ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় বক্তব্য

যত কঠোর হতে হয় ততটাই হব, জঙ্গীবাদ নির্মূল করব

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১১ জুলাই ২০১৬

যত কঠোর হতে হয় ততটাই হব, জঙ্গীবাদ নির্মূল করব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গী দমনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, জঙ্গীবাদ নির্মূলে সরকারকে যত কঠোর হতে হয় ততটাই হবে, জঙ্গীবাদ নির্মূল করব। সরকার এই দানবকে নির্মূল করতে অতি কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করব। মনুষ্য দানবদের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে। জঙ্গীবাদ নির্মূলে প্রয়োজনে আমরা অতি কঠোর অবস্থান নেবো। জনগণই আমার ভরসা। রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনাকালে জঙ্গী দমনে সরকারের এই কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সারাবিশ্বে যখন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল হচ্ছে তখন এসব হামলা। জনগণের আস্থার সঙ্গে জনগণের সঙ্গে থেকে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা ধ্বংস করা যাবে না এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বন্ধ করা যাবে না। কারণ, জনগণ সবসময় এই দুই দানবের বিরুদ্ধে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে সব সময় সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের জনগণকে সতর্ক করতে হবে এবং সামাজিক এই দুষ্কর্মকে মোকাবেলার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে মসজিদ থেকে নিয়মিতভাবে বক্তব্য দিতে হবে। গুলশানের রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু দেশে এখন এ ধরনের হামলা হচ্ছে। এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, জাপান, ভারত ও অন্যান্য দেশে জঙ্গী হামলা সংঘটনের কথা উল্লেখ করে বলেন, অতীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সন্ত্রাসের যে বীজ বপন করা হয়েছিল, এখন তারই বিস্তার ঘটেছে। তবে শত বাধা ডিঙ্গিয়ে হলেও সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ গড়বে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশকে অভিশাপ মুক্ত করতে হবে আর সেটি আমরা করবই। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়াকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, কারা তাদের বিপথগামী করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। আর সর্বত্র নজরদারী রাখতে হবে। দেশের মানুষকে সচেতন হতে হবে। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবেলা করেই সামনে এগোতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখছি সারাবিশ্বে জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ এর থেকে কিন্তু খুব বেশি দূরে ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশে আমি নিজেই গ্রেনেড হামলার শিকার। এই ধরনের জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসীদের যারা সৃষ্টি করে রেখে গেছে তাদের পরিচয় সবার জানা। আসলে একবার বীজ বপন করলে সেটা সহসা উৎখাত করা যায় না। এ সময় গুলশান হামলার ঘটনায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার মনে হয় পৃথিবীতে কোন দেশ এত দ্রুত সময়ে এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে জীবন্ত মানুষ উদ্ধার করা- এটা কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন দেশ পারেনি। কোন উন্নত দেশও পারেনি।
×