ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গী দমনে সব ধরনের কারিগরি ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা দিতে চায় ;###;কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে তা যাচাই করে বাংলাদেশ জানাবে ;###;বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ দমনে ভারতসহ কয়েকটি দেশের জোরালো ভূমিকা চায় যুক্তরাষ্ট্র

সব পদক্ষেপ গ্রহণ ॥ জঙ্গী নির্মূল নিয়ে নিশা দেশাইকে প্রধানমন্ত্রী জানালেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১২ জুলাই ২০১৬

সব পদক্ষেপ গ্রহণ ॥ জঙ্গী নির্মূল নিয়ে নিশা দেশাইকে প্রধানমন্ত্রী জানালেন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটির কাছ থেকে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশের জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকায় সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল সোমবার একাধিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মনোভাব তুলে ধরেছেন। এছাড়া নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই সরকার থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে নিশা দেশাই জানিয়েছেন, জঙ্গীবাদ দমনে কারিগরি এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার নিশা দেশাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া তিনি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তরাঁ পরিদর্শন করেছেন। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেছেন, জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে এক সঙ্গে কাজ করলে অবশ্যই তারা পরাজিত হবে। সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিশা দেশাই সাংবাদিকদের বলেন, এই দেশের প্রতি সমর্থনে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মার্কিন সহায়তা আগের মতোই থাকবে। নিশা দেশাই বলেন, চরমপন্থা একটি বৈশ্বিক হুমকি। আমরা আজকাল খুব বেশি দেখতে পাচ্ছি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো যে কোন জায়গা থেকে তাদের অনুসারীদের নিয়োগ দিতে পারে। যে কোন জায়গা থেকে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারে। নিশা দেশাই বলেন, আমি এখানে এসেছি সন্ত্রাসবাদ ও চরম পন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরির সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রস্তাব নিয়ে। গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা ও সকলের মিলেমিশে চলার সম্মিলিত মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে আমাদের যে দীর্ঘ গভীর অংশীদারিত্ব রয়েছে এই প্রস্তাব তার ধারাবাহিতকার অংশ। বাংলাদেশের সঙ্গে এই ব্যাপকভিত্তিক সম্পর্ক বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারাবব্ধ। তিনি বলেন, আমাদের এই অংশীদারিত্বে যে কোন দেশ অংশ নিয়ে সন্ত্রাস মোকাবেলায় সহযোহিতা করতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশীদের উদ্বেগের সঙ্গে এক হয়ে আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এই দেশের প্রতি আমাদের সমর্থন, সহযোগিতা এবং প্রতিশ্রুতি সব সময়ের মতোই অটুট থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন বজায় রাখতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা যে ধরনের সহযোগিতা চাইব সব ধরনের সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি রয়েছে। এখন আমরা যাছাই-বাছাই করে দেখব আমাদের কি ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিস কক্ষে প্রথমে নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। তারপর মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ বৈঠক। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডিএমপি কমিনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহেমদ, কাউন্টার টেররিজম, ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ॥ বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে কারিগরি এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতকালে সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল এ কথা জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন-সন্ত্রাসের ভিকটিম আমি নিজেও।’ রাজধানীর গুলশান হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেখা গেছে এসব ঘটনায় বড় লোকের ছেলেরা জড়িত। এর শিকড় খুঁজে বের করতে হবে। কারা তাদের রিক্রুট করে, এর পেছনে কারা আছে-তাও খুঁজে বের করতে হবে। সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। এসব দমনে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেন, এ ধরনের সন্ত্রাস একটা চ্যালেঞ্জ। এর বিরুদ্ধে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ দমনে কারিগরি ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সহযোগিতা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কথা জানান তিনি। নিশা বলেন, যারা এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটায় তারা সেটা রিলিজিয়াস স্পিরিট থেকে করে না। এ্যাডভেঞ্চার থেকে এসব করে। সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকার্ট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাটের গুলশানে বাসভবনে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা দেশাই। এরপর তিনি গুলশান হলি আর্টিজান হোটেলে যান। সেখানে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানান। বেলা পৌনে বারোটায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা দেশাই। এরপর বেলা দেড়টার দিকে প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা। বৈঠক শেষে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। সোমবার বেলা দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত নিশা দেশাই বিসওয়াল। বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শব্লুম বার্নিকাট ও যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মার্ক ক্লেটন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গুলশান হামলার পর যৌথ বাহিনীর পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’র অপারেশনাল হেড ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুজিবুর রহমান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাব্বির ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক ॥ বাংলাদেশে নিযুক্ত তিন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। সোমবার সকালে রাজধানীর গুলশানে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বাসভবনে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা দেশাই। সকাল পৌনে ১০টায় দিকে শুরু হয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে বৈঠক। সেখানে গত পহেলা জুলাই রাজধানীর গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে এবং ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার পর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। সে সময় বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন কূটনীতিকরা। বৈঠকে মার্শা বার্নিকাট এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানপ্রীত আনন্দও উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক ॥ রাজধানীর গুলশানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বাসভবনে রবিবার রাতে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা দেশাই। প্রায় এক ঘণ্টার ওই বৈঠকে বাংলাদেশে সংঘটিত জঙ্গী হামলা প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত কিভাবে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে রবিবার বিকালে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে বৈঠক করেন। এর আগে গত মে মাসে সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান খুন হওয়ার পরও ঢাকায় এসে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন বিসওয়াল। সে সময় ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট জানিয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও বাংলাদেশ একই অবস্থানে রয়েছে। হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ পরির্দশন ॥ ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তরাঁ পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। সোমবার সকালে হলি আর্টজানে পরিদর্শনে যান তিনি। এ সময় তিনি ওই রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। নিশা দেশাইকে রেস্তরাঁ ঘুরিয়ে দেখান পুলিশের উপকমিশনার জসিমউদ্দিন। গত পহেলা জুলাই গুলশানের আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গীরা। এ সময় তারা ২০ জনকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশী, দুই বাংলাদেশী ও একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। রবিবার সকালে নিশা দেশাই বিসওয়াল ঢাকায় আসেন। সেদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই দিনে সন্ধ্যায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করেন নিশা। চলতি মাসের শেষে ঢাকা সফরের কথা ছিল নিশা দেশাইয়ের। তবে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলায় দেশী-বিদেশী নাগরিক হত্যা ও কিশোরগঞ্জে হামলার প্রেক্ষাপটে তার সফর এগিয়ে আনা হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে ঢাকা-ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনাই তার এই সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। গত পহেলা জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ বিদেশীসহ মোট ২৮ জন নিহত হন। এরমধ্যে ছয় জঙ্গীও রয়েছে। নিহত বিদেশীদের মধ্যে সাতজন জাপান, নয়জন ইতালি ও এক জন ভারতের নাগরিক। এছাড়া তিনজন বাংলাদেশী নাগরিক ও দু’জন পুলিশও রয়েছেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এসব জঙ্গী হামলা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বেড়েছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে মার্কিন সহায়তা দেয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য নিশা দেশাই ঢাকায় এসেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল ও উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানপ্রিত আনন্দ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সফর করবেন। ঢাকা সফরকালে তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ ও সহায়তার ক্ষেত্র নিয়ে তারা আলোচনা করবেন। সফরকালে সরকারের পাশাপাশি দূতাবাসের কর্মকর্তা, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অন্যান্য কূটনীতিকের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তারা। নিশা দেশাই আজ মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা থেকে কলম্বোর উদ্দেশে রওনা দেবেন।
×