ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ স্মরণে অনুষ্ঠিত একক বক্তৃতা

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৪ জুলাই ২০১৬

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ স্মরণে অনুষ্ঠিত একক বক্তৃতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রখ্যাত ভাষাবিদ ও গবেষক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠান হয় বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার বিকেলে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘বাঙালির রেনেসাঁ ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে শহীদুল্লাহ্-পুত্র চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর উপস্থিত ছিলেন। একক বক্তৃতায় অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ছিলেন খ-িত রেনেসাঁর ফসল। মানুষ হিসেবে ছিলেন মনে-প্রাণে বাঙালী। তাঁর বড় পরিচয় ছিল ‘আমরা বঙ্গবাসী’। ইতিবাচক মুসলিম জাগরণের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে তিনি বাঙালিত্বের বিকাশ কামনা করেছেন। তাঁর ধর্মপ্রাণ জীবনটা ছিল সরল, মিতব্যয়ী ও সততাপূর্ণ। ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যবাদে আস্থা তাঁর জাতীয়তাবাদী চেতনা স্ফূরণের পথে কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ভাষাকে শহীদুল্লাহ্ বিবেচনা করেছেন জাতিগত উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধির মাপকাঠি হিসেবে। এজন্য পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ভাষা-প্রশ্নে তিনি বাংলার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। এক জীবনের প্রজ্ঞা ও আদর্শিক অভিযাত্রা তাঁকে বাঙালিত্বের পক্ষে এমন অসাধারণ উপলব্ধিতে উপনীত করেÑ ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালী। এটি কোন আদর্শের কথা নয়, এটি একটি বাস্তব সত্য’। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ভাষা, সাহিত্য এবং সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার দরজা খুলে দিয়েছেন। বাংলা ভাষার উৎপত্তিকাল এবং বাংলা ভাষায় অনার্য প্রভাব সম্পর্কে তাঁর আবিষ্কার ছিল মৌলিক। পা-িত্যের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সামাজিক দায়িত্বও পালন করে গেছেন বিভিন্নভাবে। বাংলা ভাষা নিয়ে যে তাত্ত্বিক সংগ্রাম শুরু হয় সে সময়, তার সঙ্গেও তিনি অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত ছিলেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র শেষ জীবনের অসামান্য কীর্তি আঞ্চলিক ভাষার অভিধান। বাঙালীর মনীষার পরিচয় এতে আছে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসেও তাঁর দান আছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে তিনি নানা দিক দেখিয়ে গেছেন। গবেষণার পাশাপাশি নানা সামাজিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নাটক ‘দেবী’ মঞ্চস্থ ॥ চেতন-অবচেতন মনের দ্বন্দ্বের চিরায়ত নাটকীয় উপস্থাপনা ‘দেবী’। ষোল-সতেরো বছর বয়সী রানুর বিয়ের পূর্বে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা ওর মনে গেঁথে যায়। তা থেকে বেরিয়ে আসতে নিজেকে অতি মানবীয় মনে করে ও নিজেকে দেবী বলে উপস্থাপন করে কিন্তু মিসির আলী, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, তিনি রানুর ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যা করেন, তুলে ধরেন কার্যকর সূত্র। এরপরই প্রমাণ হয় ঘটনাগুলো অতি-প্রাকৃত নয়, বাস্তব। কিন্তু রানু তা বিশ্বাস করে না। সে নিজেকে দেবী বলেই মনে করে। এটাই ‘দেবী’ নাটকের মূল উপজীব্য। বহুবচন নাট্যদলের ২২তম প্রযোজনা ‘দেবী’ নাটকের ১০৫তম মঞ্চায়ন হয় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায়। নাট্যরূপ দিয়েছেন মোঃ ইকবাল হোসেন এবং নির্দেশনায় আরহাম আলো। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সালাউদ্দিন আহমেদ, কবিতা, রচনা, মোহাম্মদউল্লাহ মাহমুদ, আশিক খান, তাপস প্রমুখ।
×