ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট ‘প্রতিরোধ মাস’ বাম জোটের

জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৪ জুলাই ২০১৬

জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদের বিপদ মোকাবেলায় জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলছেন, জঙ্গীবাদ ইস্যুতে পরস্পরের মধ্যে দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করার বিকল্প নেই। সময়ের প্রয়োজনে দলীয় সংকীর্ণ স্বার্থের উর্ধে উঠে সরকার, বিরোধী দল, বাম-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি একযোগে কাজ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা। দেশের প্রবীণ রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই অন্ধকারের কালো শক্তিকে কার্যকরভাবে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব। সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী হামলা, দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ করতে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তারা। বুধবার পল্টনের মুক্তিভবনস্থ প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সিপিবি-বাসদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। ‘টার্গেট কিলিং, গুপ্তহত্যা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র, লুটপাটে বিপন্ন স্বদেশ-রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দুই দলের সমন্বয়ে গঠিত এই বাম জোট। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসীদের হামলা অতীতের এসব ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করে তুলছে। ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠীকে প্রশ্রয় দেয়া এবং ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহারের বিষময় ফল সম্পর্কে আমরা সতর্ক করেছি বহুবার। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা কখনোই তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং সাম্প্রদায়িকতার ওস্তাদ দল জামায়াতকে একপক্ষ জোটসঙ্গী করেছে এবং মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছে। অপরপক্ষ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে টালবাহানা করে চলেছে। মূলত এসব কারণে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদেও মাত্রা বেড়েছে। যা এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকার মতো অবস্থায় রূপ নিয়েছে। তারা বলেন, একই সঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বাড়িয়েছে বহুগুণ। অনেক ইস্যুতে আমরা আন্দোলন করছি। নানা বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আছে। কিন্তু দেশের অস্তিত্বের স্বার্থে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সকলকে সক্রিয় হতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশের অস্তিত্বকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ওপর একাধারে সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং সাম্রাজ্যবাদ-এই দুমুখী বিপদ। সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ একে অপরের পরিপূরক। সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদ প্রতিহত করার অজুহাতে আমেরিকা বিশেষজ্ঞ সহায়তা পাঠাতে চায়। এটাই কি আসল সত্য, নাকি আমেরিকান সৈন্য পাঠানোর চক্রান্ত বাস্তবায়নের অজুহাতের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের খেলায় আটকে ফেলার চক্রান্ত চলছে। তালেবান, আল-কায়েদা, আইএস ইত্যাদি এ ধরনের প্রতিটি শক্তিই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদেই গড়ে উঠেছে এবং লালিত-পালিত হচ্ছে। মার্কিনিদের ‘সর্প হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে!’-এই কৌশলের কথা সর্বজনবিদিত। খালেকুজ্জামান বলেন, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন ও দূরীভূত করার পরিবর্তে পুরনো দোষারোপের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে। গুলশানের মতো সুরক্ষিত জায়গায় এত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ নিয়ে সন্ত্রাসীরা কী করে ঢুকতে পারল? সমস্যার সুবিধা নেয়ার তৎপরতা দৃষ্টিকটু ও বিপজ্জনকভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। ক্ষমতাসীন সরকারসমূহ সব সময় উগ্র সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী হামলার তীব্রতাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেছে। হামলাকারীদের পরিচয় উদ্ঘাটন করা, গ্রেফতার ও বিচার করার চাইতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রচেষ্টা শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতদের পক্ষ থেকে সব সময় করা হয়েছে।
×