ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হঠাৎ বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা বিক্রি বন্ধ

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১৫ জুলাই ২০১৬

হঠাৎ বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা বিক্রি বন্ধ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া খনি ইয়ার্ডে মজুদ সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসায় কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত বুধবার খনি কর্তৃপক্ষ বিক্রি বন্ধের নোটিস টানিয়ে দেয়। এদিকে, কয়লার দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন গুজবে গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিনে প্রায় ৫২ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়ে যায়। হঠাৎ করে কয়লা বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়লা কিনতে আসা অনেক ব্যবসায়ী ও ইটভাঁটি মালিক খালি হাতে ফিরে গেছেন। তাদের অভিযোগ- স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে বিপুল পরিমাণ কয়লা বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, বড়পুকুরিয়ার কয়লা প্রতিটন ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো। গত বছর বেসরকারী পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ কয়লা ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে তুলনামূলক কম দামে (৬-৮ হাজার টাকা টন) দেশীয় বাজারে বাজারজাত শুরু করে। এর ফলে বড়পুকুরিয়ার কয়লা বিক্রি কমে যায়। এ অবস্থায় খনি কর্তৃপক্ষ দুই দফায় কমিয়ে প্রতিটন কয়লার মূল্য ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু আমদানি করা কয়লার চেয়ে দেশী কয়লার মান ভাল হওয়ায়ও দাম বেশির কারণে আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছিল না। খনি কোল ইয়ার্ডে ধারণক্ষমতা আড়াই লাখ টনের বিপরীতে মজুদ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩২ হাজার টন কয়লা। এই বিপুল পরিমাণ মজুদ কয়লা নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়ে। পরে গত ২২ মে কয়লার মূল্য আরেক দফা কমিয়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতে কয়লার বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়। গত মে ও জুন মাসে ৯৮ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়। এ সময়ের মধ্যে পার্শ্ববর্তী ২৫০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয় প্রায় ১ লাখ টন কয়লা। গত ১০ জুলাই পর্যন্ত মজুদ কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৫ হাজার টন। এরমধ্যে তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য ৬০-৬৫ হাজার টন মজুদ রেখে অবশিষ্ট কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবে খনি কর্তৃপক্ষ। এদিকে, প্রায় একমাস ধরে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কয়েক মাস পর ইট পোড়ানোর মৌসুম শুরু হবে। ধীরে ধীরে মজুদও কমে আসছে। সোমবার (১১ জুলাই) হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে খনি কর্তৃপক্ষ কয়লার দাম বৃদ্ধি করবে। গুজব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইটভাঁটি মালিক ও কয়লা ব্যবসায়ীরা কয়লা কিনতে খনিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ফলে সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনে ৫২ হাজার টন কয়লা বিক্রি হয়। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ইটভাঁটি মালিক মোস্তফা ফিরোজসহ এমবিএফ ব্রিকস, বিবিএম ব্রিকস, জেবিএম ব্রিকস, এসকে ব্রিকস, এমবিবি ব্রিকসের মালিক পক্ষ জানায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কয়লা কিনতে খনির গেটে গেলে তাদের ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তাদের অভিযোগ স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট খনি কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে দুদিনে মজুদ সব কয়লা কিনে নিয়েছে। খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুজ্জামান জানান, ১১ জুলাই পর্যন্ত আগে আসলে আগে পাবেন এই নীতিতে কয়লা বিক্রি করা হয়। ১২ জুলাই হঠাৎ চাপ বেড়ে গেলে উপস্থিত ক্রেতাদের প্রত্যেককে ১০০-২০০ টন করে কয়লা দেয়া হয়। ১৩ জুলাই অনেক ভাঁটি মালিক ও কয়লা ব্যবসায়ী কয়লা কিনতে এলেও তাদের কয়লা দেয়া সম্ভব হয়নি।
×