা শুরু হবে। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। বহুতল ও দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত দলীয় কার্যালয় নির্মাণের স্বার্থেই ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে। পুরনো এ বিল্ডিং ভেঙ্গে নতুন দশ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ শনিবার রাতে জনকণ্ঠকে এ তথ্য জানান। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় গড়ে তোলা হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বহুতল ভবন। দশ তলা এ ভবনে থাকবে ৬-৭ তলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়। থাকবে কনফারেন্স হল, সেমিনার রুম, ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, ক্যান্টিন ও সাংবাদিক লাউঞ্জ। থাকবে ডরমেটরি। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের জন্য বেশ পরিসরে পৃথক কক্ষ ও সঙ্গে বেলকনি থাকছে। পুরো কার্যালয়টি করা হবে ওয়াইফাই জোন। ইতিমধ্যে কার্যালয়ের নতুন ভবনের থ্রিডি নক্সা অনুমোদন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরনো ভবন ভেঙ্গে দ্রুত নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। ভবনটির নির্মাণের মূল দায়িত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। গত ২৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নক্সা অনুমোদন করেছেন। এটি বর্তমান ঠিকানা ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে নির্মিত হবে। আশরাফ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করার কথাও জানান। বর্তমানে এই কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ ও মহিলা লীগের অফিস। প্রায় ৮ কাঠার ওপর গড়ে ওঠা ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর চারতলা ভবনটি ইতিমধ্যেই ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য আওয়ামী লীগের নামে ছাড়পত্রও দিয়েছে গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়। দলের কোষাধ্যক্ষ আশিকুর রহমান জানান, অনুমোদনের আগে আওয়ামী লীগকে বকেয়া পানি ও বিদ্যুত বিলসহ নিয়মনীতি অনুসরণ করে এক কোটি টাকা দিতে হয়েছে সরকারকে। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আসার আগ পর্যন্ত স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী ৬৬ বছরের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগকে অফিস বদল করতে হয়েছে বার বার। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে আট থেকে নয়বার। পুরান ঢাকার কে এম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর পালাক্রমে নেতৃস্থানীয় নেতাদের বাসায় বসে দল পরিচালনার নীতি-কর্মসূচী গ্রহণ করা হতো। কোন অফিস ছিল না। তবে ১৯৫৩ সাল থেকে ৯ কানকুন বাড়ি লেনে অস্থায়ী একটি অফিস ব্যবহার করা হতো। ১৯৫৬ সালে পুরান ঢাকার ৫৬ সিমসন রোডে দলের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করার পর এর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯১, নবাবপুর রোডে দলের অফিস নেন। এর কিছু দিন পর অস্থায়ীভাবে সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলের গলিতে কিছু দিন বসেন নেতারা। পরে পুরানা পল্টনে দুটি স্থানে দীর্ঘদিন দলের অফিস ছিল।
×