ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উগ্রপন্থার প্রতি তরুণ সমাজের আসক্তি বাড়ছে যে কারণে-

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৬ জুলাই ২০১৬

উগ্রপন্থার প্রতি তরুণ সমাজের আসক্তি বাড়ছে যে কারণে-

এমদাদুল হক তুহিন ॥ গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার পর সচেতন হয়ে উঠছে অভিভাবক সমাজ। নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে অভিভাবকরা থানায় যেমন জিডি করছেন তেমনি উগ্রবাদে জড়িয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের কর্মকা-ের তদারকি শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল জগতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনলাইনে তারা কী করছে অভিভাবকরা গোপনে সে বিষয়ে নজর রাখছেন। পূর্বাপর ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জড়িত থাকলেও গুলশান-শোলাকিয়ার ঘটনায় আলোচনায় এসেছে বেসকারী বিশ্ববিদ্যালয়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। এছাড়া তথাকথিত আইএসের নামে বাংলাদেশে ফের হামলা চালানোর যে হুমকি দেয়া হয়েছে, সে ভিডিওবার্তায় যে তিন তরুণকে কথা বলতে দেখা গেছে তারাও নামীদামী বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্র। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। উগ্রবাদী কর্মকা-ে জড়িয়ে যাওয়া তরুণদের অধিকাংশই দীর্ঘ সময় ধরে নিখোঁজ ছিল। একই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ছিল পরিবার থেকে। আর এখন পর্যন্ত যারা নিখোঁজ তারাও পরিবারের সঙ্গে কোন যোগাযোগ রাখছে না। এরা কিভাবে জঙ্গী হয়ে উঠল বা জঙ্গীবাদী দলগুলো কিভাবে তাদের দলে বেড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ধারণা নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। এমনকি পরিবারের কাছেও তাদের কর্মকা- ধোঁয়াশে। শোলাকিয়ায় হামলায় নিহত জঙ্গী আবির রহমান পরিবারের ভাষ্যমতে ছিল অতিধার্মিক। আর গুলশান হামলায় অংশ নেয়া নিহত দুই জঙ্গী ছিল জাকির নায়েকের অনুসারী। এতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মেলে মূলত ধর্মের দোহাই দিয়ে এদের জঙ্গীবাদী কর্মকা-ে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তবে সন্তান জঙ্গী হয়ে ওঠার কোন কারণ ব্যাখ্যা করতে পারছে না পরিবারগুলো। নিখোঁজ ১০ সন্তানের সন্ধান চেয়ে যে অভিভাবকরা থানায় জিডি করেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে এসব পরিবারের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার ঘটনায় জড়িত নিহত আবির রহমানের পরিচয় প্রকাশিত হওয়ার পর তার ভাই আশিকুর রহমান বিবিসি বাংলায় এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আবিরের ঘরের বারান্দায় ফুলের গাছ ছিল, খাঁচায় পোষা পাখি ছিল। নিখোঁজ হওয়ার আগে সে পাখিগুলো ছেড়ে দিয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবির ধার্মিক ছিল, নিয়মিত নামাজ পড়ত, দাড়ি রেখেছিল। কিন্তু অতিমাত্রায় ধর্মপরায়ণতা তার মধ্যে ছিল না এবং এটা অস্বাভাবিক কিছু বলে আমাদের মনে হয়নি।’ তবে আবির কী কারণে উগ্রপন্থার দিকে ধাবিত হলো তার কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তার ভাই। এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করে সমাজ বিজ্ঞানী ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদরা বলছেন, আকস্মিক অতিধার্মিকতা, ধর্মের মৌলিক জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞতা, বকধার্মিকতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, হতাশা, মাদক, বাবা-মা’র অনৈতিক কার্যকলাপ, পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ ও সম্পদের অসম বণ্টনের কারণে মগজধোলাইয়ের মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজকে ফাঁদে ফেলছে জঙ্গীগোষ্ঠী। দেশের তরুণ সমাজকে উগ্রপন্থামুখীন বিপথগামী করায় দেশে দেশে এখন চিন্তার ভাঁজ। সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘তরুণ বয়সীদের মধ্যে বীরত্বের প্রতি আকর্ষণ থাকে। ধর্ম তাদের কাছে বড় নয়। যারা এদের সংগ্রহ করছে তারা বোঝায় স্বর্গে যাওয়ার যে পথ সেটা তাদেরটা (উগ্র) সঠিক। ফলে ধর্মীয় শাস্ত্রে স্বর্গ পাওয়ার যে পথ বাতলানো আছে তা এরা অনুভব করতে পারে না।’ সাম্প্রতিক ঘটনার ভয়াবহতা অনুধাবন করে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘তরুণরা কোথায় যাচ্ছে, ঠিক পথে না ভুল পথে তা লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব পরিবারের। একই সঙ্গে রাষ্ট্র, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাসহ সকলকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। তরুণরা কেন বিপথগামী হচ্ছে; রাষ্ট্র, সমাজ তাদের কিভাবে কাজে লাগাচ্ছে, তাদের কাছে প্রত্যাশা কীÑ সে বিষয়গুলোর প্রতি জাতি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ ইংরেজী মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা জড়িয়ে যাওয়ার কারণ ॥ ইংরেজী মাধ্যমে কেবল ইংরেজীর ওপরই জোর দেয়া হয়, নিজের ভাষা-সংস্কৃতি-ধর্ম সম্পর্কে তেমন কোন শিক্ষা দেয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওসব ছাত্রছাত্রী সার্বক্ষণিক বিলাসিতার মধ্যে ডুবে থাকে। এমনকি কোন কোন ছেলেমেয়ে চোখের সামনে বাবা-মায়ের অনৈতিক কর্মকা- স্পষ্টত দেখতে পায়। ফলে তারা ধীরে ধীরে হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। আধুনিকতার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেও সুখী মানুষ না হতে পেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সমাজ থেকে। প্রাকৃতিকভাবেই এক সময় তাদের মধ্যে ধর্মভীরুতা চলে আসে। তখন সহজেই তাদের মগজধোলাই সম্ভবÑ এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ইংরেজী মাধ্যমে পড়ুয়া এক তরুণী নাম প্রকাশ না করার শর্র্তে জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমি যেমন নিজের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান রাখি তেমনি নিজের সমাজ-সংস্কৃতি সম্পর্কেও ধারণা রাখি। বর্তমানে প্রতিটি সন্তানই নিজের চোখের সামনে বাবা-মায়ের অনৈতিক কর্মকা- দেখতে অভ্যস্ত। ইংরেজী মাধ্যমে পড়ার কারণেই ছেলেমেয়েরা জঙ্গীবাদ বা উগ্রতায় জড়িয়ে পড়ে তা ঠিক নয়।’ আইএসের সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া ॥ মগজধোলাইয়ের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহে কথিত আইএস কোন্ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে তা নিয়ে এক আইএস সদস্যের সঙ্গে দীর্ঘ কথা বলেন নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিনিধি রুকুমিনি ক্যালিমাছি। ওই আইএস সদস্য ২৩ বছর বয়সী এক তরুণী, যার ছদ্মনাম এ্যালেক্স। তিনি আইএসের অনলাইন দাওয়াতকারীদের সঙ্গে অনেকদিন ধরে যোগাযোগ রাখছেন। এ্যালেক্স বর্ণনায় বলেন, আল কায়েদা ও আইএস আলাদা সংগঠন হলেও তাদের নতুন সদস্য সংগ্রহের কৌশল অনেকটাই এক করম। এ্যালেক্সের দেয়া বর্ণনার বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এ্যালেক্স সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন কাউকে টার্গেট করে। ধীরে ধীরে তার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে থাকে। পরিচয়ের শুরুতে ইসলাম নিয়ে কথা বলতে শুরু করে এবং তাকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয় যে, পশ্চিমা মিডিয়া আইএসের গণহত্যাকে যেভাবে উপস্থাপন করছে, আইএস আসলে তেমন নয়। নিবন্ধে বলা হয়, তবে আল কায়েদা ও আইএসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আল কায়েদা সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করলেও আইএস মুক্তভাবে অনলাইনে সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করে। এমন নারীদের টার্গেট করে যারা সিরিয়া ও অন্যান্য জায়গায় তাদের যোদ্ধাদের সঙ্গে নারীদের বিয়ে দিতে পারবে। আরবী ও ইংরেজী ভাষায় সদস্য সংগ্রহের ম্যানুয়াল রয়েছে, যা অনলাইনে পাওয়া যায়। হতাশ ও কম ধর্মপ্রাণ তরুণদের প্রাধান্য ॥ আইএস সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে হতাশ ও কম ধর্মপ্রাণ তরুণদের প্রাধান্য দেয়। তবে আল কায়েদা ধার্মিক মানুষকে টার্গেট করে। আইএস এমন সব মানুষকে টার্গেট করে যারা বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে, একই সঙ্গে যারা জীবন নিয়ে খুব হতাশ কিংবা ইসলাম সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখে না। এসব জনগোষ্ঠীকে তাদের দলে টানা এবং উগ্র মতবাদ সহজে মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া সম্ভব। তাদের এক ম্যানুয়েলে বলা হয়েছে, ‘কারণ আপনিই তাদের গাইড করবেন এবং আপনিই নির্ধারণ করবেন আপনার ব্রিগেডে কাকে কাকে নেবেন।’ বড় শহর থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষার্থী ॥ আইএস বড় শহর থেকে বিচ্ছিন্ন তরুণদের টার্গেট করে। কারণ তাদের প্রাকৃতিকভাবেই ধর্মের প্রতি একটু ঝোঁক বেশি। তাদের একটু বুঝিয়েই নিজেদের দলে ভেড়ানো যায়। হাই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক টার্গেট ॥ আইএস হাই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে টার্গেট করছে বলে তাদের ইংরেজী ম্যানুয়েলে বলা হয়েছে। ততে বলা হয়, ‘হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখন তরুণ, অল্প কদিন পরই তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাবে। তাই আপনি যদি এখনই তাদের দাওয়াত না দেন তাহলে অন্য কেউ দিয়ে ফেলতে পারে। এসব কাজে তাড়াহুড়া করা যাবে না। কারণ অতিরিক্ত তাড়াহুড়ার কারণে পুরো প্রক্রিয়াটাই ভেস্তে যেতে পারে।’ তাতে আরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, পরিচয়ের শুরুতে মুসলমানদের সামগ্রিক সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। তবে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে তারা কোনভাবেই না বোঝে যে আপনি তাকে নিজের দলে টানছেন। বরং একপর্যায়ে ব্রেনওয়াশের ফলশ্রুতিতে সে-ই আপনার দলে যোগ দিতে চাইবে। মুসলমানদের চলমান দুর্দশার বর্ণনা ॥ ম্যানুয়েলে দাওয়াতকারীদের প্রতি পরামর্শ দেয়া হয়েছেÑ তারা যাতে উদাহরণ হিসেবে চলতি কোন ঘটনা বা ভয়াবহ কোন ঘটনার বর্ণনা দেন। যেমন গাজা অধিগ্রহণ এবং এর ফলে মুসলমানদের যে দুর্দশা হয়েছে, ইসলামিক প্রেক্ষাপটে বর্ণনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দলে ভেড়া আগ্রহীদের সব চাহিদা পূরণের কথা বলা হয়েছে। তাতে বলা হয়, একই সঙ্গে তাদের বারবার বেহেশতের কথা মনে করিয়ে দিতে হবে। নারীদের অনুপ্রাণিত হওয়ার কারণ ॥ যেসব নারী আইএস বা অন্য কোন জঙ্গীগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে যায় তাদের বদ্ধমূল ধারণা সমাজে তাদের মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। এমনকি তারা মনে করে থাকেন, ধর্মের জন্য জীবন দিচ্ছেন তারা। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব নারী আইএসে যোগ দিচ্ছে তাদের মগজধোলাই করে বানানো হচ্ছে যৌনদাসী। কিন্তু তারা মনে করে তাদের মর্যাদা দেয়া হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তাদের হাতে কেবল তুলে দেয়া হচ্ছে অস্ত্র। আর করা হচ্ছে যৌন নিবারণের সাথী। ইসলাম ও জঙ্গীবাদ ॥ ধর্মীয় নেতারা জোর দিয়ে বলে থাকেন, ইসলাম কখনই জঙ্গীবাদকে সমর্থন করে না। কোন ধর্মই অত্মহত্যা বা আত্মঘাতী সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে না, বরং বকধার্মিকরা নিজেদের স্বার্থে ধর্ম মৌলিক জ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞদের প্ররোচনা প্রদান করে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। জঙ্গীবাদ ও জিহাদ প্রসঙ্গে রায়হান নেওয়াজ নামক ধর্মীয় লেখক এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে আমাদের মধ্য থেকে একটি বিশেষ শ্রেণী ধর্মদ্রোহিতার অতলে ডুবে যাচ্ছে এবং আরেকটি শ্রেণী উগ্র মৌলবাদী কর্মতৎপরতার মাধ্যমে জঙ্গীবাদী নামে কুখ্যাতি অর্জন করছে।’ আর সম্প্রতি বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলেমরা জঙ্গীবাদকে হারাম বলে আখ্যা দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের খুব তাড়াতাড়ি জঙ্গী বানানো যায়Ñ এ তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তরুণদের আকৃষ্ট করার জন্য তাদের বোঝানো হচ্ছে, যেভাবে রাষ্ট্র চলছে এটা ঠিক নয়। এ রাষ্ট্রের মধ্যে অনেক দুর্নীতি। বিদেশীরা আমাদের সব নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি নতুন রাষ্ট্র গঠন করি তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে। ধারণা করা হয়ে থাকে, ঠিক এভাবেই প্রতিটি জঙ্গীগোষ্ঠী তাদের নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে।
×