ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃহস্পতিবার শুরু লর্ডস টেস্ট

আমিরকে চাপে ফেলতে ইংলিশ কৌশল

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ জুলাই ২০১৬

আমিরকে চাপে ফেলতে ইংলিশ কৌশল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ্যাশেজে ইংলিশ-অসি কথার লড়াই সর্বজনবিদিত। প্রতিপক্ষকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে ফেলতেই দু’দলের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার এমন কৌশল। ইংল্যান্ড-পাকিস্তান দ্বৈরথ এ্যাশেজ নয়, ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডই ফেবারিট, তাই বলে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই তো আর থেমে থাকতে পারে না। নাক উঁচু ইংলিশরা এজন্য সেরা জায়গাটাতেই আঘাত করেছে। পাকি বোলিং আক্রমণের সেরা অস্ত্র মোহাম্মদ আমিরকে বেছে নিয়েছেন তারা। অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক বলছেন, আমিরকে দর্শকদের দুয়ো শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সাবেক স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান সেই লর্ডসে ওর ফেরাটা একদমই মেনে নিতে পারছেন না। বল মাঠে গড়ানোর একদিন আগে এবার আরেক তারকা কেভিন পিটারসেন (কেপি) বললেন, ম্যাচ-পাতানো কারও দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়ার অধিকার নেই। বৃহস্পতিবার লর্ডসে শুরু হতে যাওয়া চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে তাই ঘুরে ফিরে আলোচনায় টেস্ট প্রত্যাবর্তনের দুয়ারে দাঁড়ানো আমির। ইংল্যান্ড দলের বাইরে থাকা বড় তারকা পিটারসেন বলেন, ‘ক্রিকেট মহান খেলা। নিয়ম ভাঙলে, এর নৈতিকতায় আঘাত করলে তার মূল্য চুকানো উচিত। দ্বিতীয় কোন সুযোগ তাদের জন্য নয়। যদি আপনি ড্রাগ বা টাকা নিয়ে ইচ্ছে করে খারাপ খেলেন, তাহলে দেশ, দর্শক, সতীর্থ ও খেলাটির সঙ্গে প্রতারণা করলেন। ব্যক্তি জীবনে মানুষ হয়ত আরেকটা সুযোগ পেয়ে থাকে, কিন্তু খেলা ভিন্ন। এখানে কোন প্রতারকের দ্বিতীয় সুযোগ হওয়া উচিত নয়।’ কেপি অবশ্য মাঠে সেøজিং করে বা গ্যালারি থেকে আমিরকে খেপিয়ে তোলার পক্ষে নন, ‘বল হাতে ও আগের মতোই ভয়ঙ্কর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। প্রত্যেক ডেলিভারিতে বুঝিয়ে দেয় যে আপনাকে বল করছে। সে ইংলিশ সমর্থকদের কিংবা মাঠে সেøজিং হজম করে পিছু হটবে, এমনটা নাও হতে পারে। তাই উভয়ের উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ আমিরকে খেপিয়ে তোলা যাবে না!’ ২০১০ সালে ইংল্যন্ড সফরে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন আমিরসহ পাকিস্তানের তিন ক্রিকেটার। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জানুয়ারিতে ওয়ানডে-টি২০তে ফিরেছেন। এবার সেই লর্ডসেই সাদা পোশাকের অভিজাত ক্রিকেট প্রত্যাবর্তনের দ্বারপ্রান্তে ২৪ বছর বয়সী স্পিডস্টার। আলোচিত সেই টেস্টে পিটারসেনের সঙ্গে ছিলেন সোয়ানও। তার মতে, ‘আমিরকে আজীবন নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। খেলাটাকে রক্ষা করতে চাইলে, তরুণদের উৎসাহিত করতে চাইলে, দুর্নীতিগ্রস্ত কারও এখানে জায়গা হতে পারে না।’ তিনি অনেকটা দুঃখের সঙ্গে যোগ করেন, ‘লর্ডস হচ্ছে ক্রিকেটের তীর্থস্থান, সেখানে আমিরের মতো একজন ফের বল করবেÑ আমি এটা কিছুতেই মানতে পারছি না।’ ইংল্যান্ড সফরের দলে জায়গা পাওয়ার পর যে কুক সব ভুলে আমিরকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, সেই তিনিও মনস্তাত্ত্বিক চাপের কৌশল কাজে লাগাতে চাইছেন, ‘আমি নিশ্চিত মাঠে আমিরকে কিছু প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হবে। দুয়ো শুনতে হবে। সেটা অনুচিতও নয়, তার জন্য অবিচ্ছেদ্য অংশ! যখন ম্যাচ পাতানোর মতো কাজ করবেন তখন নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তির বাইরেও সেটার জের আপনাকে টানতেই হবে। তাকে এগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’ আমির নিজে অবশ্য এসবে কান না দিয়ে বল হাতে জবাব দিতে চান, ভাল খেলে আবার দর্শকদের মন জয় করতে চান। অধিনায়ক মিসবাহ, গ্রেট ওয়াসিম আকরমসহ অনেকেরই সমর্থনও পাচ্ছেন তিনি।
×