ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিস টিভি বন্ধ হলো, ক্যাপ্টাগন ট্যাবলেট নিয়ে সিদ্ধান্ত কবে?

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১১ জুলাই ২০১৬

পিস টিভি বন্ধ হলো, ক্যাপ্টাগন ট্যাবলেট নিয়ে সিদ্ধান্ত কবে?

মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির ॥ অবশেষে বাংলাদেশে বন্ধ হলো বিতর্কিত ও ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী বক্তা ডাঃ জাকির নায়েকের পরিচালনা ও নেপথ্যের কর্ণধারের চ্যানেল ‘পিস টিভি।’ চ্যানেলটির নাম ‘পিস’ হলেও এর মাধ্যমে জাকির নায়েক তরুণদের মাঝে জঙ্গীবাদ ছড়াচ্ছিলেন এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিলম্বে হলেও সরকার বিতর্কিত এই চ্যানেলটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবশ্য এর আগেই চ্যানেলটির সম্প্রচার না করতে মতৈক্যে এসেছিল কেবল অপারেটররা। তারা ছিলেন সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। এদিকে, চ্যানেল বন্ধ হলেও জাকির নায়েকের লেকচার অসংখ্য পুস্তক আকারে ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরী ও ফুটপাথে। তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গীবাদ থেকে মুক্ত রাখতে এসব প্রকাশনাও নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। অপরদিকে, জঙ্গীদের নেশার বস্তু ‘ক্যাপ্টাগন’ ট্যাবলেটও কি দেশীয় জঙ্গীদের হাতে চলে আসছে কিনা সে নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যে ট্যাবলেট সেবনের পর সেবনকারী হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে শুধু নেতৃত্বদানকারীদের আদেশ পালনেই প্রচ-ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠে। ঢাকার গুলশানে পৈশাচিক হত্যাকা-ে অংশ নেয়া দুই জঙ্গীর ফেসবুকে জাকির নায়েকের আপত্তিকর বক্তব্য মেলায় টনক নড়ে সরকারের। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত সরকারও পিস টিভির সম্প্রচার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। চলে জাকির নায়েকের বক্তব্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার ভারতে সরকার পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ ঘোষণা করে। উল্লেখ্য, পিস টিভি সম্প্রচারের মূল কেন্দ্র দুবাইতে। ভারতে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারও একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রবিবার আইনশৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ সভায়। আজ তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা প্রদান করা হবে। তবে মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের কেবল অপারেটররা পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। এর আগে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার ক্ষেত্রে নানা কারণে কিছু গড়িমসিও পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সৃষ্টি হয় এক ধরনের ধোঁয়াশা। শেষ পর্যন্ত চ্যানেলটির প্রচার বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তটি সাধুবাদ কুড়ায় জঙ্গীবাদবিরোধী সাধারণ মানুষের। চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রীধারী ডাঃ জাকির নায়েক তার পরিচালনার পিস টিভিতে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গীবাদী কর্মকা-ের দিকে ঠেলে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে ভারত, বাংলাদেশসহ মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মানুষের। এর মধ্যেই পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ বিতর্কিত এই চিন্তাবিদের চ্যানেল সম্প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এগুলোর মধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ রয়েছে। সর্বশেষ ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কিত এই