ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের টিকেট নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য

কোচ কন্তের মুখে আশার বাণী

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৭ জুলাই ২০১৬

কোচ কন্তের মুখে আশার বাণী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আগেই। বৃহস্পতিবার স্ট্যামফোর্ডব্রিজে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন এ্যান্তনিও কন্তে। চেলসির কোচ হিসেবে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নতুন মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথাই জানালেন ৪৬ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান। ২০১৪-১৫ মৌসুমে চেলসিকে প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা উপহার দিয়েছিলেন জোশে মরিনহো। অথচ পয়েন্ট টেবিলের ১০ নাম্বারে থেকে গত মৌসুম শেষ করে ব্লুজরা। সেই ব্যর্থতার কারণেই পর্তুগীজ কোচকে বরখাস্ত করে কন্তেকে কোচের দায়িত্ব দেয় ইংলিশ ক্লাবটি। আর কঠিন হলেও গত মৌসুমের ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন মৌসুমে আরও ভাল করার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী কন্তে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি খুব ভাল করেই জানি যে বিশ্বের কঠিন লীগ এটা। কেননা এখানে ছয় থেকে সাতটি দল রয়েছে যারা প্রত্যেকেই শিরোপা জয়ের যোগ্যতা রাখে। তাই এমন পরিস্থিতিটা আমাকে খুব রোমাঞ্চিতও করে।’ আর চাপ প্রসঙ্গে কন্তে বলেন, ‘চাপকে আমি কোনদিন মাথায় তুলিনি। জন্মেছি চাপ নিয়েই। চেলসির ফুটবলার বা কোচ প্রত্যেকের সঙ্গে চাপ তো থাকবেই। এত বড় ক্লাব চাইবে প্রতিটি ম্যাচ জিততে। খেতাব জয় ছাড়া চেলসির অন্য কোন লক্ষ্য থাকতেই পারে না। বিশ্বের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লীগে অংশগ্রহণ করার চ্যালেঞ্জ নিতে আমি তৈরি। ব্লুজদের কোচের দায়িত্ব উপভোগ করছি।’ আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার টিকেট নিশ্চিত করাটাও কন্তের মূল লক্ষ্য। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চেলসিকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করুক, এটা চান সদস্য-সমর্থকরা। এবার আমার লক্ষ্য, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপার দৌড়ে থাকা এবং আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের টিকেট নিশ্চিত করা।’ ইউরোতে তার অধীনে পর্তুগাল এবার কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। শেষ আটে শক্তিশালী জার্মানির কাছে হেরে যায় কন্তের দল। তাও আবার পেনাল্টি শূটআউটে। তবে সেই ব্যর্থতা থেকেও শিক্ষা নিয়ে চেলসিতে কাজে লাগাতে চান তিনি। সেজন্য গত সপ্তাহেই স্ট্যামফোর্ডব্রিজে যোগ দেন কন্তে। কোচের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত? সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে কন্তে বলেন, ‘ইতালিতে থাকার সময় আমি প্রায়ই বলতাম, কোচের ভূমিকা দরজির মতো। দলের জন্য সেরা পোশাক তৈরি করাই আমার কর্তব্য।’ আর দল সাজানোর পরিকল্পনা প্রসঙ্গে কন্তের অভিমত, ‘আগে ফুটবলারদের পরখ করি। তারপর সিস্টেম নিয়ে ভাবব। অতীতে এক সিস্টেমে মৌসুম শুরু করার পর তাতে পরিবর্তন এনেছি। কারণ, স্কোয়াডের ফুটবলারদের দক্ষতা অনুযায়ী ফর্মেশন বা কৌশল তৈরি করতে হয়। ৩-৫-২ বা ৪-৪-২, কোন ফর্মেশনই আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে প্রথমে দলের মধ্যে জয়ের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ জেতার জন্য খিদে থাকা অত্যাবশ্যক। অনুশীলন, কৌশল নির্ধারণ এবং ফুটবলারদের শারীরিক ও মানসিক গঠনÑ সবকিছু মিলিয়েই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। ফুটবল আমার প্যাশন। রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ফুটবলারদের পরামর্শ দেয়াটাই আমার স্বভাব। এটা ঠিক না ভুল জানি না। তবে খেলার সঙ্গে খুব সহজে একাত্ম হয়ে যেতে পারি। শুধু ম্যাচে নয়, অনুশীলনেও আমি প্রচ- চিৎকার করি। মনে হয়, আমার এই লড়াকু মেজাজ ছড়িয়ে পড়ুক মাঠে ফুটবলারদের মধ্যে, গ্যালারিতে সমর্থকদের মধ্যেও। জয় ছাড়া অন্য কোন ফল আমার পছন্দ নয়। নিজেকে সবসময় একজন কর্মী হিসেবেই দেখেছি। পরিশ্রম করতে কখনও পিছপা হইনি। আমি মনে করি, কঠোর অনুশীলন ছাড়া সাফল্য পাওয়া অসম্ভব। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রতিনিধিত্ব করা এবং সেখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য পরিশ্রমের বিকল্প অন্য কিছুই হতে পারে না।’ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ক্লদিও রানিয়েরির দল লিচেস্টার সিটি। ক্লাবের শতবছরের ইতিহাসে গত মৌসুমেই চমকে দেন রানিয়েরি। আর সেই রানিয়েরির প্রসঙ্গে কন্তে বলেন, ‘লিচেস্টার সিটির কোচ রানিয়েরিকে ফোন করব। তার কাছ থেকে মূল্যবান পরামর্শ নিতে হবে। তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। লিচেস্টারের মতো দলকে যেভাবে তিনি চ্যাম্পিয়ন করেছেন তারজন্য কোন প্রশংসাই আসলে যথেষ্ট নয়। ইতালির অন্যতম সেরা কোচ মিস্টার রানিয়েরি। আমিও ইংল্যান্ডে তার মতো সফল হতে চাই। ইতালিয়ান হওয়ার জন্য আমি গর্বিত। দেশের ফুটবলকে আরও উপরে তুলে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য। আশাকরি সেটা পারব।’
×