ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সার্বিয়ান টেনিস তারকাকে বিয়ে করলেন জার্মান ফুটবল অধিনায়ক

বাহুবন্ধনে আবদ্ধ ইভানোভিচ-বাস্তিয়েন

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৪ জুলাই ২০১৬

বাহুবন্ধনে আবদ্ধ ইভানোভিচ-বাস্তিয়েন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেনিসে সেরা সুন্দরীদের তালিকা করলে শীর্ষকাতারে নাম আসে আনা কুর্নিকোভা, মারিয়া শারাপোভা, সানিয়া মির্জা কিংবা আনা ইভানোভিচের। তবে একটি ক্ষেত্রে সার্বিয়ান তারকা বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। ২০০৮ সালে ব্রিটিশ এক ট্যাবলয়েডের পাঠক জরিপে টেনিসের সেরা সুন্দরী বিবেচিত হয়েছিলেন ইভানোভিচ। সার্ব এই সুন্দরী রূপ আর গুণের সমাহার ঘটিয়ে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু প্রেম, ইনজুরি ও কোর্টের বাইরের অস্থিরতার কারণে ২০০৮ সাল থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েন। যে কারণে টেনিসের বর্ণিল ময়দান তেমন করে রাঙ্গাতে পারেননি। কিন্তু তাতে কি! জীবনের ময়দান ঠিকই রাঙিয়ে চলেছেন ২৮ বছর বয়সী এই সুন্দরীতমা। বিভিন্ন সময়ে অনেক পুরুষের হাত ধরলেও শেষ পর্যন্ত জার্মান ফুটবল দলের অধিনায়ক বাস্তিয়েন শোয়েনস্টাইগারের হাতটা ভালভাবে আঁকড়ে ধরেছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রেমের পাট চুকিয়ে মঙ্গলবার বিয়ে করেছেন ক্রীড়াবিশ্বের দুই আলোচিত জুটি শোয়েনস্টাইগার ও ইভানোভিচ। ফলে ক্রীড়া দুনিয়ায় আলোড়ন ফেলে জীবনের মঞ্চে সৃষ্টি হয়ে গেল নতুন জুটি। ২০১৪ সাল থেকে মন দেয়া নেয়া শুরু করেছিলেন এ দু’জন। দু’বছরের রোমাঞ্চ শেষে এখন এক ছাদের নিচে জীবনযাপন করবেন ইভা-শোয়েইনি। ঐতিহ্যবাহী ভেনিস সিটি হলে শোয়েনস্টাইগার-ইভানোভিচের বিয়ের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের পর দেখা যায়, হাসিমুখে দু’জন দু’জনের হাত ধরে ভেনিস সিটি হল থেকে বেরিয়ে আসছেন। জার্মান অধিনায়ক পরে ছিলেন একটি নেভি ব্লু স্যুট। আর ইভানোভিচ পরেন একটি সাদা গাউন। এরপরই তারা ভেনিস সিটি হলের ঐতিহ্য অনুসারে একটি ঐতিহ্যবাহী গাড়িতে করে ভ্যানিস ক্যানেল পাড়ি দেন। প্রেমে পড়ার পর থেকে শোয়েনস্টাইগারের খেলা থাকলে গ্যালারিতে ইভানোভিচ আর ইভনোভিচের খেলা থাকলে গ্যালারিতে শোয়েনস্টাইগারকে দেখা যেত। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল, কবে নাগাদ বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন তারা। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো। দু’জন ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ হলেও ইভেন্ট ভিন্ন। একজন টেনিসের, অন্যজন ফুটবলের। শুধু তাই নয়, দু’জনের দেশও ভিন্ন। কিন্তু জগতের দূরত্ব কিংবা দেশের সীমানা কোনকিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি শোয়েনইনি-ইভার মন দেয়া-নেয়ায়। ভালবাসার স্বার্থক পরিণতি ঘটিয়ে এখন তারা দু’জন দু’জনার। ৬ নবেম্বর ১৯৮৭ সালে জন্ম নেয়া ইভানোভিচ ১৭ আগস্ট ২০০৩ সালে পেশাদার টেনিস অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ২০০৯ সালে যখন ফর্ম-ফিটনেস নিয়ে ভুগছিলেন তখন কোর্টের বাইরে উদ্দাম রোমান্স করে বেড়িয়েছেন ইভানোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান গলফার এ্যাডাম স্কটের সঙ্গে তাকে দেখা গেছে অনেকবার। এর আগে ইভানোভিচের প্রেম ছিল আরেক টেনিস তারকা সাইপ্রাসের মার্কোস বাগডাটিসের সঙ্গে। রূপে গুণে অনন্যা হওয়ায় তাকে তুলনা করা হয় শারাপোভা বা কুর্নিকোভার সঙ্গে। টেনিস খেলে অর্জনের কমতি না হলেও আনা এখন পর্যন্ত সেভাবে নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। কেননা জিতেছেন মাত্র এক গ্র্যান্ডসøাম, তাও আবার ২০০৮ সালে ফরাসী ওপেন। এছাড়া ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হেরেছেন, উইম্বলডন ওপেনের সেমিতে খেলেছেন ২০০৭ সালে। ইউএস ওপেনের চতুর্থ রাউন্ড পর্যন্ত খেলেছেন ২০০৭ ও ২০১০ সালে। ক্রীড়াঙ্গনে গ্ল্যামারের ক্ষেত্রে টেনিস অনেকটাই এগিয়ে। এক্ষেত্রে অনেক তারকার নাম সম্মুখে চলে আসলেও শারাপোভা, কুর্নিকোভা এবং ইভানোভিচের নামটি আসবে সবার আগে। সারাবিশ্বের কোটি কোটি তরুণদের হার্টথ্রুব এই তিন টেনিস ত্রয়ী। অবাক করা বিষয় এই তিনজনের কেউই বর্তমানে আশাতীত সাফল্য পাচ্ছেন না। কুর্নিকোভা তো হারিয়েই গেছেন, ইভানোভিচও সাফল্য পাচ্ছেন না। আর শারাপোভা হয়েছেন নিষিদ্ধ। অন্যদিকে গুঞ্জনের ডালি সরিয়ে ২০১৫ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন শোয়েনস্টাইগার। ম্যানইউর সঙ্গে তিন বছরের চুক্তিতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে নতুন করে ঠিকানা গড়েছেন জার্মান অধিনায়ক। নিজ দেশের ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখে টানা ১৩ বছর খেলার পর ইপিএলে পাড়ি জমিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এখন জীবনের মঞ্চে কেমন করেন সেটাই দেখার।
×