ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কীর্তনখোলা পয়সারহাট শাহী পার্ক

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১৬ জুলাই ২০১৬

কীর্তনখোলা পয়সারহাট শাহী পার্ক

ঈদ মানে খুশি আর আনন্দ। নতুন জামা, ঈদের নামাজ, সালামি, সেমাই খাওয়ার সঙ্গে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানোই হচ্ছে ঈদের আনন্দ। তাই ঈদের ছুটি এলেই ব্যাকুল হয়ে ওঠে বরিশালের বিনোদনপ্রিয় মানুষ। ক্ষণিকের জন্য একটু বিনোদনের খোঁজে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। চলে যায় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। তাতেও মন ভরে না অনেকের। তাইতো তারা নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। তাইতো এবারের ঈদে শহরের কোলাহল ছেড়ে বিনোদন প্রিয় মানুষেরা ভিড় করেছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছোঁয়া পেতে। ঈদের দিন থেকে টানা চারদিন প্রকৃতিপ্রেমী দর্শণার্থীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছিল নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নবনির্মিত শহর রক্ষা বাঁধ, ত্রিশ গোডাউন এলাকার বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ, স্বাধীনতা পার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু, কালিজিরা ব্রিজ, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এবং এমএ জলিল সেতু, আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট সেতুসহ দেশ-বিদেশের ১৪শ’ প্রজাতির গাছপালা, লতা ও অসংখ্য স্ট্যাচু দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমির মতো সাজানো অপূর্ব সব নৈসর্গিক দৃশ্যে ঘেরা গৌরনদীর শাহী ৯৯ পার্ক। এসব এলাকায় আসা ভ্রমণপিপাসুদের মাঝে ঈদ আনন্দের বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছিল। কীর্তনখোলা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ ॥ এখানে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় আর মুখের হাসি বলে দেয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কতটা তাদের মন কেড়েছে। নদীর পানির কলকলানি শব্দ ধরে ওপারে তাকালেই সবুজের সমারোহ, সবুজের ওপর দিগন্ত জোড়া সাদা-নীল আকাশের ছোঁয়া। পরিবার-পরিজন নিয়ে কীর্তনখোলা নদী তীরে ঘুরতে আসা জেসমিন আক্তার বলেন, নৌকায় চড়ে কীর্তনখোলা নদীতে ঘুরে তারা আনন্দ করেছেন। নদীর ওপর ঈদের মেলা ॥ প্রতিবছরের মতো এবারো সন্ধ্যা নদীর পয়সারহাট সেতুর ওপর বসেছিল তিনদিনের ঈদ মেলা। প্রকৃতির শোভা উপভোগ করতে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এখানে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষদের ছিল সরগরম উপস্থিতি। প্রকৃতির নির্মল বাতাস, খোলা আকাশে মেঘের ভেলায় আত্মহারা হয়ে এখানে আসা প্রকৃতিপ্রেমীরা ভেসে চলেছে যে যার স্বপ্নের গন্তব্যে। ঈদ উপলক্ষে সেতু ও তার আশপাশের এলাকায় হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছিল দোকানিরা। ঈদের দিন থেকে টানা তিনদিন ভ্রমনপিপাসুদের আগমনে এখানে অঘোষিত বসেছিল ঈদমেলা। পাশাপাশি আগৈলঝাড়া, গৌরনদী ও কোটালীপাড়ার হাজারো বিনোদনপ্রিয় মানুষের ঈদ ও ঈদ পরবর্তী পুনর্মিলনী কেন্দ্র হিসেবে সেতুবন্ধন করে দেয় পয়সারহাট সেতু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শাহী ৯৯ পার্ক ॥ প্রকৃতির খোঁজে শহরের কোলাহল ছেড়ে এবারই সর্বপ্রথম দর্শণার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখর ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্মিত গৌরনদীর শাহী ৯৯ পার্ক। জেলা শহরের বাইরে একমাত্র এ বিনোদন কেন্দ্রে ঈদের দিন থেকে টানা চারদিন সকল বয়সের ভ্রমণপিপাসু কমপক্ষে ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটেছিল। ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষদের কাছে শাহী ৯৯ পার্কটি বিনোদনের নতুন খোরাক জুগিয়েছে। প্রতিদিন এখানে ভ্রমণপিপাসুরা সপরিবারে ছুটে এসেছে প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে। এ বিনোদন কেন্দ্রে আনন্দ উল্লাস করে ভেসে বেড়িয়েছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সকল বয়সের নারীপুরুষ। এখানে ঈদের ছুটিকে রঙিন করতে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। ২০১২ সালে বৃক্ষপ্রেমী দেশের একমাত্র শাহী ৯৯ জর্দ্দা কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শামিম আহমেদ তার নিজস্ব উদ্যোগে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর এলাকার দেওপাড়া লক্ষণকাঠী গ্রামে শাহী ৯৯ পার্ক নির্মাণ করেন। তিনি দেশ-বিদেশ ঘুরে অসংখ্য স্ট্যাচু সংগ্রহ করে পার্কে স্থাপন করেছেন। -খোকন আহম্মেদ হীরা বরিশাল থেকে
×