ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্রমণ সতর্ক বার্তা

বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের পরিবার স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে পারবে

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১৬ জুলাই ২০১৬

বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের পরিবার স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে পারবে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হামলার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ৩৩টি দূতাবাস কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দিয়েছে। এসব দূতাবাসের মধ্যে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসও রয়েছে। রাজধানীর গুলশানে জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তার কর্মীদের পরিবারকে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দিয়েছে। সূত্র জানায়, বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায়ই বিভিন্ন দেশে অবস্থিত তাদের দূতাবাসের কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আইন অনুযায়ী এই নিয়ম রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের পরিবারের সদস্যদেরও এই সুযোগ দিয়েছে দেশটি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর গুলশান হামলার প্রেক্ষিতে ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিজ দেশে ফেরার যে সুযোগ দিয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের সুযোগ দিয়ে থাকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বর্তমানে বিশ্বের ৩৩ টি দেশের দূতাবাসের কর্মীদের পরিবারকে এই সুযোগ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা স্বেচ্ছায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে পারবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের দেশে ফেরার ব্যয় বহন করবে। আগামীতে কোন হামলা হলে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবারের সদস্যরা যেন সেই হামলার শিকার না হন সেজন্যই আগে ভাগে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে দেশে ফিরতে পারবেন শুধু পরিবারের সদস্যরা, এটা কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য হবে না। এদিকে বাংলাদেশে আরও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ ‘ভ্রমণ সতর্ক বার্তা’ আপডেট করেছে। রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতর থেকে সতর্ক বার্তা আপডেট করে ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার বাস্তবসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য ঝুঁকি আছে’ বলে উল্লেখ করে ওয়াশিংটন তার দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে। দেশটির পক্ষ থেকে থেকে বলা হয়েছে, ধারাবাহিক উগ্রবাদী ঘটনাবলীর মধ্যে সর্বশেষ হামলার প্রেক্ষাপটে আমেরিকানদের বাংলাদেশ সফরের আগে এর যৌক্তিকতা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। তবে ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস চালু রয়েছে। এটি দৈনন্দিন কনস্যুলার সেবা প্রদান করবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, পহেলা জুলাই ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় বিদেশীরা সমবেত হন এমন একটি রেস্তরাঁয় সন্ত্রাসীরা ২০ জিম্মিকে হত্যা করেছে। দেশজুড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ব্লগার, প্রকাশক ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস) গত সেপ্টেম্বর থেকে অনেক হামলায় তাদের দায় স্বীকার করেছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কঠোর নিরাপত্তা উদ্যোগ গ্রহণ, সতর্ক থাকা এবং স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত থাকা উচিত। কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে জনসমাগমস্থলে যেতে এবং বড় জমায়েতে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া তাঁরা হেঁটে, মোটরসাইকেল, সাইকেল, রিকশা, জনগণের চলাচলের পথ ও ফুটপাথে উন্মুক্ত আকাশের নিচে চলাফেরা করতে পারবেন না। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদেরও এটি অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×