ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্মারক সই

মাইক্রোসফট সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা দেবে

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১২ জুলাই ২০১৬

মাইক্রোসফট সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা দেবে

ফিরোজ মান্না ॥ সাইবার নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি নিরূপণে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দেবে মার্কিন বহুজাতিক সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সঙ্গে মাইক্রোসফট এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হওয়ার পর থেকে মাইক্রোসফট দেশে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা দেয়া শুরু করবে। মাইক্রোসফট প্রথম পর্যায়ে ইন্টারনেট সিকিউরিটি হিসেবে কোটি কোটি টাকার সফটওয়্যার ফ্রি দেবে। পরবর্তীতে দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের হাতে সাইবার সিকিউরিটির বিষয়টি ছেড়ে দেবে। তখন যেসব সফটওয়্যার দরকার হবে তা কিনে ব্যবহার করতে হবে। সরকার সাইবার অপরাধ দমনে একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠন করার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে। এ সংস্থার জন্য একটি গাইডলাইনও তৈরি করা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর তারানা হালিম বলেন, চুক্তির ফলে মাইক্রোসফটের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হলো। ফলে বাংলাদেশে সাইবার হামলা হলে আগাম সতর্কবার্তা দেবে মাইক্রোসফট। এর পর আমরা তা মোকাবেলায় সহায়তা চাইলে তারা ইন্টারনেট রোবট বা বট নেট দিয়ে তা মোকাবেলায় সহায়তা দেবে। এজন্য কোন অর্থ খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তারা এটা করে দেবে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য মাইক্রোসফট কোড শেয়ার করবে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তারানা হালিম সিঙ্গাপুর সফরের সময় মাইক্রোসফটের অফিস পরিদর্শনকালে সেখানে সাইবার হামলা মোকাবেলা নিয়ে আলোচনার পর এ সমঝোতা হলো। প্রতিমন্ত্রী মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান, তারা যেন বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করে। মাইক্রোসফট প্রতিমন্ত্রীকে আশ্বাস দেয়। সর্বশেষ ৩০ জুন মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তবে কবে নাগাদ মাইক্রোসফট বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। একই সফরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক অফিসও ভিজিট করেন। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মন্ত্রীকে আশ্বাস দেন যে, তারা আপত্তিকর কনটেন্ট ফিল্টারিংয়ের জন্য বাংলা ভাষার জন্য একজন অনুবাদক নিয়োগ দেবে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের ফলে ফেসবুকে বাংলা ভাষায় পোস্ট করা আপত্তিকর স্ট্যাটাস ও মন্তব্য ইংরেজীতে অনুবাদ করে ফিল্টারিং করা সম্ভব হবে। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর কনটেন্ট ব্যবহারকারীর তথ্য ও আইডি বন্ধে এর আগে আবেদন করেও ভাষাগত কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি বাংলা ভাষার দুটি অভিযোগ ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। এ অভিযোগের পরই তারা একজন অনুবাদক নিয়োগ দিয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিটিআরসি থেকে ইতোমধ্যে ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে। এ্যাডমিন অফিস ও অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করতে রাজি হয়নি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তির ফলে সাইবার হামলা মোকাবেলা ছাড়াও নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়বে। এশিয়ার অন্তত ২৫টি দেশে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে মাইক্রোসফট কাজ করছে যাচ্ছে। সাইবার হামলা চিহ্নিত করে সরকারকে অবহিত করা হয়। এর পর সরকার সহায়তা চাইলে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হয়। অন্যদিকে, সরকার সাইবার স্পেস ও ইন্টারনেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে। সরকার থেকে শুরু করে ব্যক্তিপর্যায়ে বিভিন্ন সময় সাইবার ক্রাইমের শিকার হতে হচ্ছে। এখান থেকে রক্ষা পেতে কেন্দ্রীয় মনিটরিং রেগুলেটরি সেল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। মোবাইল গ্রাহক সেবার মান ও তাদের সাইবার সুরক্ষার জন্য সাইবার নিরাপত্তা বর্তমান সময়ের জন্য খুব জরুরী হয়ে পড়েছে। সাইবার নিরাপত্তার জন্য ইতোমধ্যে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। গাইডলাইনটি সরকারের অনুমোদনও পেয়েছে।
×