ইসলামী চিন্তাবিদ নামধারীর পরিচালনার পিস টিভি সম্প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষিত হলো। জাকির নায়েক ভারতীয় নাগরিক হওয়ায় এ চ্যানেলটি যে, দুবাইভিত্তিক তা জানা ছিল না সিংহভাগ মানুষের। প্রায় সকলেরই ধারণা ছিল এটি একটি ভারতীয় চ্যানেল। চ্যানেলটির সম্প্রচার বছরের পর বছর অব্যাহত থাকায় ভারত সরকারের প্রতিও ক্ষোভ ছিল অনেকের। ঢাকার গুলশান হত্যাকা-ের পর উঠে আসে পিস টিভির বিতর্কিত সম্প্রচারের বিষয়টি। বিশেষ করে নিহত দুই জঙ্গীর ফেস বুক প্রোফাইলে জাকির নায়েকের লেকচারের উদ্ধৃতি ও মুসলমানদের প্রতি তার সন্ত্রাসবাদী হওয়ার আহ্বান ভারত ও বাংলাদেশ সরকারকে ভাবিয়ে তোলে। এর আগে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতসহ সুন্নী তরিকার বেশ কটি সংগঠনও জাকির নায়েকের পিস টিভি বাংলাদেশে সম্প্রচারের দাবি তুলেছিলেন। তাঁদেরও অভিযোগ ছিলÑ পিস টিভির মাধ্যমে ডাঃ জাকির সরল বিশ্বাসী মুসলিম তরুণদের জঙ্গীবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করছেন। তার লেকচারে জঘন্যতম যে কথাটি বলেছেন তা হচ্ছে- ‘প্রত্যেক মুসলিমেরই সন্ত্রাসবাদী হওয়া উচিত’। বিতর্কিত ইসলামিক বক্তা জাকির নায়েক নানা কারণে সমালোচিত। তিনি ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত কোন স্কলার নন। অথচ, কোরান ও হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে আসছিলেন। দেশ ও বিশ্বের অনেক আলেমই তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন। বিজ্ঞানের মিশেলে ইসলামের বাণী প্রচারের নামে মূলত তিনি মুসলিমদের আলোকিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করার চেষ্টায় রত ছিলেন। নিজে একজন চিকিৎসক হয়ে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত না থেকে তিনি যে কর্মে নিয়োজিত হয়েছেন এর পেছনে ধর্মের চেয়েও অধিক ছিল তার ব্যক্তিগত লাভালাভ। চিকিৎসা পেশায় না থেকে ধর্মীয় বক্তা হওয়ায় তার পরিচিতি এবং আয় উপার্জনও হয়েছে বহুগুণ বেশি। তাছাড়া তিনি পিস টিভি পরিচালনার জন্য যেভাবে ফেতরা ও যাকাতের অর্থ প্রেরণের আহ্বান জানিয়ে থাকেন তা নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। এক্ষেত্রে ইসলামিক চিন্তাবিদগণের বক্তব্য হলোÑ ফেতরা-যাকাত গরিবের হক। এই অর্থে ভুখানাঙ্গা মানুষের দু’বেলা খাবার বা গরিবের বাসস্থান হতে পারে। কিন্তু ফেতরা-যাকাতে টিভি চ্যানেল চলতে পারে না। অথচ, দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্মটি তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে চ্যানেলটি দুবাই ভিত্তিক হওয়ায় ডাঃ জাকির নায়েক ভারতীয় নাগরিক হলেও ভারত সরকারের পক্ষে এ চ্যানেলের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হওয়ার কথা নয়। শেষ পর্যন্ত ডাঃ জাকির নায়েকের লেকচারের মাধ্যমে জঙ্গীপনার উস্কানি ও উন্মাদনা ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ভারত সরকার গত শনিবার সে দেশে এ চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। এর পাশাপাশি সে দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের দাবি উঠে ডাঃ জাকির নায়েককে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার। ভারতের স্বনামধন্য আলেমদের পক্ষেও ডাঃ জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের মুম্বাই ভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের দ্বারা পরিচালিত হয় পিস টিভি। জাকির নায়েক নিজেই এই চ্যানেলের উদ্যোক্তা। এক অর্থে ওই ফাউন্ডেশনের কর্ণধারও এই জাকির নায়েক। প্রকারান্তরে তিনি পিস টিভির মালিকও। এই ফাউন্ডেশন ও চ্যানেলটি তার আয়-উপার্জনের মাধ্যমও। ২০১১ সালে ২২ এপ্রিল শুরু হয় পিস টিভি বাংলা চ্যানেল। এছাড়া বিভিন্ন ভাষায় এই চ্যানেলে জাকির নায়েকের বক্তব্য প্রচারিত হয়ে থাকে। গুলশান হত্যাকা-ে অংশগ্রহণকারী দুই যুবকের ফেসবুকে জাকির