ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের পাশে আছে ২৮ ক্রেতা জোট এ্যালায়েন্স

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৪ জুলাই ২০১৬

বাংলাদেশের পাশে আছে ২৮ ক্রেতা জোট এ্যালায়েন্স

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পরও বিদেশী ২৮টি ব্র্যান্ডের ক্রেতাদের জোট এ্যালায়েন্স এ দেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনা অব্যাহত রাখবে। জোটের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জেমস মরিয়ার্টিকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। মরিয়ার্টি বলেন, সদস্য কোম্পানিগুলো তাদের আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না। এক কনফারেন্স কলে সাংবাদিকদের মরিয়ার্টি জানান, কোন কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কার্যাদেশ প্রত্যাহার বা বাতিল করেছে- এমন কোন খবর তার জানা নেই। রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরিতে সহযোগিতা দিতে ২০১৩ সালে উত্তর আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাদের নিয়ে গঠিত হয় এ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি। উল্লেখ, এই ২৮টি ব্র্যান্ডের মধ্যে কানাডার হাডসন বে, যুক্তারাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট, গ্যাপের মতো কোম্পানিও আছে। গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে ভয়াবহ জঙ্গী হামলায় ১৭ বিদেশী নাগরিকসহ ২০ জন নিহত হন, যাদের অনেকেই তৈরি পোশাকের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ওই ঘটনার পর বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মরত কিছু বিদেশী কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসায়িক ভ্রমণ স্থগিত করে বলে রয়টার্স জানায়। সম্প্রতিক জঙ্গী হামলার কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কমবে রফতানি আয়। আর রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক খাতেও নেমে আসবে কালো ছায়া। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, ২০১৩ সালে এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক খাতে যে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তা আবার এ খাতের ক্ষেত্রে ঘটতে পারে। এর ফলে ২৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক শিল্প চরম ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এ হামলা পশ্চিমা ক্রেতাদের বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ, শ্রমিকের নিরাপত্তা ও অধিকারের ব্যাপারে ফের সতর্ক করেছে। তবে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ, শ্রমিকের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা জোট এ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্ক সেফটি বা এবিডব্লিএস জানিয়েছে তাদের সদস্য পোশাক কারখানাগুলোর উৎপাদন ও কাজে এ হামলার প্রভাব পড়বে না। সদস্য কারখানাগুলো তাদের স্বাভাবিক উৎপাদন অব্যাহত রাখবে। জোটটি জানিয়েছে কারখানা আগেও যেমন কাজ করেছে, প্রতিকূল পরিবেশ টেক্কা দিয়েছে এবারও সেভাবেই তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। জোটটির কান্ট্রি ডাইরেক্টর জেমস এফ মরিয়ার্টি বলেছেন, হামলার ঘটনায় কোন বিদেশী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে কাজ গুটিয়ে নেবে এমন আশঙ্কা আমি কখনও করিনি। আমি আশা করি আমাদের জোটভুক্ত ২৮টি বড় বড় ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেয় তারা তাদের চুক্তি মোতাবেক স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। মরিয়ার্টি বলেন, একটি দুটি কোম্পানি কাজ স্থগিত রাখলেও আমরা দেখছি না এখান থেকে কাজ গুটিয়ে কেউ অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে। তবে আমার যেটা মনে হয়, এখনই কারখানগুলোর মালিকদের উচিত দেশের বাইরে হলেও ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসা। সেখানে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করা। তিনি জানান, তিনি দেখেছেন যে ঘটনাগুলো বাংলাদেশে ঘটেছে তা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষও ক্ষুব্ধ। তারা এ ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না। বাংলাদেশে এ ধরনের কর্মকা- যারা ঘটাচ্ছে বা সমর্থন করছে তাদের সংখ্যা খুবই কম। এছাড়া তিনি আশা প্রকাশ করেন এসব ঘটনার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বাংলাদেশের সমাজে পড়বে না।
×