ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর হাত পা ও পাঁজর ভেঙ্গে দিল স্বামী

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৩ জুলাই ২০১৬

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর হাত পা ও পাঁজর ভেঙ্গে দিল স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন এক গৃহবধূ। রিফাহ্ তাসফিয়া সালাম (২১) নামের এ গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য মেরে তার হাত, পা ও পাঁজর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ভালবাসার টানে সংসার করার স্বপ্ন নিয়ে দুই বছর আগে পছন্দের মানুষ সোহাগকে বিয়ে করেন রিফাহ্ তাসফিয়া। বিয়ের পর অল্প দিন স্বামীর সংসারে ভালই কাটে তার। এর পর ধীরে ধীরে স্বামী সোহাগের ভেতরের পাশবিকতা প্রকাশ পেতে থাকে। ক্রমে উঠে আসতে থাকে যৌতুকের দাবি। পান থেকে চুন খসে যাওয়ার মতো তুচ্ছ ঘটনায়ও তাসফিয়ার ওপর চলে শরীরিক নির্যাতন। সর্বশেষ গত সোমবার তাসফিয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তার স্বামী এবং ওই পরিবারের লোকজন। নির্যাতনে তাসফিয়ার শরীরের বাঁ পায়ের দু’জায়গা, বাঁ হাতের দু’জায়গা, ডান হাতের এক জায়গা এবং বুকের পাঁজরের দুটি হাড় ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও মাথায় পড়েছে ১৭টি সেলাই। এমন নির্যাতনে গুরুতর আহত হলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাসফিয়াকে। এ ঘটনায় তাসফিয়ার মা হোসনে আরা পারভীন বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলার অভিযোগে জানা গেছে, বছর দুই আগে নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে শামিউল হক সোহাগের সঙ্গে রিফাহ্ তাসফিয়া সালামের বিয়ে হয়। বিয়ের অল্প দিন পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী সোহাগ প্রায়ই মারপিট করত তাসফিয়াকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেয়া হয় সোহাগকে। কিন্তু এর পরও নির্যাতন থামেনি। সোমবার বিকেলে সোহাগ, সোহাগের মা জাহানারা বেগম সুজি (৫০), ভাই ফয়সাল (৩০), বাবা ফজলুল হক (৫৬) ও সজিব (২৮) মিলে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তাসফিয়াকে। এ সময় তার হাত, পা ও পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের খবরে তাসফিয়ার চাচা মীর আবু সাইদ শিমুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে মঙ্গলবার তাকে রামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। মামা ফজলে রাব্বি জানান, তাসফিয়ার ছয় মাসের এক মেয়েসন্তান আছে। ওই শিশুটির কারণে ছোটখাটো নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটলে তারা চুপ থাকতেন। ভাগ্নিজামাইকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু এবার পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তারা। কোন সুস্থ মানুষ কখনই এভাবে নির্যাতন করতে পারে না বলে তার স্বামীর বিচার দাবি করেন তিনি।
×