নায়েকের বক্তব্যের আলোকে নির্দেশনা পাওয়া যাওয়ার পর বাংলাদেশেও তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারী সিদ্ধান্তের আগেই পিস টিভি সম্প্রচার না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেবল অপারেটর্স এ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। শনিবারই এ সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। এর ফলে শনিবারও ঢাকার অনেক স্থানে পিস টিভির প্রচার বন্ধ থাকে। এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর হোসেন আখতার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যেহেতু চ্যানেলটি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে সেহেতু আমরা এর সম্প্রচার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। এ সিদ্ধান্তের ফলে অনেক অপারেটর নিজ উদ্যোগে এর সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। সরকারীভাবে সিদ্ধান্ত এলে সারাদেশেই বন্ধ হয়ে যাবে। যা রবিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এদিকে, পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ হলেও বিতর্কিত ইসলামিক চিন্তাবিদ ডাঃ জাকির নায়েকের বক্তব্যের অনেক বই রয়েছে বাজারে। ‘জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র’ ছাড়াও ছোট-বড় অনেক পুস্তক-পুস্তিকা বিক্রি হচ্ছে লাইব্রেরী ও ফুটপাথে। বক্তব্য প্রচার বন্ধ থাকলেও তার কথামালা পাওয়া যাচ্ছে মুদ্রিত আকারে। তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গীবাদের ছোবল থেকে রক্ষা করতে এই বইগুলোর প্রকাশনা এবং বিক্রিও নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন কট্টর মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদবিরোধীরা। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ক্যাপ্টাগন’ নামের একটি ট্যাবলেটের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়েও আলোচনার ঝড় উঠেছে। ট্যাবলেটটি বহু পুরনো হলেও নতুন করে এটি যে জঙ্গীবাদীদের জন্য নেশার বস্তু হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটিই আলোচনায় এসেছে। এ ট্যাবলেটটি সিরিয়াতে উৎপাদিত হয়। এর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নেশাগ্রস্তরা এটি ব্যবহার করে থাকে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে যা বলা হয়েছে তা হচ্ছে- বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে সম্প্রতি আইএসের (ইসলামিক স্টেট) হামলার ঘটনা আলোচিত হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একের পর এক হামলা চালিয়ে আলোচনায় জঙ্গীগোষ্ঠীটি। ইরাক-সিরিয়া তো আছেই এর পাশাপাশি তুরস্ক, লিবিয়া, সৌদি আরবসহ বিশ্বে বিভিন্ন দেশে হামলার দায়ভার স্বীকার করেছে তারা। হামলা হয়েছে বাংলাদেশেও। তবে এর দায় স্বীকার করলেও দেশে আইএসের অস্তিত্ব নাকচ করেছে বাংলাদেশ। আলোচনা হচ্ছে গুলশান হামলায় অংশ নেয়া জঙ্গীদের সম্পর্কে। বেশ স্বচ্ছল পরিবার থেকে আশা ওইসব জঙ্গীরা কিভাবে এই পথে এলো এবং তারা মাদকাসক্ত কিনা, তা নিয়ে আলোচনা বিশ্লেষণ চলছে। আইএসের নৃশংস হামলা, নির্যাতন ও খুনের আলোচনার সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে তাদের যুদ্ধশক্তির উৎস নিয়েও। আগেও আলোচিত হয়েছে। আবারও আলোচনা হচ্ছে। সিরিয়ার এই জিহাদিরা প্রচ- নেশা সৃষ্টিকারী ছোট একটি ট্যাবলেট খেয়ে দিনরাত যুদ্ধ করে। আর ওই ট্যাবলেটের নাম ক্যাপ্টাগন। এই ট্যাবলেট শুধু সিরিয়াতেই উৎপাদিত হয়। তবে পাওয়া যায পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই। তবে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে এই ট্যাবলেট ছড়িয়েছে কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশে জঙ্গীপনায় জড়িত ও নেতৃত্বদানকারীদের কাছে এ ট্যাবলেট এসেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। যাদের কিলিং মিশনে প্রেরণের ছক করা হয় তাদের নাকি এ ট্যাবলেট সেবন করানো হয়ে থাকে। