ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার নয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৩ জুলাই ২০১৬

মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার নয়

ফিরোজ মান্না ॥ মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পারাপার বন্ধ করতে এবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম নিজেই রাস্তায় নামবেন। গ্রাহকদের সচেতন করতে তিনি রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দাঁড়াবেন। যদি কোন পথচারী রাস্তা পার হতে মোবাইলে কথা বলেন, তাকে সচেতন করবেন। সম্প্রতি তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন। মোবাইল ফোন গ্রাহক দিন দিন বাড়ছে। গ্রাহক বাড়ার সঙ্গে মানুষের নানামুখী প্রয়োজনও বেড়েছে। কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। আবার কেউ হেড ফোন লাগিয়ে কথা বা গান শুনছেন। তাদের এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হবে না। তবে সচেতন করা হবে। এমন অনেক গ্রাহক রয়েছেন, যারা রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেন। সড়কে-রেললাইনে হাঁটতে গিয়ে হেডফোনে কথা বলা, গান শুনতে গিয়ে অকালে ঝরে গেছে বহুপ্রাণ। এভাবে যাতে আর কোন প্রাণ না হারায় তার জন্য প্রতিমন্ত্রী নিজেই সচেতনতার কাজে নামবেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেছেন। মোবাইল তো কথা বলার জন্যই। কিন্তু রাস্তা পারাপারের সময় কোন গ্রাহক যাতে কথা না বলে সে বিষয়টির ওপর জোর দেন তিনি। রাস্তা পার হয়েই যেন গ্রাহকরা মোবাইলে কথা বলে তার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে। একটু সচেতন হলেই দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে। মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি রেললাইনে কাটা পড়েছে বেশ কয়েকজন। সড়ক দুর্ঘটনায়ও প্রাণ গেছে বেশ কয়েক জনের। গান বা কথা বলায় মনোযোগ থাকায় তাদের আর অন্য কোন দিকে খেয়াল থাকে না। ফলে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এমন যেন না হয় তার জন্য প্রতিটি মোবাইল গ্রাহককে সচেতন থাকতে হবে। হেডফোনে কথা বলার সময় বাইরের কোন শব্দই খুব একটা শোনা যায় না। কান বন্ধ থাকে। এটার জন্য দরকার ‘ম্যাসিভ সোশ্যাল ক্যাম্পেন’। বিশেষ করে রেললাইনের ওপর দিয়ে যখন হাঁটবেন বা রাস্তায় হাঁটবেন, এটা অপারেটর বা আমাদের জানার কথা না। এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় কোনভাবেই যেন হেডফোন ব্যবহার করা না হয় সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। স্কুল-কলেজে পড়া ছাত্রছাত্রীদের হাতে মোবাইল তুলে দিলেই হবে না। অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। শিক্ষকরাও যেন ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করেন সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী কথা বলবেন। তারানা হালিম বলেন, আমি সোশ্যাল ক্যাম্পেন করতেই পারি। সব সময় সোশ্যাল ক্যাম্পেনে অংশ নিয়েছি। আমি পথে-ঘাটের মানুষ, পথে ঘাটে এ ধরনের সোশ্যাল ক্যাম্পেন সব সময় পছন্দ করি। এই কাজগুলো মানুষের উপকারে আসবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকেও একটা উদ্যোগ নেয়া হবে। বিষয়টি অনেক আগেই চিন্তা করেছি। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিয়ে কাজটি করা এখন জরুরী। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এই কাজটি অনেক কাজ দেবে। এগুলোর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। শিক্ষকদের সচেতন হতে হবে যাতে তারা শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা পড়াশোনা করো-তোমরা সচেতন। তাই রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইলে কথা না বলে রাস্তা পার হয়েই কথা বল। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত কথোপকথন ও রাত জেগে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। সচেতনতা সৃষ্টি না করতে পারলে দুর্ঘটনার পরিমাণ দিন দিন বেড়েই যাবে। বেশিরভাগ তরুণ সমাজ মোবাইলে কথা বা গান শুনতে শুনতে রাস্তা পারাপার হয়। তাদের সচেতন করতে পারলে তারাও অন্যদের সচেতন করবে।
×