ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও রক্তের ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৭:২১, ১৬ জুলাই ২০১৬

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও রক্তের ব্যবসা

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপনে দেখা যায় অর্থের বিনিময়ে মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রয়োজন। বিত্তবানরা পেয়েও থাকেন। প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে নিজ দেশ ও প্রতিবেশী ভারতের অসংখ্য হাসপাতালে অর্থের বিনিময়ে বিত্তবানদের দেহে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কিডনি, ফুসফুস, চোখ এমনকি লিভারও সংযোজন করা হয়। এর পরে প্রয়োজন হয় মূল্যবান রক্ত। প্রতিটি অপারেশনে প্রয়োজন পড়ে রক্তের। নানা রোগের কারণে রক্ত দূষিত হলে প্রয়োজন হয় বিশুদ্ধ রক্তের। দেশে রক্তের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১০ লাখ ব্যাগ। অর্থের বিনিময়ে রক্ত পাওয়া যায়। এই রক্ত কারা দেয় বা দান করে সেটি জানে সংশ্রিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ৯ লাখ বা ১০-১২ লাখ ব্যাগ রক্তই যে বৈধভাবে সংগ্রহ করা হয় সেটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। অভাবি, নেশাগ্রস্ত, বেকার ও হতাশাগ্রস্ত কিশোর, যুবক-যুবতী ও এক শ্রেণীর বয়স্ক ব্যক্তি যারা রক্ত বিক্রি করে নিজেরাই একদিন সেই রক্তের অভাবে মারা যায়। এই শ্রেণী অর্থের বিনিময়ে শরীরের রক্ত ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে আসছে সবার অজান্তে আবার ক্ষেত্রবিশেষে জ্ঞাতসারে। যাদের অর্থ আছে তারা কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে দেশে ও বিদেশে যথাযথ উপায়ে রক্ত, কিডনি, চোখ, ফুসফুস পেয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য শিশু নিখোঁজের সংবাদ, কবর হতে লাশ নিয়ে যাওয়ার সংবাদ আমরা প্রায়ই পাই। এসব মৃতদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কি চলে যাচ্ছে বিত্তবান মুমূর্ষু রোগীদের দেহে? উত্তর ‘না’ হলে প্রশ্ন জাগে তা হলে ১০-১২ লাখ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ হয় কি উপায়ে? সংযোজনকৃত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পাওয়া যায় কোত্থেকে? একজনকে মেরে অন্যজনকে বাঁচানো! সত্য বা মিথ্যা প্রমাণিত হতে পারে তদন্তের মাধ্যমে। জানা যায়, ঢাকা শহরে অসংখ্য রক্ত সংগ্রহের ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ছোট-বড় অসংখ্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কৌশলে অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। রক্ত সংগ্রহ-ব্যবসা নতুন নয়। বর্তমানে মাদকে আসক্ত অনেকে নেশার অর্থ সংগ্রহে রক্ত বিক্রি করে থাকে। এই জাতীয় মানুষের রক্ত নিরাপদ নয়। ২০০৮ সালের রক্ত সংগ্রহের জন্য পাসকৃত আইনটি সবার জন্য নিরাপদ নয়। আইনটি পরিমার্জিত হওয়া প্রয়োজন। মানবদেহের রক্ত ক্রয় ও বিক্রি এবং সংগ্রহের বিধিমালা কঠোর হতে হবে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই রক্ত দিতে পারবে না। ছবিসহ আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। সুস্থতার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী হাসপাতাল ও বেসরকারী ক্লিনিক মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তথা কিডনি, বাল্ব, ফুসফুস, চোখ ও অন্যান্য অঙ্গ কিভাবে সংগ্রহ করে সেটি স্পষ্ট হওয়া দরকার। বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ নেবে বলে আশা রাখি। মেছের আলী শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ
×