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কোন সূত্র এ ধরনের ট্যাবলেটের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেনি। চিকিৎসকরা বলছেন, মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার মতো এই ড্রাগের মারাত্মক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রচ- নেশা সৃষ্টিকারী এই ট্যাবলেটটি বিক্রি করে পাওয়া কোটি কোটি ডলার চলে যায় যুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার কালো বাজারে। এসব অর্থ দিয়ে জিহাদি যোদ্ধারা নতুন নতুন অস্ত্র কিনে থাকে। ক্যাপ্টাগন নামের শক্তিশালী এই ড্রাগ খুব দ্রুত কাজ করে এবং এটি খেয়েই সিরিয়ার যোদ্ধারা ঘুম বিশ্রাম ফেলে দিনে রাতে সর্বক্ষণ যুদ্ধ করতে পারছে। এছাড়াও নেশা সৃষ্টিকারী এই ট্যাবলেট খাওয়ার কারণেই জিহাদিরা কোন ধরনের বিচার বিবেচনা ছাড়াই নির্বিচারে হত্যাকা- চালাতে পারছে। যুদ্ধের কারণে সিরিয়া এখন এই ড্রাগের সবচেয়ে বড উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দেশে পরিণত হয়েছে। ষাটের দশক থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ক্যাপ্টাগন পাওযা যায়। বিষন্নতা কাটাতে তারা এই ওষুধ গ্রহণ করত। তবে পরে এটি নেশা সৃষ্টিকারী ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করলে বেশিরভাগ দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখনও এই ড্রাগ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়নি। আগে এই ট্যাবলেট উৎপাদিত হতো লেবাননের বেকা উপত্যকায় আর এখন সেটা হচ্ছে সিরিয়ায়। এদিকে, ক্যাপ্টাগন ট্যাবলেট নিয়ে ডেনমার্ক প্রবাসী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিদ্যুত বড়ুয়া (বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থানরত) রবিবার জনকণ্ঠকে জানান, এ ট্যাবলেটটি একদিকে যেমন নেশার, অপরদিকে যারা এটি সেবন করে তারা তাদের মস্তিষ্কে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটায়। ট্যাবলেটটি সেবন করার পর সেবনকারীরা নিজেদের মাঝে হিরোইজম অনুভব করে। পাশাপাশি তাদের চালিকাশক্তির পক্ষ থেকে যে আদেশ আসে তারা তা-ই পালন করতে মরিয়া হয়ে উঠে এবং শেষ পর্যন্ত তাই করে থাকে। যেখানে মৃত্যুভীতি তাদের কাছে কিছুই না। তার মতে, এ ধরনের মনোভাব আসে ওই ট্যাবলেট সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে। তিনি জানান, বিদেশে থেকে তিনি অবহিত হয়েছেন, আইএসে যোগদানকারী যোদ্ধাদের এটি নিয়মিত সেবন করানো হয়। আর সে কারণে এরা এদের হিংস্রতা সবকিছুকে হার মানায়। বাংলাদেশে গুলশান ও শোলাকিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে এবং যারা এ ঘটনার নেপথ্যের নায়ক তাদের কর্মকা- প্রমাণ করেছে তাদের চরম নিষ্ঠুরতা। এছাড়া চিহ্নিত যেসব জঙ্গী দেশে গত কয়েক বছর ধরে ধরা পড়েছে এবং আদালতে বিচারের জন্য উঠানো হয়েছে তাদের অনেকের মুখে কঠোরভাবে বলতে শোনা গেছে দেশীয় এ আদালত, আইন তারা মানে না। এগুলোর তাগুতি আইন। এর থেকে প্রমাণিত হয় এদের মগজ ধোলাই কিভাবে হয়েছে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ জনকণ্ঠকে জানান, দেশে যুব সম্প্রদায়ের যে সকল সদস্য জঙ্গীপনা ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে তাদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের উচিত জরুরীভিত্তিতে বিষয়টি নিকটবর্তী থানা পুলিশকে অবহিত করা। যারা নিখোঁজ রয়েছে তাদের ব্যাপারে যেমন জানাতে হবে, তেমনি অভিভাবকদের সঙ্গে থেকে যাদের চলাফেরা কথাবার্তা ও আচার আচরণ সন্দেহজনক তাদের ব্যাপারেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেয়া জরুরী। এক্ষেত্রে লজ্জার কিছুই নেই। বরঞ্চ যে সমস্ত অভিভাবক এ ব্যাপারে এগিয়ে আসবেন তাদের উদ্যোগ প্রশংসনীয় হবে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
×