ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ রোনাল্ডোর

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১০ জুলাই ২০১৬

সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ রোনাল্ডোর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ বছরটি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি অর্জনের হতে পারে। কে সেরা সেই বিতর্কেও নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য অধিকাংশ মানুষকে টানার সুযোগ! শুধু জিততে হবে একটি ম্যাচ। ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরাদের কাতারে অন্যতম নাম হয়ে ওঠার মোক্ষম সুযোগই পেয়ে গেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সেজন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ তার সামনে। স্বাগতিক ফ্রান্সের বিরুদ্ধে জিততে হবে পর্তুগালকে। বর্তমান সময়ে ফুটবল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় কে- লিওনেল মেসি নাকি রোনাল্ডো? এই বিতর্ক হয়ত ঢাকা পড়ে যাবে আজ পর্তুগাল ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলের শিরোপা জিততে পারলে। কারণ কিছু দিন আগে মেসি তার দল আর্জেন্টিনাকে জেতাতে পারেননি কোপা আমেরিকার শিরোপা, রোনাল্ডো পারবেন পর্তুগালকে ইউরো জেতাতে? আর একটি গোল করলে ইউরো ফুটবলের ইতিহাসে সর্বাধিক ১০ গোল করার রেকর্ডও গড়বেন সিআর সেভেন। ১৯৮৪ সালে মিশেল প্লাতিনি যখন ৫ ম্যাচেই ৯ গোল করলেন, সেই ইউরোর সময়ও পৃথিবীর আলোয় আসেননি রোনাল্ডো। সেবারই প্রথম প্লাতিনির এমন দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। প্লাতিনি ওই এক আসরে যে গোল করেছেন সেটাই এখন পর্যন্ত ইউরোর ইতিহাসে কোন একক খেলোয়াড়ের করা সর্বাধিক গোলের রেকর্ড। গত ৩২ বছর ধরে আর কেউ ছুঁতে পারেননি তাঁকে। তবে এবার প্লাতিনিকে ছুঁয়ে ফেলেছেন রোনাল্ডো। ৩১ বছর বয়সী এ পর্তুগীজ সুপারস্টার সেমিফাইনালে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ওয়েলসের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষের জন্য কতটা ভীতিকর হয়ে উঠতে পারেন সেদিন আরেকবার জ্বলে উঠে প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। একটি গোল করে প্লাতিনির সমান ৯ গোল হয়ে যায় রোনাল্ডোর। অবশ্য সেজন্য ২০০৪, ২০০৮, ২০১২ ও চলতি (২০১৬) আসর খেলতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ইউরোর ইতিহাসে সর্বাধিক গোল করার দিক থেকে এখন আর প্লাতিনি এককভাবে ওপরে নেই। রোনাল্ডোর নামটা লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে তার পাশে। এখন রোনাল্ডোর দারুণ সুযোগ তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। কিন্তু আজকের ফাইনালে সিআর সেভেনের জন্য অনেক অগ্নিপরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জ! গত ৪১ বছর যাদের পর্তুগাল পর্যুদস্তু করতে পারেনি সেই ফ্রান্স হচ্ছে ফাইনালের প্রতিপক্ষ। ফ্রান্স স্বাগতিক হওয়ার কারণে স্টেড ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামের ৮২ হাজার দর্শকের সিংহভাগই তো রোনাল্ডোর বিপক্ষে চিৎকার করবেন! আবার দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফ্রান্সের ৭ নম্বর জার্সিধারী এ্যান্টোইন গ্রিজম্যান যদি আগেভাগে গোল করে বসেন সেক্ষেত্রে চাপটা আরও বাড়াবে সিআর সেভেনের ওপর! তাই গ্রিজম্যানও প্রত্যক্ষ শত্রু রোনাল্ডোর জন্য। সেক্ষেত্রে আগামী ফিফা বর্ষসেরা হিসেবে মর্যাদার ব্যালন ডি’অর জয়ের ক্ষেত্রেও রোনাল্ডোর বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যাবেন গ্রিজম্যান! তিনবারের বর্ষসেরা রোনাল্ডোর সঙ্গে বরাবরই শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে বিতর্ক মেসির। এবার কিন্তু ইতোমধ্যেই এগিয়ে গেছেন রোনাল্ডো। সেটা ক্লাব পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে! রোনাল্ডোর ক্লাব রিয়াল এবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জিতেছে, আর মেসির বার্সিলোনা পারেনি। মেসি এবার জাতীয় দল আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়ে কোপা আমেরিকা জেতাতে পারেননি ফাইনালে উঠেও। জাতীয় দলের জার্সিতে মেসি এখন পর্যন্ত সেদিক থেকে ব্যর্থ। তাই রোনাল্ডোর সুযোগ মেসিকেও পেছনে ফেলার। এ বছর মে মাসে ইউরোপ সেরার মুকুট জিতিয়েছেন ক্লাবকে, এবার জাতীয় দলকে চ্যাম্পিয়ন করাটা বাকি। সেটার খুব কাছাকাছিই এখন দাঁড়িয়ে আছেন সিআর সেভেন। এ বিষয়ে তিনি নিজেও বলছেন,‘ফ্রান্স আমাদের চেয়ে কিছুটা বেশিই ফেবারিট। কিন্তু আমি মনে করি পর্তুগালই চ্যাম্পিয়ন হবে। আমি ক্লাব ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবকিছুই জিতেছি। পর্তুগীজ দলের হয়ে কিছু জিততে পারলে সেটা হবে সবচেয়ে বড় অর্জন। আমি বিশ্বাস করি সেটা সম্ভব। সেটা আমার সতীর্থ এবং পুরো দেশই বিশ্বাস করে। আমাদের অবশ্যই ইতিবাচক চিন্তাভাবনা থাকতে হবে কারণ আমি বিশ্বাস করি রবিবার (আজ) প্রথম কোন বড় ট্রফি জিতবে পর্তুগাল। আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম শুরুর দিকে আমাদের ফলাফলগুলো তেমনটা হয়নি। কিন্তু ফাইনালে ওঠা আমাদের জন্য অনেক ইতিবাচক হয়েছে। এখন পরিষ্কার হয়েছে আমাদের সবার- খেলোয়াড়, কোচ এবং দলের গঠনে আছে মেধার সমন্বয় এবং সেজন্য সবারই অভিনন্দিত হওয়া উচিত।’
×