ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউরো জয়ের পর ফুরফুরে রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১৬ জুলাই ২০১৬

ইউরো জয়ের পর ফুরফুরে রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে স্বপ্নের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল। সদ্যসমাপ্ত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফুটবলের বড় কোন টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে তারা। আর এই শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন সি আর সেভেন। ফাইনালে মাত্র ২৪ মিনিট খেললেও মাঠের বাইরে থেকেও দলকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তিনি। নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট জয়ের পর রোনাল্ডো এখন বেশ ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছেন। মা এবং তার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ইবিজায় দারুণ উপভোগ্য সময় পার করছেন। ফ্রান্সের ফাইনালে দিমিত্রি পায়েটের ট্যাকলে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। আর ইবিজার সৈকতেও দেখা গেল রোনাল্ডোর ঊরুতে তেল ব্যবহার করে দিচ্ছেন তার মা ডোলোরেস এভেইরো। আর রোনাল্ডোও তার মাকে গোসল করানোর ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। পাঁচ বছর বয়সী ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়রও দাদি এবং বাবার সঙ্গে ইবিজার সৈকতে দারুণভাবে উপভোগ করছেন। গত বছরের শুরুতেই বান্ধবী ইরিনা শায়েকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে আর নতুন করে কোন সম্পর্কে জড়াননি বিশ্বফুটবলের সেরা তারকা। তবে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছেন ঠিকই। কিন্তু পরবর্তীতে তার সত্যতা মিলেনি। কিন্তু রাশিয়ান মডেল ইরিনা শায়েক ঠিকই নতুন করে প্রেমের ভেলায় ভাসছেন। রোনাল্ডোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কয়েক মাস পর থেকেই হলিউড অভিনেতা ব্র্যাডলি কুপারের সঙ্গে প্রেমের সাগরে ভাসছেন তিনি। সদ্যসমাপ্ত উইম্বলডনের ফাইনালে গ্যালারিতে বসে এ্যান্ডি মারে ও মিলোস রাওনিকের লড়াইও দেখেছেন তারা। আর একই দিনে ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরোর শিরোপা জিতে রোনাল্ডোর পর্তুগাল। অথচ সমালোচকরা ইউরোর ফাইনালে ফ্রান্সকেই এগিয়ে রেখেছিল। কিন্তু এবারের ইউরো জয়ের বিষয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সি আর সেভেন। ফ্রান্সকে ফেবারিট মনে করা হলেও নিজের দলই কাপ জিতবে বলে বিশ্বাস ছিল তার। শেষ পর্যন্ত সেটিই করে দেখাল তার দল। শিরোপা জয়ের পরই উচ্ছ্বসিত রোনাল্ডো বলেন, ‘অনেক বছরের বিসর্জনের পর পতুর্গাল অবশ্যই পাওয়ার যোগ্য। আমাদের ওপর কারও বিশ্বাস ছিল না। আমি ক্লাবের হয়ে সবকিছু জিতেছি। কিন্তু দলের হয়ে কিছু জেতা হচ্ছিল না। আমি দীর্ঘ সময় ধরে ফুটবল খেলছি। আমার মাঝে অনেক অনুভূতি কাজ করে। আমি অনুভব করেছিলাম, এডারই এমন একজন যে গোল করতে যাচ্ছে।’ এদিকে রোনাল্ডোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তারই সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার এ্যালেক্স ফার্গুসন। ইউরোর ফাইনাল প্যারিসের মাঠে বসেই উপভোগ করেছেন রেড ডেভিলদের সাবেক কোচ। চোখের সামনেই দেখলেন তার সাবেক শিষ্য রোনাল্ডোর ইউরো জয়। ম্যাচের শুরুতেই চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার পরও রোনাল্ডো যেভাবে সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করেছেন, সেটা দেখে রীতিমতো মুগ্ধ-বিমোহিত ফার্গুসন। ইউরো জিতে পুরস্কারের মঞ্চে যাওয়ার পথে সাবেক গুরু ফার্গিকে উষ্ণ আলিঙ্গনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন রিয়াল তারকা। ৭৪ বছর বয়সী ফার্গুসন জানিয়েছেন, পরিশ্রম করার মানসিকতা এবং জয়ের ক্ষুধা দেখেই নাকি মাত্র ১৮ বছর বয়সে ২০০৩ সালে রোনাল্ডোকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। তার মতে, এ দুটি গুণই ৩১ বছর বয়সী এ তারকা ফুটবলারকে তার প্রজন্মের সেরা বানিয়েছে। জার্মান দৈনিক বিল্ডকে ফার্গুসন বলেন, ‘ফুটবল খেলাটার প্রতি তার অদম্য ভালবাসা। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ নেয়ার জন্য ক্রিশ্চিয়ানো সর্বদা প্রস্তুত থাকে। সে সব সময় জয়ের জন্য নিজের মান আরও ওপরে নিতে চায়। বিশেষ করে বড় ম্যাচগুলোকে সে অত্যন্ত ভালবাসে।’ ইউনাইটেডে তার অধীনে কেমন ছিলেন রোনাল্ডো? এ প্রসঙ্গে ফার্গি বলেন, ‘আমার সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সবচেয়ে উন্নতি করা ফুটবলারটির নাম ক্রিশ্চিয়ানো। পরিশ্রম করায় সে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকত। শূটিং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সে ধারাবাহিকভাবে কাজ করত। বাঁ পা, ডান পায়ে সমান দক্ষতা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রুম করত। তার হেড করার সামর্থ্যও ছিল দুর্দান্ত। সে কঠোর পরিশ্রম করে সেটাকে আরও শাণিত করেছে।’
×