ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুকের রেকর্ড, ইয়াসিরের নজির

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৭ জুলাই ২০১৬

কুকের রেকর্ড, ইয়াসিরের নজির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লর্ডস টেস্ট শুরুর আগে আলোচনায় ছিলেন কেবলই মোহাম্মদ আমির। স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা (পাঁচ বছরের) কাটিয়ে অর্ধযুগ পর সাদা পোশাকে ফিরেছেন পাকিস্তানী পেসার। কিন্তু ‘অধিনায়ক’ হিসেবে সবচেয়ে বেশি বয়সে (৪২ বছর ৪৭ দিন) সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়ে প্রথম দিনের আলো কেড়ে নেন মিসবাহ-উল হক। ক্রিকেট-মক্কায় দ্বিতীয়দিনে আরও এক রেকর্ড গড়লেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক, গ্রেট সুনীল গাভাস্কারকে (৯,৬০৭) টপকে ‘ওপেনার’ হিসেবে সবেচেয়ে বেশি রানের মালিক বনে গেলেন এ্যালিস্টার কুক (৯,৬৩০)। ব্যক্তিগত ৮১ রানের পথে নতুন এ কীর্তি গড়েন বাঁ-হাতি ইংলিশম্যান। একইদিনে ২০ বছর পর লর্ডসে কোন ‘লেগস্পিনার’ হিসেবে ৫ উইকেট নেয়ার অনন্য নজির স্থাপন করেন ইয়াসির শাহ, ক্রিকেট-তীর্থে ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ যেটি করেছিলেন তারই পূর্বসূরি মুশতাক আহমেদ। কুকের অর্জন সত্ত্বেও প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৩৩৯/১০-এর জবাবে দ্বিতীয় দিনেই চাপে স্বাগতিক ইংল্যান্ড (২৫৩/৭)। গত মে মাসে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে কম বয়সে দশ হাজারি ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন কুক (৩১ বছর ১৫৭ দিন)। পেছনে ফেলেছেন ‘ক্রিকেটঈশ্বর’ শচীন টেন্ডুলকরকে (৩১ বছর ৩২৬ দিন)। এবার আরেক ভারতীয় গ্রেটকে টপকে গেলেন আধুনিক ইংল্যান্ডের সফলতম ব্যাটসম্যান। ওপেনার হিসেবে ব্যাট হাতে এতদিন সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক ছিলেন গাভাস্কার। ইতিহাসের অন্যতম স্বীকৃতসেরা সাবেক এই ওপেনার ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে ২০৩ ইনিংসে ৫০.২৯ গড়ে করেন ৯৬০৭ রান। দীর্ঘ ৩০ বছর পর সুনীলকে টপকে রেকর্ডটি নিজের করে নিতে কুক খেলেছেন ১৬ ইনিংস বেশি। দারুণ এ অর্জনের পথে কুকের সেঞ্চুরি ২৬ ও হাফ সেঞ্চুরি ৪৭টি, ক্যারিয়ারে ২৮ সেঞ্চুরির বাকি দুটি তিনি করেছেন ওপেনিংয়ের বাইরে (ক্যারিয়ার রান ১০,২৫৭)। ওপেনার হিসেবে সুনীলের সেঞ্চুরি ৩৩ ও হাফ সেঞ্চুরি ৪২টি। তালিকায় সেরা পাঁচে পরের তিনজন গ্রায়েম স্মিথ (৯,০৩০), ম্যাথু হেইডেন (৮,৬২৫) ও বীরেন্দ্র শেবাগ ( ৮,২০৭)। ১৯৯৬ সালে কোন লেগস্পিনার হিসেবে লর্ডসে সর্বশেষ ইনিংসে ৫ বা তাতোধিক উইকেট শিকারের নজির ছিল পাকিস্তানেরই মুশতাক আহমেদের (৫/৫৭)। দুই দশক পর পূর্বসূরি গ্রেটের পাশে বসলেন ইয়াসির, নাম লেখালেন গর্বের অনার্স বোর্ডে। এমন কি উইকেটও নিলেন একটি বেশি। পেসার-স্পিনার মিলিয়ে মাত্র চতুর্থ পাকিস্তানী বোলার হিসেবে লর্ডসে পাঁচ শিকারের কৃতিত্ব দেখালেন তিনি। অপর দু’জন হলেন খান মুহম্মদ (৫/৬১, ১৯৫৪) ও ওয়াকার ইউনুস (৫/৯২, ১৯৯২)। ২০১৪ সালে অভিষিক্ত ইয়াসিরের এটি মাত্র ১৩তম টেস্ট, তাতেই ঝুলিতে ৮২ উইকেট (১৩ টেস্টে বেশি উইকেট নেয়ার রেকর্ড এটিই)! লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংস এবং পরের তিন টেস্ট মিলিয়ে আর ১৮টি উইকেট তাকে এনে দিতে পারে কম ম্যাচে ১০০ শিকারের বিশ্বরেকর্ড (অভিষেক থেকে)। ১৬ টেস্টে শত শিকারের রেকর্ডটা সাবেক ইংল্যান্ড কিংবদন্তি জর্জ লোম্যানের। ২৪ ইনিংসে এরই মধ্যে পঞ্চমবারের মতো ৫টি করে উইকেট নিয়েছেন ইয়াসির। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন কখনই স্পিনবান্ধব নয়। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট পেসার ক্রিস ওকসের (৬/৭০)। অথচ সেখানেই ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুললেন ইয়াসির। শেষ পর্যন্ত ইনিংসে তার বোলিং ফিগার ২৯-৬-৭২-৬!
×