ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার সঙ্গে বৈঠক

বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ পেশাজীবীদের

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ১৫ জুলাই ২০১৬

বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ পেশাজীবীদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন পেশাজীবীরা। একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াতকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ারও পরামর্শ দেন তারা। বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক ও বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনদের বৈঠকে তারা এমন মন্তব্য করেন। বৈঠক সূত্রে এসব কথা জানা গেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে খালেদা জিয়ার জেলায় জেলায় সফরে যাওয়ার বিষয়েও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে। সূত্রটি জানায়, বৈঠকে খালেদা জিয়া বলেন, পিলখানার বিডিআর হত্যা ঘটনা ও গুলশানের জঙ্গী হামলার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। সরকারই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জঙ্গীবাদ জিয়ে রাখছে। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ নির্মূল করার ব্যাপারে সরকারের যদি আগ্রহ থাকত, তাহলে আমরা জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান জানিয়েছি, তাতে সাড়া দিত। কিন্তু সরকার আমাদের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না। বৈঠকে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক বলেন, বিএনপি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেও সরকার জামায়াত ইস্যুতে ঐক্যের বিরোধিতা করছে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে জামায়াত ত্যাগ না করলে কোন ঐক্য নয়। এ কারণে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। বৈঠকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াতকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। একই সঙ্গে জামায়াত নেতাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মাজার জিয়ারত করারও পরামর্শ দেন তিনি। এত সমালোচনার পরও বিএনপি কেন জামায়াত ছাড়ছে না, বৈঠকে এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি। অন্যদিকে ডাঃ জাফরুল্লাহর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন কয়েকজন পেশাজীবী। তারা বলেন, জামায়াত যদি অনেক বড় সমস্যা হয়, তাহলে সরকারই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুক। তাহলে বিএনপিকেও জামায়াত ছাড়তে সমস্যায় পড়তে হবে না। বৈঠকে সারাদেশের নগর-মহানগর ও জেলা পর্যায়ে সভা, সমাবেশ ও মানববন্ধন করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করারও প্রস্তাব দিয়েছেন পেশাজীবীরা। এছাড়ও বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়ে ১১টায় শেষ হয়। খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমির খসরুল মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. অধ্যাপক সদরুল আমীন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক মহিউদ্দিন আলগীর, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) আহ্বায়ক আ ন হ আখতার হোসেন, ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, এ্যাগ্রিকালচারিস্ট এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমীন গাজী, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
×