ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী গুদামে ধান বেচতে কৃষক পাত্তা পাচ্ছেন না

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৭ জুলাই ২০১৬

সরকারী গুদামে ধান বেচতে কৃষক পাত্তা পাচ্ছেন না

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ রাস্তায় অপেক্ষমাণ ধানবোঝাই শত শত গাড়ি। এসব ধান ব্যবসায়ী বা ফড়িয়াদের। শনিবার সকাল থেকে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার সরকারী খাদ্যগুদামের সামনের রাস্তায় এমন দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রকৃত কৃষকরা সরকারী খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারছেন না অভিযোগ প্রকাশ হয়ে পড়লে উপজেলা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা লাপাত্তা হয়ে যান। এমনকি তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। ওই গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তালিকাভুক্ত বোরো চাষীদের নামে ব্যবসায়ী বা ফড়িয়াদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করছেন। অভিযোগ রয়েছে কোন কৃষক খাদ্যগুদামে এসে ধান দিতে পারেননি। বারবার কৃষকদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। এমন এক কৃষক উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের রমজান আলী। তিনি জানান, তালিকায় তার নাম রয়েছে। দুই দফায় এসে তিনি ফিরে গেছেন। খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন শনিবার তাকে ধান নিয়ে আসতে বলেন। সে মাফিক বস্তাপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া হিসেবে দেড় মেট্রিক টন ধান ট্রলি করে খাদ্যগুদামে সকালে নিয়ে আসেন। এসে দেখেন ধানের বস্তাবোঝাই শত শত ট্রলি সারিবদ্ধভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তারা কেউ প্রকৃত কৃষক নয়। ব্যবসায়ী বা ফড়িয়া। সরেজমিন এমন এক ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ার দেখা মেলে। তিন উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের চরকবন গ্রামের একরামুল হোসেন। তিনি অকপটে জানালেন, ১০ কৃষকের নামে তিনি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট করেছেন। এ পর্যন্ত খাদ্যগুদামে ধান দিয়েছেন ২২ মেট্রিক টন। শনিবার আরও চার মেট্রিক টন ধান খাদ্যগুদামে বিক্রি করার জন্য এনেছেন। কিন্তু এসে দেখেন গুদাম কর্মকর্তা গাঢাকা দিয়েছেন। তিনি জানান, কৃষকের নামে ধান বেচতে উৎকোচ দিতে হয় গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনকে।কিশোরীগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক সামছুল হক বলেন, নতুন নির্দেশনা পাওয়ার পর ধান কেনায় গতি এসেছে। ব্যবসায়ী ফড়িয়াদের ব্যাপারে তিনি বলেন, কৃষিকার্ড দেখেই তো গুদাম কর্মকর্তা ধান কিনছেন। কিন্তু কে ব্যবসায়ী কে কৃষক, তা আমরা বুঝব কিভাবে। কৃষক যদি সামান্য সুবিধার বিনিময়ে তাদের কার্ড অন্যের হাতে তুলে দেন, তাহলে আমরা কী করব।
×