ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এইচপি ক্যাম্প শুরু আজ থেকে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৭ জুলাই ২০১৬

এইচপি ক্যাম্প শুরু আজ থেকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিরাপত্তা বেষ্টনি এমনভাবে ঘিরে রেখেছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে, যেন কোন যুদ্ধ লেগে গেছে! আর এই নিরাপত্তা বেষ্টনি পেরিয়ে মিরপুর স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে হচ্ছে সবাইকে। এতদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাংবাদিকরাই নিরাপত্তা বেষ্টনি অতিক্রম করে স্টেডিয়ামে আসতেন ও যেতেন। দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটারদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে ‘হোম অব ক্রিকেট’। জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার আগে থেকেই জিম করছেন। তবে শনিবার থেকেই মূলত ক্রিকেটারে ভরপুর হয়ে উঠেছে স্টেডিয়াম। আজ শুরু হচ্ছে হাইপারফর্মেন্স প্রোগ্রামের (এইচপি) কার্যক্রম। এ কার্যক্রমের আগে শনিবার ছিল রিপোর্টিং। বিকেল পর্যন্ত ২৫ ক্রিকেটারের মধ্যে ২২ ক্রিকেটার রিপোর্টিংও করেছেন। আজ থেকে ব্যাট-বল-ফিল্ডিং ক্যাম্প শুরুও হয়ে যাবে। তবে সেই ক্যাম্পে আপাতত মিলছে না প্রধান কোচ সাইমন হেলটমকে। সিপিএলে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত হেলমট। সিপিএলে দলের খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসছেন না হেলমট। এমনও শোনা যাচ্ছে, গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা শঙ্কা হেলমটের মধ্যেও দেখা দিয়েছে। নাও আসতে পারেন এ কোচ। শেষ পর্যন্ত কি হয়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে হেলমটহীনই এইচপির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ। একই অবস্থা জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও। জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে অবশ্য নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন, এমন নয়। বিসিবি থেকেই হাতুরাসিংহেকে কয়েকদিন পর আসতে বলা হয়েছে। বুধবার শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। প্রাথমিক দলের ৩০ সদস্য সেই ক্যাম্পে থাকবেন। কিন্তু শুরুতে যেহেতু ফিটনেস ক্যাম্পের ওপরই জোর দেয়া হবে, তাই হাতুরাসিংহেকে ছাড়াই শুরু হবে ক্যাম্প। এ নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার, বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেহেতু ২০ তারিখ থেকে আমাদের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হওয়ার কথা ছিল। এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন ট্রেনারের নেতৃত্বেই ক্যাম্প পরিচালিত হবে।’ বুঝাই যাচ্ছে, ট্রেইনার মারিও ভিল্লাভারায়েনের তত্ত্বাবধানেই চলবে ফিটনেস ক্যাম্প। প্রশ্ন উঠে যায়, শুধু কি হাতুরাসিংহে ক্যাম্পের শুরুতে থাকছেন না; নাকি সহকারী ও স্পিন বোলিং কোচ রুয়ান কালপাগে, ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হালসালও থাকছেন না। আকরাম খানের সামনে এমন প্রশ্নও ছোড়া হলো। আকরাম বললেন, ‘কোচরা আসার কথা।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পরিকল্পনা এভাবে করা হয়েছিল। আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পর বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং অনুশীলন হবে।’ আকরামের এ কথাতেই বোঝা যাচ্ছে, শুরুতে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ফিটনেসকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তাতে করে ১০ দিন ফিটনেস ক্যাম্প চলবে। তখন ট্রেইনার ভিল্লাভারায়েন ছাড়া আর কোন বিদেশী কোচকে ক্যাম্পে মিলবে না। ফিটনেস ক্যাম্প শেষে যখন ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং অনুশীলন শুরু হবে, তখন কোচরা যোগ দেবেন। তাহলে হেলমটহীন এইচপির কার্যক্রম চালাবেন কারা? আর কারা, দেশী কোচরা। ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে থাকবেন বিসিবির গেম ডেভলপমেন্ট কমিটির ন্যাশনাল ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন ফাহিম। জাতীয় দলে যেমন ট্রেইনার বিদেশী হলেও তাকে আসতে হচ্ছে। ঠিক তেমনি এইচপিতেও হেলমটের সহকারী, ট্রেইনার কোরে বকিং শুরু থেকেই থাকছেন। সঙ্গে এইচপির কোচিং প্যানেলে যুক্ত করা হয়েছে পাঁচ দেশী কোচকে। বিভিন্ন বিভাগে বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এসব স্থানীয় কোচদের। এইচপিতে পেস বোলিং বিভাগ মিজানুর রহমান বাবুল, ব্যাটিং বিভাগ জাফরুল এহসান, স্পিন বিভাগ ওয়াহিদুল হক গনি, ফিল্ডিং বিভাগ সোহেল ইসলাম, উইকেটকিপার বিভাগ গোলাম মর্তুজা তত্ত্বাবধান করবেন। গত ২২ জুন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ শেষ হয়েছে। এরপর ক্রিকেটাররাও ছুটিতে চলে যান। দীর্ঘ বিরতি পান। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দও উপভোগ করেন। প্রায় একমাসের দীর্ঘ বিরতির পর আবার মাঠে ফিরতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। এরই মধ্যে মাশরাফি বিন মর্তুজা, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, সোহরাওয়ার্দী শুভ, কামরুল ইসলাম রাব্বি মিরপুরে আসেন। ফিটনেস ধরে রাখতে জিম করেন। তবে আনুষ্ঠানিক কোন অনুশীলন ছিল না তা। আজ এইচপির ২৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। বুধবার শুরু হবে জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। ক্রিকেটারদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।
×